ঠাকুরগাঁওয়ে কালবৈশাখীর ঝড়ের তাণ্ডব ও শিলাবৃষ্টিতে বাড়িঘর এবং ৬৫ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

রবিবার (১৩ এপ্রিল) রাত ৩টার দিকে কালবৈশাখীর ঝড় জেলায় আঘাত হানে। ঘণ্টাব্যাপী প্রবল বাতাস ও শিলাবৃষ্টিতে বাড়িঘরে তেমন ক্ষতি না হলেও ফসলের ক্ষেত লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। 

বিভিন্ন এলাকার ফসলের মাঠ সরেজমিন দেখা যায়, এই ঝড়ে বিশেষ করে ভুট্টা, পেঁয়াজ বীজ, আম, লিচু, পেঁপে, কলা, মরিচ, বিভিন্ন ধরনের সবজি ক্ষতি হয়েছে।

আরো পড়ুন:

‘সয়াল্যান্ডে’ ৪০০ কোটি টাকার ফলনের আশা

হবিগঞ্জের পাহাড়ে সজনের ফলনে চাষিরা লাভবান 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্যমতে, ঠাকুরগাঁওয়ের পাঁচটি উপজেলা মিলে ৪৬ হাজার হেক্টর ভুট্টা, ৫৪৭ হেক্টর পেঁয়াজ বীজ, সাড়ে তিন হাজার হেক্টর জমিতে আম ও লিচু চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ৬৫ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

সদর উপজেলা আকচা মুন্সীপাড়া গ্রামের কৃষক মো.

রবিউল ইসলাম। এক বছর আগে ১০ বিঘা জমিতে পেঁপে চাষ করেছিলেন। সব কিছু মিলিয়ে তার জমিতে গাছ ছিল ৪ হাজার। রাতে কালবৈশাখীর আঘাতে বাগানের প্রায় সব গাছ ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে। বিশেষ করে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় কালো সোনা খ্যাত পেঁয়াজ বীজ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

ভুট্টা ও মরিচ ক্ষেত ভেঙে মাটিতে লুটিয়ে গেছে। আম ও লিচুর গুটি ঝরে পড়েছে। এমন অবস্থা কৃষকরা উদ্বিগ্ন ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কৃষক মো. রবিউল ইসলাম জানান, তার পেঁপের বাগানে ৪ হাজার গাছ ছিল। প্রতিটি গাছে বাঁশের খুঁটি দেওয়া থাকা সত্ত্বেও ঝড়ে বাগানের সাড়ে তিন হাজার গাছ ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে। তার আশা ছিল, বাগান থেকে আরও ১০-১২ লাখ টাকা আয় করার কিন্তু সেই আশা ও স্বপ্ন আর পূরণ হলো না। 

বেলাল হোসেন বলেন, রাত ৩টা দিকে প্রচণ্ড ঝড় ও বাতাসসহ শিলাবৃষ্টিতে অনেকের বাড়িঘরের ক্ষতি হয়েছে। তার থেকেও ফসলের ক্ষতি হয়েছে। আম, লিচু থেকে শুরু করে ভুট্টার অনেক ক্ষতি হয়েছে।

মশিউর রহমান নামে আম ও লিচু চাষি বলেন, রাতে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে আম ও লিচু ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা অকল্পনীয়।   

এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মাজেদুল ইসলাম জানান, বৃষ্টি ফসলের জন্য উপকারী হলেও ঝড়ো হাওয়া ও শিলাবৃষ্টিতে বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে আর ৫-৬ দিন গেলে পেঁয়াজ বীজ কৃষকরা মাঠ থেকে তুলতে পারতেন বা বীজগুলো পরিপক্ক হতো। কিন্তু এমন সময় ঝড় ও শিলাবৃষ্টির কারণে পেঁয়াজ গাছ ভেঙে পড়ে গেছে। এমন অবস্থা হয়েছে পেঁপে ও ভুট্টার ক্ষেত্রের। যদিও ভেঙে পড়া ভুট্টার গাছগুলো কৃষকেরা কর্তন করে গোখাদ্য হিসেবে বিক্রি করতে পারবে।

তিনি আরো জানান, ঝড়ে বিভিন্ন ফসলের ৬৫ হেক্টর জমি ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে কোন ফসল কত পরিমাণে ক্ষতি হয়েছে, তা এখনো নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। আগামী ৪-৫ দিনের মধ্যে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা যাবে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের ক্ষতিটা এবং কীভাবে কমানো যায়, সেই বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হবে। 

ঢাকা/হিমেল/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফসল ঝড় ব ভ ন ন ফসল আম ও ল চ ফসল র

এছাড়াও পড়ুন:

শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত

নাবি মুম্বাই। নয়া মুম্বাই। নতুন সেই মুম্বাইয়ে কাল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।

দীপ্তি শর্মার করা ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাদিন ডি ক্লার্কের তোলা ক্যাচটি এক্সট্রা কাভারে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের হাতে জমা হতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মাতল পুরো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৬ রানে অলআউট, ভারত ৫২ রানে জয়ী।

ভারতের জয়ের উৎসব অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল পাঁচ ওভার আগেই। লরা ভলভার্টকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেই উদ্‌যাপন শুরু করেছিল ভারতীয়রা। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক চোখ রাঙাছিলেন ভারতের উৎসব ভন্ডুল করার। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরপরই ক্যাচ তুললেন ভলভার্ট। আর সেই ক্যাচ নিতে গিয়ে আমানজোত কৌর ভারতের প্রায় শত কোটি মানুষের হৃৎস্পন্দন প্রায় থামিয়ে দিয়েছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তৃতীয়বারের চেষ্টাতেই ক্যাচ নিতে পারেন আমানজোত। এবারও বোলার সেই অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা।

৯৮ বলে ১০১ রান করে ভলভার্ট যখন ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪১.১ ওভারে ২২০/৭। এরপর শুধু আনুষ্ঠানিকতাই ছেড়েছে ভারত। দীপ্তি আরও ২টি উইকেট নিয়ে পেয়ে গেছেন ৫ উইকেট। আর ভারত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৫৮ বলে ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন দীপ্তি।

ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা শেফালি বর্মা বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট

সম্পর্কিত নিবন্ধ