ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলাকে যুদ্ধ নয়, গণহত্যা বললেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেছেন, আসলে এটা কোনো যুদ্ধ নয়। এটা গণহত্যা। যার কারণ আধিপত্য বিস্তার আর জবর দখল। গাজা থেকে মানুষ উৎখাত করে জবর দখলের জন্য এই গণহত্যা করা হচ্ছে।

ফিলিস্তিনিদের মুক্তির উপায় পুঁজিবাদী ব্যবস্থাকে বিদায় করার মধ্যে নিহিত বলে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী মনে করেন। তিনি বলেন, আজকে যত উন্নতি তত বৈষম্য, যত উন্নতি, তত ধ্বংস। যত বেশি উন্নতি হচ্ছে, মানুষের মধ্যে তত বিষণ্নতা, হতাশা বাড়ছে। পৃথিবীজুড়ে যে হতাশা বিরাজ করছে, তার কারণ পুঁজিবাদ। পুঁজিবাদকে বিদায় করতে হবে। এ জন্য প্রতিটা দেশে প্রয়োজন সামাজিক বিপ্লব। এককথায় সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

আজ শনিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি সমাবেশে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী এসব কথা বলেন। ফিলিস্তিন সংহতি কমিটি, বাংলাদেশ এ সমাবেশের আয়োজন করে।

সমাবেশে অর্থনীতিবিদ এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ফিলিস্তিনে দশকের পর দশক ধরে পরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞ চালানো হচ্ছে। সেখানে যে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চলছে, তার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রটি বিলুপ্ত হওয়ার পথে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে আজকের দিনের হিটলার বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলা বন্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় সৌদি আরবসহ আরব বিশ্বের কড়া সমালোচনা করেন আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের পাশেই অনেকগুলো আরব দেশ। সৌদি আরব হলো তাদের মধ্যে সবচেয়ে সম্পদশালী এবং ক্ষমতাবান। অথচ দেশটি কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। এমনকি জোর গলায় একটা কথাও বলে না। বাহরাইন, কুয়েত, কাতারের মতো সম্পদশালী দেশগুলো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। আরব লিগ, ওআইসি কোনো ভূমিকা নেয়নি। এটা একটা ভয়ংকর পরিস্থিতি।

ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ানো শুধু দেড় শ কোটি মুসলমানের নয়, সাত শ কোটি বিশ্ববাসীর দায়িত্ব বলে উল্লেখ করেন আনু মুহাম্মদ।

সমাবেশে ফিলিস্তিনিদের নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে বিবর্তন সংস্কৃতি কেন্দ্র নাটক প্রদর্শন করে। কবিতা আবৃত্তি করেন কবি হাসান ফকরী। সমাবেশে বাম সংগঠনগুলোর নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশ শেষে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে মিছিল করা হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স র জ ল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা থেকে রক্ষা করতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার আহ্বান

ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা ও নিষ্ঠুরতম বর্বরতা থেকে রক্ষা করতে অবিলম্বে পরিপূর্ণ যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। 

আজ বুধবার ফিলিস্তিন সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। 

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ইসরায়েল এ পর্যন্ত ৫৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে গণহত্যা অব্যাহত রেখেছে। তিনি ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ী সকলকে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান।

আরো পড়ুন:

ইসরায়েলি মানবাধিকার সংগঠনই বলছে, ‘গাজায় গণহত্যা চলছে’

ফিলিস্তিন সংকট সমাধান: সবার দৃষ্টি জাতিসংঘের বিশ্ব সম্মেলনে

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতি বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থন পুর্নব্যক্ত করে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি স্থাপনের একমাত্র পথ হিসেবে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের লক্ষ্যে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়নে কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান। 

গাজা পুনর্গঠনে আরব পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘের নেতৃত্বে গাজা পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে প্রস্তত রয়েছে। তিনি গাজায় জাতিসংঘের ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম বাধা দেয়ার যেকোনো প্রচেষ্টা সর্বাত্বকভাবে প্রতিরোধ করার আহ্বান জানান।

২০২৩ সালের অক্টোবরের পর হতে গাজায় অব্যাহত ইসরায়েলি আক্রমণের প্রেক্ষাপটে ফিলিস্তিনি জনগণের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতি একাত্মতা প্রকাশ এবং একটি স্থায়ী সমাধানের পথ সুগম করতে জাতিসংঘের সদস্যদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করার জন্য ফ্রান্স ও সৌদি আরবের যৌথ উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী ‘জাতিসংঘ হাইলেভেল ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স ফর দ্য পিসফুল সেটেলমেন্ট অব দ্য কোয়েশ্চেন অব প্যালেস্টাইন অ্যান্ড দ্য ইমপ্লিমেন্টেশন অব দ্য টু-স্টেট সল্যুশন’ শীর্ষক মন্ত্রী পর্যায়ের এই সম্মেলন আয়োজন করা হয়।

এতে বাংলাদেশসহ ১১৮টি দেশের প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করছে।

ঢাকা/হাসান/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা থেকে রক্ষায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টার আহ্বান
  • ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা থেকে রক্ষা করতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার আহ্বান
  • গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৬০ হাজার ছাড়াল
  • গণহত্যার বিচারের পর পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দাবি রেজাউল করীমের