বরিশাল সিটি করপোরেশনে ২০২৩ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত নির্বাচনী ফল বাতিল চেয়ে মামলা করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম। মেয়র পদে তাকে বিজয়ী ঘোষণার আবেদন জানিয়ে বৃহস্পতিবার বরিশাল নির্বাচনী ট্রাইবুনালে মামলাটি করেন তিনি। 

ফয়জুল ওই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্বিতা করে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েছিলেন। জয়ী হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই আবুল খায়ের আবদুল্লাহ। মামলায় খায়ের আবদুল্লাহ ছাড়াও অপর ৫ জন মেয়র প্রার্থীকে বিবাদী করা হয়েছে। 

ফয়জুলের আইনজীবী শেখ নাছের এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ট্রাইবুনালের বিচারক হাসিবুল হাসান মামলা গ্রহণ করে আদেশের জন্য রেখেছেন। 

মামলায় অভিযোগ করা হয়, বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের এনে নির্বচনের দিন কেন্দ্রে প্রভাব বিস্তার করেছিলেন খায়ের আবদুল্লাহ। বেলা ১টার দিকে ২২নং ওয়ার্ডের সাবেরা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে অনিয়মের প্রতিবাদ করলে ফয়জুল করীম আওয়ামী লীগ কর্মীদের হামলার শিকার হন। বেলা ৩টায় জাগুয়া কলেজ কেন্দ্রে তার এজেন্টদের বের করা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। মামলায় দাবি করেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তিনি জয়ী হতেন। 

২০২৩ সালের সিটি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী খায়ের আবদুল্লাহ ৮৭ হাজার ৮০৮ ভোট এবং চরমোনাই পীরের ভাই হাত পাখার প্রার্থী ফয়জুল করীম পেয়েছিলেন ৩৩ হাজার ৮২৮ ভোট। 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বর শ ল খ য় র আবদ ল ল হ ফয়জ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী

২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।

সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।

পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু

১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।

বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।

এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।

আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।

জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী