খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরসহ অন্যান্য ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় তাঁরা প্রতিবাদী মানববন্ধন করেছেন। লিখিত বিবৃতি দিয়েছেন। কুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনে পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে বুয়েটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই মানববন্ধন করা হয়। মানববন্ধনে বুয়েটের মেকানিক্যাল বিভাগের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী আল ফারাবি ও আরমান হাসান লিখিত বিবৃতি পড়েন।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্রদল ও বিএনপিপন্থী সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র হামলায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ছাত্ররাজনীতিমুক্ত নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবির বিপরীতে শিক্ষাঙ্গনের অভ্যন্তরে এমন বর্বরোচিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাতে না জানাতেই তাঁরা দেখতে পান, ঘটনার প্রায় দুই মাস পর কুয়েট প্রশাসনের সহযোগিতায় ২২ জন নিরপরাধ, আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এই মামলা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ভিত্তিহীন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রসূত ও মিথ্যা।

কুয়েট প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয় বিবৃতিতে। এতে বলা হয়, এই হামলার প্রকৃত তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া, অপরাধীদের যথাযথভাবে চিহ্নিত না করে কীভাবে আন্দোলনরত নিরীহ শিক্ষার্থীদের নাম মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হলো, তা বিস্ময়ের উদ্রেক করে। বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। কুয়েট প্রশাসনের ভূমিকা অত্যন্ত প্রশ্নবিদ্ধ। তাঁরা স্পষ্ট করে বলতে চান, এই প্রক্রিয়া কুয়েট প্রশাসন ও তদন্ত কমিটির নিষ্ক্রিয়তা, ব্যর্থতা ও পক্ষপাতিত্বের প্রতিফলন।

আরও পড়ুনকুয়েটের ভিসির পদত্যাগের এক দফা ঘোষণা, হলগুলোর তালা ভাঙছেন আন্দোলনকারীরা১ ঘণ্টা আগে

বিবৃতিতে বলা হয়, তাঁরা (বুয়েট শিক্ষার্থীরা) জানতে পেরেছেন, আন্দোলন দমন করার লক্ষ্যে কুয়েট প্রশাসন একের পর এক দমনমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। যেমন হল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা হল ত্যাগে অসম্মতি জানালে পানি, বিদ্যুৎ, ওয়াইফাই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে স্বৈরাচারী কায়দায় হল ত্যাগে বাধ্য করা হয়। ঈদের সময় শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। অথচ বহিরাগতদের অনায়াসে প্রবেশের সুযোগ করে দেওয়া হয়। চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো ন্যায়সংগত দাবি নিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দোষারোপ করে অপপ্রচার চালানো হয়। হলে প্রবেশ করতে না দিয়ে শিক্ষার্থীদের রাতে খোলা আকাশের নিচে রাস্তায় থাকতে বাধ্য করে নিকৃষ্টতম নজির স্থাপন করেছে কুয়েট প্রশাসন। এটি নিঃসন্দেহে একটি নিন্দনীয় আচরণ।

বিবৃতিতে বলা হয়, তাঁরা (বুয়েট শিক্ষার্থীরা) মনে করেন, এই মামলা শুধু কুয়েটের ২২ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে নয়, বরং এটি দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা ও শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক অধিকার হরণের প্রচেষ্টা। আজ যদি তাঁরা চুপ থাকেন, কাল হয়তো এই ধরনের প্রহসনের শিকার হতে হবে আরও অনেক শিক্ষার্থীকে। রাজনৈতিক স্বার্থের কারণে মেধাবী শিক্ষার্থীদের দমন করার মাধ্যমে জুলাই আন্দোলনের ‘স্পিরিট’ নষ্ট করা সামগ্রিকভাবে দেশের জন্য কল্যাণকর কিছু বয়ে আনবে না।

আরও পড়ুনকুয়েটে প্রশাসনিক ভবনের ভেতরে চলছে সিন্ডিকেট সভা, বাইরে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ–মিছিল১৮ ঘণ্টা আগে

কুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনে পাশে থাকার কথা জানানো হয় বিবৃতিতে। এতে বলা হয়, তাঁরা (বুয়েট শিক্ষার্থীরা) জানতে পেরেছেন, গতকাল সোমবার রাতে কুয়েটের সিন্ডিকেট মিটিংয়ে ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নিরাপদ ছাত্ররাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারী কোনো নিরপরাধ শিক্ষার্থীকে আন্দোলন দমনের লক্ষ্যে বহিষ্কার করা কোনোক্রমেই কাম্য নয়। বুয়েট শিক্ষার্থীরা কুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনে পাশে আছেন। এই মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার, প্রকৃত দোষীদের বিচার, কুয়েট ভিসি ও কুয়েট প্রশাসনের বিতর্কিত-নেতিবাচক ভূমিকার জবাবদিহি নিশ্চিতের জোর দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা। বুয়েট শিক্ষার্থীরা স্পষ্ট করে জানাতে চান, তাঁরা এই প্রহসনের বিরুদ্ধে। তাঁরা এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে। তাঁরা কুয়েটের শিক্ষার্থী ভাই-বোনদের পাশে আছেন। অনতিবিলম্বে কুয়েট প্রশাসন যথোপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে এ দেশের ছাত্রসমাজ কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে। এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করছেন তাঁরা।

আরও পড়ুনপয়লা বৈশাখেও হল খোলার দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান, সন্ধ্যায় সিন্ডিকেট সভা১৪ এপ্রিল ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ষ ট কর র জন ত

এছাড়াও পড়ুন:

সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার ও ২১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ

সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার, নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন, দশম ওয়েজ বোর্ড গঠন, চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের পুনর্বহাল এবং পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ ২১ দফা দাবিতে শহরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (১ নভেম্বর) সকাল ১১টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে সাংবাদিক ইউনিয়ন নারায়ণগঞ্জের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সাংবাদিক ইউনিয়ন নারায়ণগঞ্জের সভাপতি আবু সাউদ মাসুদের সভাপতিত্বে এবং একেএম মাহফুজুর রহমানের সঞ্চালনায় উক্ত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, নিউ নেশন পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক এ আর ফররুখ আহমেদ খসরু, ফতুল্লা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মো: মাসুম, সিনিয়র সাংবাদিক মনির হোসেন, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের রূপগঞ্জ প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম হানিফ, দৈনিক বাংলাদেশ বুলেটিন পত্রিকার সাংবাদিক উজ্জল হোসেন মাসুম, দৈনিক ইয়াদ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মেহবুব মিয়া, দৈনিক পূর্বাভাস পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদক সোনিয়া দেওয়ান প্রীতি, দৈনিক দেশ পত্রিকার সাংবাদিক মোখলেসুর রহমান তোতাসহ প্রমূখ।

এসময় বক্তারা বলেন, ‘নো ওয়েজ বোর্ড, নো মিডিয়া’ নীতি কার্য্যকর, সাংবাদিকদের বেতন সর্বনিম্ন ৩৫ হাজার টাকা নির্ধারণ, প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ায় নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন ও দশম ওয়েজ বোর্ড গঠন, সাংবাদিক সুরক্ষা নীতিমালা প্রনয়ন, সাংবাদিকদের সাপ্তাহিক ছুটি ২দিন নির্ধারণ, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনীসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার, গনমাধ্যমের স্বাধীনতা বিরোধী সকল কালাকানুন বাতিল, আইন অনুযায়ী সাংবাদিকদের ন্যায্যা পাওনা আদায়ের জন্য পৃথক শ্রম আদালত স্থাপন সহ ২১ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ আমরা মানববন্ধন করছি।

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের আহ্বান অনতিবিলম্ভে আমাদের এসব দাবিগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে।  

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, প্রতিদিনের বাংলাদেশ পত্রিকার নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি এম আর কালাম, নাহিদ আজাদ, বাংলাদেশ নিউজের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ইমতিয়াজ আহমেদ, নিউজ টুয়েন্টিফোর টেলিভিশনের নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি শরিফ সুমন, দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ পত্রিকার নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি মোশতাক আহমেদ, বাংলাদেশের খবর পত্রিকার নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি আল আমিন, দৈনিক ভোরের ডাক পত্রিকার নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি সাব্বির হোসেন, মানব জমিনের ফতুল্লা প্রতিনিধি আবু সাঈদ পাটুয়ারী রাসেল, মুসলিম টাইমসের নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি সাইফুল্লাহ খালিদ রাসেল, চ্যানেল এস এর সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি সাদ্দাম হোসেন মুল্লা, দৈনিক সংগ্রামের সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি ইখতিয়ার রাহয়ান, সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম আরজু, এস এম জহিরুল ইসলাম বিদ্যুৎ, সম্রাট প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুদানে গণহত্যার প্রতিবাদে জাবি ও জবিতে মানববন্ধন
  • ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩০ জন শিক্ষক-কর্মকর্তাকে বরখাস্ত ও ৩৩ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত
  • সালমান শাহ হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারসহ ৫ দফা দাবি
  • সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার ও ২১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ
  • চারঘাটে পদ্মার ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন
  • আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি, সালমান শাহ ভক্তদের মানববন্ধন
  • পদ্মার চরে জোড়া খুনের ঘটনায় ‘কাকন বাহিনীর’ সদস্যদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন
  • সুনামগঞ্জে জমি থেকে ৫ কোটি টাকার বালু চুরির অভিযোগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা