নিগারদের বিশ্বকাপ খেলার সম্ভাবনা কি বাড়ল
Published: 14th, April 2025 GMT
ম্যাচ শেষ হয়েছে দুটি, এখনো বাকি তিনটি। অর্ধেকের বেশি ম্যাচ বাকি থাকার অর্থ চূড়ান্ত পয়েন্ট তালিকা নিয়ে অনুমান করা কঠিন।
তবে পাকিস্তানের মাটিতে বাংলাদেশ দল এরই মধ্যে যা খেলেছে আর সামনে যেসব প্রতিপক্ষ অপেক্ষা করছে, তাতে খানিকটা ঝুঁকি নিয়ে সামনের পথ সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়াই যায়। নিগার সুলতানার দল পাকিস্তানে গেছে ভারতের টিকিট কাটতে।
এ বছরের সেপ্টেম্বর–অক্টোবরে মেয়েদের বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে ভারতে। ৮ দলের সেই টুর্নামেন্টের ছয় দল চূড়ান্ত হয়েছে আগেই। বাকি দুটি জায়গার জন্য পাকিস্তানে বাছাইপর্ব খেলছে বাংলাদেশ, পাকিস্তানসহ ছয় দল।
বাংলাদেশ দল প্রথম ম্যাচ খেলেছিল থাইল্যান্ডের বিপক্ষে, জিতেছিল রেকর্ড ১৭৮ রানে। গতকাল লাহোরে নিগাররা হারিয়েছেন আয়ারল্যান্ডকে। ২৩৫ রান তাড়ার ম্যাচে বাংলাদেশের জয়টি ২ উইকেটে। ২ ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ দলের পয়েন্ট ৪।
৪ পয়েন্ট আছে পাকিস্তান আর স্কটল্যান্ডেরও। এ ছাড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের ২, আয়ারল্যান্ড ও থাইল্যান্ডের ০। সবচেয়ে বেশি ৪ পয়েন্ট পাওয়া তিন দলের মধ্যে বাংলাদেশই এগিয়ে। রানরেট ১.
প্রশ্ন হচ্ছে, বাংলাদেশ দল কি বাকি তিন ম্যাচের পরও পয়েন্ট তালিকার শীর্ষস্থান ধরে রাখতে পারবে? নিদেনপক্ষে দ্বিতীয় স্থান?
নিগারদের পরবর্তী তিন প্রতিপক্ষ স্কটল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তান। এই তিনটি দলের মধ্যে পাকিস্তান দুই ম্যাচের দুটিতেই জিতেছে, স্কটল্যান্ড দুটি জিতেছে তিন ম্যাচের মধ্যে। আর ক্যারিবীয়দের মধ্যে দুই ম্যাচে জয় একটি।
শক্তির বিচারে বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তান। তবে ভালো দিক হচ্ছে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ম্যাচ সবার শেষে (১৯ এপ্রিল)। তার আগে ১৫ এপ্রিল স্কটল্যান্ড এবং ১৭ এপ্রিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে ম্যাচ। স্কটিশ মেয়েরা এরই মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও থাইল্যান্ডকে হারিয়েছে। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ২৪৪ রানের পুঁজি নিয়ে ১১ রানের ব্যবধানে আর থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ২০৬ রানের পুঁজিতে ৫৮ রানে।
তবে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৮৬ রান করে হেরেছে ৬ উইকেটে। সব মিলিয়ে যা দাঁড়াচ্ছে, স্কটল্যান্ড তাদের পরবর্তী দুই ম্যাচে বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডকে হারাতে পারলে শীর্ষ দুইয়ে থাকার সম্ভাবনা বাড়বে। তবে বাংলাদেশ আগামীকাল স্কটিশদের হারিয়ে দিতে পারলে উল্টোটা ঘটবে।
আইরিশদের বিপক্ষে ১৩৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়েও ২৩৫ রান তাড়া করেছে বাংলাদেশ।উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স কটল য ন ড ল দ শ দল
এছাড়াও পড়ুন:
দেশে বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন এম এন লারমা
মানবেন্দ্র নারায়ণ (এম এন) লারমাই দেশে প্রথম আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে বৈজ্ঞানিকভাবে চিহ্নিত করেছিলেন। তিনি প্রথম দেশে কাঠামোগতভাবে আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে স্পষ্ট করেন। একটি বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন তিনি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য এম এন লারমার ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সোমবার রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
‘বিপ্লবী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৮৬ম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন কমিটি’ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।
আলোচনা সভায় লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, ১৯৫৫-৬৫ সালের মধ্যে তৈরি হওয়া ‘বাইনারি বিভাজন’ পরবর্তীকালে প্রতিষ্ঠা করেছে বাংলাদেশে সরকার। ‘বাইনারি’ মনস্তত্ত্বকে এখনো এই দেশে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। এম এন লারমা ‘বাঙালি হেজিমনি’র বিরুদ্ধে আত্মপরিচয়ের বয়ান বাঁচিয়ে রাখতে তৎকালে জোরালো প্রতিবাদ করেছিলেন।
জেএসএসের কেন্দ্রীয় সদস্য দীপায়ন খীসা বলেন, কাপ্তাই বাঁধ না করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়েই ছাত্র এম এন লারমার প্রতিবাদী জীবন শুরু হয়। চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের পর যে বৈষম্যহীন, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের কথা বলা হচ্ছে, এম এন লারমা ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নকালেই এসব বিষয় নিয়ে জোরালো বক্তব্য দিয়েছিলেন।
দীপায়ন খীসা বলেন, ‘সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশন বা জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কখনো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের সঙ্গে সংলাপ করেনি। আমরাও এই দেশের অংশ। তাহলে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের কেন কোনো সংলাপে অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানানো হলো না?’ তিনি বলেন, চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদেরও অংশীদারত্ব আছে। কিন্তু অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে তাদেরই ভুলে গেল এই সরকার।
সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন বলেন, ‘বাঙালি হয়ে যাও’ কথাটার পেছনে বাঙালি মুসলিমদের জাত্যভিমানের ব্যাপারটি রয়েছে। এম এন লারমা বাংলাদেশের মধ্যে থেকে নিজেদের অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য আন্দোলন শুরু করেছিলেন। সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে পরবর্তীকালে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি’ নামে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শান্তিময় চাকমার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের অর্থ সম্পাদক মেইনথিন প্রমীলা, সাংবাদিক এহসান মাহমুদ, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অং শোয়ে সিং মারমা।
অনুষ্ঠানটি শুরু হয় এম এন লারমাকে সম্মান জানিয়ে কবিতা পাঠের মাধ্যমে। কবিতা পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রেই চাকমা ও লাল নিকিম বম। কবিতা আবৃত্তির পর এম এন লারমার জীবনবৃত্তান্ত পাঠ করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিয়া চাকমা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক হিরণ মিত্র চাকমা, জেএসএসের কেন্দ্রীয় স্টাফ সদস্য অনন্ত বিকাশ ধামাই, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শান্তিদেবী তঞ্চঙ্গ্যা, পিসিপি ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি জগদীশ চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যা।