তরুণেরা নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারছে না বলে মন্তব্য করেছেন কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার। তিনি বলেছেন, তরুণেরা যে পথে হাঁটছেন সেটি কোনো সুষ্ঠু ‘মডেল’ নয়।

৫ আগস্ট সংবিধানকে বলবৎ রেখে দেওয়ার মাধ্যমে গণ–অভ্যুত্থানকে কবর দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে ফরহাদ মজহার বলেন, সংবিধান রেখে দিয়ে তরুণেরা নিজেদের সুরক্ষাকে ধ্বংস করেছে। আমার ধারণা, আগামী কয়েক দশকে এই সংবিধান নিয়ে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।

আজ শনিবার রাজধানীর বিএমএ ভবনের শহীদ ডা.

মিলন হক মিলনায়তনে ‘কেমন বাংলাদেশ চাই’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় এসব কথা বলেন ফরহাদ মজহার। সম্মিলিত বাংলাদেশ পরিষদ নামের একটি মঞ্চের উদ্যোগে ওই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করা হয়।

তরুণদের শুধরে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘গণতন্ত্র বলতে জনগণের মতামত, যেটা ৫ আগস্টে নির্ধারিত হয়ে গেছে। আমরা এমন কোনো রাষ্ট্র চাই না, যে রাষ্ট্র আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে; কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, এখনো প্রতিদিন নাগরিক অধিকার হরণ হচ্ছে।’

ফরহাদ মজহার বলেন, ‘গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সকল আইনকে আমরা উৎখাত করেছিলাম। তাহলে আগের আইনে কেন মানুষকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে? এখনো রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় মানুষ গ্রেপ্তার হচ্ছে। সামনে জুলাই যোদ্ধাদের ধরে ধরে মারা হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকার বিনিয়োগে ‘ঢাকঢোল পেটাচ্ছেন’ উল্লেখ করে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘মুহাম্মদ ইউনূস বিনিয়োগ আনছেন; কিন্তু বছরের পর বছর আমরা সস্তা শ্রমের কাঁটাতারে আটকে আছি। তারা শ্রমিকদের রক্ষায় কোনো কাজ করছে না। আমাদের আইনের সুরক্ষা তৈরি হয়নি, নাগরিক অধিকার রক্ষা হচ্ছে না।’

আরও পড়ুনবিএনপি বলেন, আওয়ামী লীগ বলেন, সব একই জিনিস: ফরহাদ মজহার৩ ঘণ্টা আগে

ঐকমত্য বলে যেসব আলোচনা হচ্ছে, সেটা দিয়ে ‘মাফিয়া’দের রুখে দেওয়া সম্ভব নয় উল্লেখ করে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘তরুণদের বলতে চাই, তোমরা যে পথে হাঁটছ, সেটা কোনো সুষ্ঠু মডেল না। এনসিপিকে অন্য দলের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। কিন্তু তারা সঠিক পথে না হাঁটলে আগামীর বাংলাদেশ গড়তে পদে পদে হোঁচট খাবে।’

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

জকসুসহ তিন দফা দাবি মেনে নিল প্রশাসন, ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও সম্পূরক বৃত্তিসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি মেনে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের আশ্বাসে ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভেঙে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

বুধবার রাত দশটার দিকে প্রশাসনের পক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অনশনরত শিক্ষার্থীদের ফলের রস খাইয়ে অনশন ভাঙানো হয়। শিক্ষার্থীদের অনশন ভঙ্গ করান করান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক ও সিন্ডিকেট সদস্য বিলাল হোসাইন।

এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ গিয়াসউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই মোতাবেক নির্বাচনের রূপরেখাও ঘোষণা করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আগামী জানুয়ারি থেকে আবাসন ভাতা পাবেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে বৃত্তির জন্য উপযুক্ত শিক্ষার্থীদের নভেম্বরের মধ্যে যাচাই-বাছাই করার কাজ শেষ করা হবে।

অনশনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ২৭ নভেম্বরের আগেই কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপন করা হবে। ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মানোন্নয়নে প্রশাসন কাজ করবে।

আরও পড়ুনতিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৪ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ১২ ঘণ্টা আগে

এ সময় অনশনে বসা উদ্ভিদ বিজ্ঞানের বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। আবাসন ভাতার জন্য প্রতিশ্রুত সময়ও দিয়েছে প্রশাসন। কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আমরা অনশন ভেঙে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি।

সতর্ক করে দিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যদি প্রশাসন ঘোষিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সমস্ত দায় মাথায় নিয়ে সম্পূর্ণ প্রশাসনকে পদত্যাগ করতে হবে।

এর আগে তিন দফা দাবি আদায়ে গত মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন চারজন শিক্ষার্থী। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়। অনশনে বসা চার শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন বাগছাসের নেতা।

আরও পড়ুনজকসু নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা, ভোট ২৭ নভেম্বর২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ