আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে রাবিতে বিক্ষোভ মিছিল
Published: 19th, April 2025 GMT
জুলাইয়ে গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের দেশব্যাপী অপতৎপরতার বিরুদ্ধে ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্ত্বরে এ বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা।
এ সময় ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘জেগেছে রে, জেগেছে, ছাত্র সমাজ জেগেছে’, ‘খুনি লীগের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট একশন’, ‘আলি রায়হান মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরো দেব রক্ত’, ‘আওয়ামীলীগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে’, ‘আমার সোনার বাংলায়, আওয়ামী লীগের ঠাই নাই’ ইত্যাদি স্লোগানে দেন তারা।
আরো পড়ুন:
রাবির ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় সন্তোষজনক উপস্থিতি
রাবি ভর্তি পরীক্ষায় শহীদ আবু সাঈদ ও জেন-জি নিয়ে প্রশ্ন
বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজিব বলেন, “দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানিতে নাৎসি পার্টি গণহত্যা চালানোর দায়ে নিষিদ্ধ হয়েছিল। তারা এখনো নিষিদ্ধ হয়ে আছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ দেশে গণহত্যা চালানোর পরেও নিষিদ্ধ হচ্ছে না। যে আওয়ামী লীগের গায়ে শাপলা হত্যাকাণ্ড, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের রক্ত লেগে আছে, সেই আওয়ামী লীগকে কোন স্বার্থ বাস্তবায়ন করার জন্য তাদের নিষিদ্ধ করা হচ্ছে না? অন্তর্বতী সরকারকে বলবো, আপানারা অতিদ্রুত গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করেন। সারা বাংলার ছাত্র জনতা আপনাদের সঙ্গে আছে।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, “৫ আগস্টে আমরা আওয়ামী লীগকে দাফন করলেও আমাদের কাছে ডেথ সার্টিফিকেট নেই। আমরা আওয়ামী লীগের ডেথ সার্টিফিকেট চাই। যেসব রাজনৈতিক দল আজ আওয়ামী লীগের প্রতি নমনিয়তা দেখাচ্ছে, তাদের জানিয়ে দিতে চাই, ৫ আগস্ট না আসলে জামায়াত-বিএনপিকে ৫ আগস্টের দায় নিয়ে নিষিদ্ধ হতে হত।”
তিনি বলেন, “হাজার হাজার ছাত্র আপনাদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছে শুধু জুলাই গণহত্যাসহ সব গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার জন্য। আমরা ইন্টেরিমকে জানাতে চাই, আপনারা অনতিবিলম্বে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে সংস্কার ও নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন। তা না হলে আওয়ামিলীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে আবারো রাজপথে নামবে ছাত্র-জনতা।”
আরেক সাবেক সমন্বয়ক ফাহিম রেজা বলেন, “স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে যখনই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছেন, তারা রাজনীতি করেনি। তারা রাজনীতির নামে ফ্যাসিবাদের চর্চা করেছে। শেখ মুজিব ক্ষমতায় এসে গণতন্ত্রকে ধূলিসাৎ করে বাকশাল গঠন করেছে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে পুরো নির্বাচন ব্যবস্থাই নষ্ট করে দিয়েছে।”
তিনি বলেন, “পৃথিবীতে আমরা দেখেছি, যে দেশে কোনো রাজনৈতিক দল গণহত্যায় জরিয়েছে, তারা আর কখনো রাজনীতি করার সুযোগ পায়নি। এই আওয়ামী লীগ শুধু গণহত্যা করেছে, তা নয়। তারা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকেও বিনষ্ট করেছে। সুতরাং আওয়ামী লীগকে অনতিবিলম্বে বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অথবা গণভোটের মাধ্যমে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।”
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন ষ দ ধ কর অ য কশন গণহত য র জন ত আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
এলডিসি উত্তরণের পরবর্তী প্রস্তুতি নিতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন
স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের পর সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় চারটি রপ্তানিনির্ভর খাতের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি উচ্চ পর্যায়ের আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করেছে সরকার।
চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য এবং ফার্মাসিউটিক্যালস খাতের রপ্তানি সক্ষমতা কীভাবে বাড়ানো যায়, তা পর্যালোচনার জন্য ১৫ সদস্যের এ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে অর্থ বিভাগ। গত ২৯ জুলাই অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থবিভাগের মনিটরিং সেল থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণ ঘটাবে। এরপর থেকে রপ্তানিনির্ভর নগদ সহায়তা বা ভর্তুকি প্রদান আন্তর্জাতিক বাণিজ্যনীতির পরিপন্থী হয়ে উঠবে। এ প্রেক্ষাপটে বিকল্প কৌশল নির্ধারণে এই চারটি খাতকে বাছাই করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মুখ্য সচিবকে সভাপতি করে গঠিত কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন—বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ সচিব, বাণিজ্য সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, শিল্প সচিব, কৃষি সচিব, বস্ত্র ও পাট সচিব, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, বিএসটিআই মহাপরিচালক, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বিসিক চেয়ারম্যান এবং এফবিসিসিআই সভাপতি। কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মহাপরিচালক।
কমিটির কার্যবিধিতে বলা হয়েছে—
ক) জমাকৃত প্রতিবেদনে উল্লেখিত সুপারিশসমূহ থেকে সরকারের সক্ষমতা বিবেচনায় গ্রহণযোগ্য সুবিধা নির্ধারণ করা হবে।
খ) এসব সুবিধা প্রদানের জন্য সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে।
গ) গৃহীত পরিকল্পনার বাস্তবায়ন ও মূল্যায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তর বা সংস্থাসমূহের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা হবে এবং বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে কমিটি।
ঘ) প্রয়োজন হলে প্রতিবেদন বহির্ভূত নতুন সুপারিশও বাস্তবতা বিবেচনায় অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ থাকবে।
ঙ) কমিটি প্রয়োজনে এক বা একাধিক সদস্য কো-অপ্ট করার এখতিয়ার রাখবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এলডিসি-পরবর্তী বাস্তবতায় টেকসই রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে, নীতিগত স্থিতিশীলতা ও খাতভিত্তিক প্রস্তুতির কোনো বিকল্প নেই। এই উদ্যোগকে তারা সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন।
এদিকে, বুধবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের প্রস্তুতি বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বেলা ১১টায় তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকা/হাসনাত/ইভা