আইনজীবী তালিকাভুক্তিকরণ পরীক্ষা, প্রস্তুতিতে যা যা করতে পারেন
Published: 18th, April 2025 GMT
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির (এনরোলমেন্ট) এমসিকিউ পরীক্ষা ২৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে। এই পরীক্ষায় প্রার্থীদের জুতসই প্রস্তুতির জন্য পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী রিয়াজুর রহমান।
এমসিকিউ পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য সাকল্যে সময় আছে প্রায় দুই সপ্তাহের মতো। এর মধ্যে সাত বিষয়ে প্রস্তুতি নিতে হবে। অনেক পরীক্ষার্থী শেষ সময়ে এসে অগোছালো ও পরিকল্পনাবিহীন পড়াশোনা করেন। কার্যত বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির এমসিকিউ পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার হার বেশি। তবে বুদ্ধিদীপ্ত ও কৌশলী প্রস্তুতি আপনাকে অনেকের চেয়ে এগিয়ে রাখবে।
সাধারণত আইনজীবী তালিকাভুক্তিকরণ পরীক্ষা তিন ধাপে অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে বহুনির্বাচনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ১০০ নম্বরে। প্রশ্ন আসে ৭টি বিষয়ে। ১০০ নম্বরের বহুনির্বাচনী পরীক্ষায় কমপক্ষে ৫০ নম্বর পেলেই আপনি উত্তীর্ণ হয়ে লিখিত পরীক্ষায় বসতে পারবেন। তবে নেগেটিভ নম্বর থাকায় পরীক্ষার্থীদের অধিক সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
শুরুতেই তামাদি আইন ১৯০৮, সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন ১৮৭৭ এবং বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২-এর মতো ছোট আইনগুলো পড়ে ফেলতে হবে। সিলেবাসের সাত বিষয়ের মধ্যে সবচেয়ে সহজ এই আইনগুলো। তবে সহজ হলেও গুরুত্ব অনেক। তিনটি আইন থেকে মোট ২৫ নম্বরের প্রশ্ন আসবে। পরীক্ষার্থীরা চাইলে এসব বিষয় থেকে পুরো নম্বরই পাওয়া সম্ভব। অর্থাৎ পাস মার্কের অর্ধেক নম্বর। যখন দেখবেন পাস মার্কের অর্ধেক নম্বর হাতের তালুর মধ্যে, তখন আত্মবিশ্বাস বহুগুণ বেড়ে যাবে। বাকি বিষয়গুলো দুশ্চিন্তামুক্তভাবেই প্রস্তুতি নিতে পারবেন।
তামাদি, সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন ও বার কাউন্সিল অর্ডারতামাদি আইন ১৯০৮ একটি পদ্ধতিগত আইন। আইনটি দেওয়ানি মোকদ্দমা এবং ফৌজদারি মামলার আপিলের ক্ষেত্রে প্রয়োগ হয়। এতে ৩২টি ধারা ও ১৮৩টি অনুচ্ছেদ রয়েছে। ধারাগুলোর মধ্যে তামাদি মেয়াদ শেষে মামলা দায়ের, আদালত বন্ধ থাকা অবস্থায় তামাদির মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে করণীয়, বিলম্ব মওকুফ, আইনগত অপারগতা, তামাদি গণনা, যেভাবে তামাদি মেয়াদের গণনা করতে হয়, এখতিয়ারবিহীন আদালতে মামলা দায়ের, কার্যধারা স্থগিত থাকার সময় বাদ দেওয়ার নিয়ম, প্রতারণার ফলাফল, লিখিত প্রাপ্তিস্বীকারের ফলাফল, দেনা পরিশোধের ফলাফল, অবিরাম চুক্তিভঙ্গ, সুখাধিকার অর্জন ও সম্পত্তির অধিকার বিলুপ্তিসংক্রান্ত টপিকগুলো ভালো করে পড়তে হবে। এ ছাড়া ৯১, ৯২, ১০৩, ১১৩, ১১৪, ১২০, ১৪২, ১৫০, ১৫৭, ১৬৯, ১৮২ অনুচ্ছেদগুলো শেষবারের মতো চোখ বুলিয়ে যেতে হবে। ঘুরেফিরে এসব ধারা ও অনুচ্ছেদ থেকেই প্রশ্ন আসে।
আরও পড়ুনডিএনসিসিতে ১৫৮ পদে নিয়োগে আবার বিজ্ঞপ্তি২২ ঘণ্টা আগেসুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন ১৮৭৭–কে ন্যায়পরায়ণতা আইনও বলা হয়। মূলত এটি প্রতিকারমূলক বা তত্ত্বগত আইন। মাত্র ৫৭টি ধারা নিয়ে গঠিত আইনটি। এর মধ্যে সুনির্দিষ্ট প্রতিকার, স্থাবর সম্পত্তির দখল পুনরুদ্ধার, অস্থাবর সম্পত্তি দখল পুনরুদ্ধার, যেসব চুক্তি সুনির্দিষ্টভাবে কার্যকর করা যেতে পারে, যেসব চুক্তি সুনির্দিষ্টভাবে কার্যকর করা যায় না, কতিপয় ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ মঞ্জুরের ক্ষমতা, অরেজিস্ট্রিকৃত চুক্তিপত্র কার্যকরযোগ্য নয়, সুনির্দিষ্ট কার্য সম্পাদনে ডিক্রি প্রদান; যাদের পক্ষে চুক্তি কার্যকর করা যায়, যাদের পক্ষে চুক্তি কার্যকর করা যায় না; দলিল সংশোধন, চুক্তি রদ, দলিল বাতিল, ঘোষণামূলক মামলা, চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা, বাধ্যতামূলক নিষেধাজ্ঞা, কখন কখন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাখ্যান করা হয় এবং নেতিবাচক চুক্তি পালন করার জন্য নিষেধাজ্ঞাসংক্রান্ত ধারাগুলো পড়লেই হবে।
ছবি: প্রথম আলো/এআই জেনারেটেড.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ক ষ র প রস ত ত পর ক ষ য় আইনজ ব ত আইন র আইন
এছাড়াও পড়ুন:
বাগেরহাটে ৪ আসন বহালের দাবিতে হাইকোর্টে রিট
বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং একটি আসন কমিয়ে তিনটি আসন করার নির্বাচন কমিশনের গেজেট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী ১০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
মানিকগঞ্জে কৃষিজমির মাটি কাটার বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
ডাকসু নির্বাচন স্থগিত চেয়ে করা ছাত্রলীগ নেতার রিট বাতিল
বাগেরহাট প্রেস ক্লাব ও অন্যান্যদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন রিট পিটিশন দাখিল করেন। এছাড়া চিতলমারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাগেরহাট ১ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মুজিবর রহমান শামীমের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ আক্তার রসুল একই বিষয়ে পৃথক রিট পিটিশন করেন।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির নেতা ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, “আমরা রিট পিটিশন করেছি। আদালত আমাদের কথা শুনেছেন এবং ১০ দিনের রুল জারি করেছেন। আশা করি, আদালতে ন্যায়বিচার পাব এবং বাগেরহাটের চারটি আসন বহাল থাকবে।”
গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি আসন কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দেয়। এরপর থেকে বাগেরহাটের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন আন্দোলন শুরু করে। চারটি আসন বহালের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতেও অংশ নেয় তারা।
তবে ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন শুধু সীমানা পরিবর্তন করে তিনটি আসন রেখে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে।
চূড়ান্ত গেজেট অনুযায়ী বাগেরহাট-১ (সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৩ (কচুয়া-মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) নির্ধারণ করা হয়। অথচ দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাট-১ (চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট), বাগেরহাট-২ (সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) এবং বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
ঢাকা/শহিদুল/বকুল