রাজশাহীর বাঘায় ট্রেনের নিচে পড়ে এক পেঁয়াজচাষি ‘আত্মহত্যা’ করেছেন, এমন একটি ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘হৃদয়বিদারক গল্প’ ছড়িয়ে পড়ে। যাঁরা এটি ফেসবুকে প্রকাশ করেছেন, তাঁদের সবাই ‘মূল গল্পটা’ একই রেখেছেন, শুধু ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকা যুক্ত করে দিয়েছেন।

ফেসবুকের পোস্টে লেখা ছিল, ওই বৃদ্ধের স্ত্রী আট মাস আগে মারা গেছেন। দুই মেয়ে তাঁদের বাড়িতে কিছুদিন রেখে বের করে দিয়েছেন। দুই ছেলেও বাবার জিনিসপত্র ফেলে দিয়েছেন। গত মঙ্গলবার রাতে ফেসবুকে এ ঘটনা পড়তে পড়তে মাথার মধ্যে একটা প্রশ্ন জাগে, একটি পরিবারের সবাই কি প্রায় ৭০ বছর বয়সী একজন মানুষকে এভাবে ত্যাগ করতে পারেন?

ফেসবুকে ঘটনাটি পড়ে সবাই বৃদ্ধের সন্তানদের তীব্র ভাষায় আক্রমণ করে কমেন্ট করছিলেন। আমার স্ত্রী দুলারী খাতুনও ঘটনাটি পড়তে পড়তে খুব ‘আহা, আহা’ করছিলেন। কিন্তু আমার এমন মনে হচ্ছিল না। মনে আসে, কেউ ফেসবুকে ভিউ বাড়ানোর জন্য কাজটা করেনি তো? সিদ্ধান্ত নিলাম, সকালে উঠে ওই বৃদ্ধের বাড়িতে যাব।

এরপর ঘটনাস্থলে গেলাম। একটি শোকাহত পরিবারের সঙ্গে কথা বলার জন্য স্থানীয় পরিচিত কাউকে পেলে সুবিধা হয়। এ জন্য স্থানীয় সাংবাদিক আমার ঘনিষ্ঠ গোলাম তোফাজ্জল কবিরকে ডেকে নিলাম। মৃত ওই বৃদ্ধের নাম মীর রুহুল আমিন। তাঁর ভাতিজা মোফাক্কর হোসেনের সঙ্গে গোলাম তোফাজ্জলের ঘনিষ্ঠতা আছে। তিনি একটি জানাজায় ছিলেন। একটু সময় নিলেন। দুপুর গড়িয়ে গেল। দুজন বাঘা উপজেলার মাঝপাড়ার বাউসায় তাঁদের বাড়িতে যাই।

আরও পড়ুননেটিজেনরা ‘ধুয়ে দিচ্ছে’ পরিবারকে, বাস্তবতা ভিন্ন২০ ঘণ্টা আগে

বাড়িতে গিয়ে পঞ্চাশোর্ধ এক নারীকে পাই। পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যাওয়া মীর রুহুল আমিনের স্ত্রী। অথচ ফেসবুকে লেখা হয়েছে, তাঁর স্ত্রী আট মাস আগে মারা গেছেন। এরপর তাঁর কাছে জানতে চাইলাম, ছেলে-মেয়ে কয়জন? মরিয়ম বেগম বললেন, তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে। ২০-২২ বছর আগে মেয়ের বিয়ে হয়েছে ঈশ্বরদীতে, সেখানেই থাকেন। আর তাঁর ছেলে ঢাকায় একটি চাকরি করেন। সেখানে তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন। বাড়িতে তাঁরা স্বামী-স্ত্রী দুজন থাকতেন।

এরপর আর বুঝতে বাকি থাকে না যে দুই সন্তানের জিনিসপত্র ফেলে দেওয়া, দরজা বন্ধ করে বাবাকে বাইরে রাখা, চলে যেতে বলা—ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ঘটনাগুলোর সত্যতা নেই।

মরিয়ম বেগম বলেন, তাঁদের কোনো অশান্তি নেই। ঘটনার দিন ডাক্তার দেখানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেছেন। সকালে খেয়ে গেছেন। বেলা তিনটার আগে-পরে তাঁর সঙ্গে দুবার ফোনে কথা হয়েছে।

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার মাঝপাড়া বাউসা গ্রামে মীর রুহুল আমিনের বাড়ি.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফ সব ক

এছাড়াও পড়ুন:

মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকতে না পেরে বিদেশ চলে যান পিয়া বিপাশা

লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিনোদন অঙ্গনে পা রাখেন পিয়া বিপাশা। এরপর অভিনয় করেছেন মিউজিক ভিডিও, নাটক ও সিনেমায়। কিন্তু হুট করেই নাই হয়ে গেলেন। পরে জানা গেল অভিনেত্রী আমেরিকায়। গেল পাঁচ বছর সেখানেই বাস করছেন তিনি। সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যমে প্রবাসজীবনসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।

পিয়া বিপাশা জানান, একমাত্র মেয়েকে নিয়ে নিউইয়র্কে বসবাস শুরু করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিকের সঙ্গে তাঁর প্রেম ও ভালোবাসা তৈরি হয়। তারপর তাঁরা বিয়ে করেন। দুজনে মিলে বিয়ে করলেও আনুষ্ঠানিকতা সারেননি। চলতি বছরের শেষ দিকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে নেওয়ার ইচ্ছা।

পিয়া বিপাশা বলেন, ‘বাংলাদেশে ভালো লাগত না। কারণ, লবিং ছাড়া কাজ হতো না। ভালো একটা সিনেমা করার কথা ছিল। কিন্তু সেটা আর হয়নি। এরপর আমার মিডিয়ায় কাজ করার ইচ্ছাই নষ্ট হয়ে যায়। আমি আসলে কাজ করতে চেয়েছিলাম টাকা কামানোর জন্য। কাজ না করতে পারলে টাকা কামাব কী করে। তাই সিদ্ধান্ত নিই অন্য কিছু করার।’

বিপাশার কথায়, ‘টাকা রোজগারের জন্য আমি বিনোদন অঙ্গনে কাজ করেছিলাম। কারণ, আমার একটা মেয়ে ছিল। মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকার বিষয় ছিল। পরে দেখলাম, যেভাবে কাজ হয়, আমাকে দিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম, আমেরিকায় চলে আসার। এখানে এসে বাংলাদেশের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিই। অনেক টাকাও আয় করছি।’

পিয়া বিপাশা বলেন, ‘সত্যি বলতে এখন আমার এমন অবস্থা, টাকা ইনকাম না করলেও হয়। যতটুকুই করি, আমার মেয়ে ও হাজব্যান্ড ওরাই বলে। আমার এখন আর কোনো স্বপ্ন নেই। যা চেয়েছি, গত পাঁচ বছরে সবই পেয়েছি। টাকাপয়সা, সুন্দর জীবন, প্রতিষ্ঠিত হওয়া, ভালো স্বামী—সবই আমার হয়েছে। টাকা নিয়ে এখন কোনো চিন্তা নেই আমার—যা আয় করি, তা ব্যয় করার সময় পাই না।’ 

পিয়া বিপাশা জানান, ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে বিভিন্ন পণ্যের যেসব পোস্ট করেন, তার জন্য বেশ ভালো সম্মানী পান। তাঁর দাবি, এই সম্মানী কখনো দুই হাজার ডলার, আবার কখনো তিন হাজার ডলারের মধ্যে।

২০১৩ সালে ‘দ্বিতীয় মাত্র’ নাটকে তাহসান খানের বিপরীতে অভিনয় করেন। ছোটবেলায় রূপকথার বই পড়তে পছন্দ করতেন। বই পড়ার সময় গল্পের নায়িকার চরিত্রে নিজেকে কল্পনাও করতেন। বড় পর্দায়ও অভিনয় করেছিলেন। ‘রুদ্র: দ্য গ্যাংস্টার’ নামের সেই ছবি মুক্তি পায়। এরপর ‘রাজনীতি’ ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয়ের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। পরে সেই ছবিতে পিয়া বিপাশার পরিবর্তে অপু বিশ্বাস অভিনয় করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বৈষম্যবিরোধীদের তোপের মুখে যশোর মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের পদত্যাগ
  • শ্রীলঙ্কার মাটিতে ঘুরে দাঁড়িয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ
  • মিরাজ বীরত্বে দারুণ প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখলো বাংলাদেশ
  • সেঞ্চুরির পর ৫ উইকেট, মিরাজ ধন্যবাদ দিলেন ৬ জনকে
  • পেশায় বাসচালক, আড়ালে করেন ইয়াবার কারবার
  • ঢাকায় চালান পৌঁছে প্রতি মাসে পান ৬ লাখ টাকা
  • ১৭ মাস পর দেশের মাটিতে টেস্ট জয় বাংলাদেশের
  • নদীতে মিলল স্কুলছাত্রের লাশ, চার সহপাঠী আটক
  • টাকার জন্য দেশে ছেড়েছি, এখন টাকা খরচের সময় নেই: পিয়া বিপাশা
  • মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকতে না পেরে বিদেশ চলে যান পিয়া বিপাশা