প্রাইম এশিয়া শিক্ষার্থী হত্যা, ছাত্রদল মিডিয়া ট্রায়ালে লিপ্ত হয়েছে: উমামা ফাতেমা
Published: 21st, April 2025 GMT
প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যার ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ছাত্রদলের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালানোর অভিযোগ তুলেছে। প্লাটফর্মের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেছেন, ছাত্রদল অপরাধ প্রমাণের আগেই ‘মিডিয়া ট্রায়ালে’ লিপ্ত হয়েছে। এ ধরনের প্রচারণাকে নিন্দা জানিয়েছে একই সঙ্গে পারভেজের হত্যাকাণ্ডে দ্রুত সময়ে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করে শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন তারা।
রোববার রাত সাড়ে দশটায় রাজধানীর রূপায়ন টাওয়ারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব কথা জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা, জুলাই গণঅভ্যুত্থান বিষয়কের সেলের সম্পাদক হাসান ইনাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য মইনুল ইসলাম, সিনথিয়া জাহিন আয়েশা, সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আহবায়ক এম এইচ মঞ্জুর, বনানী থানার আহবায়ক মাহমুদুল হাসান জয় প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে উমামা ফাতেমা বলেন, জাহিদুল ইসলামের নির্মম হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে ছাত্রদল একটি ঘৃণ্য রাজনৈতিক অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। হত্যার প্রকৃত কারণ, প্রকৃত অপরাধী ও ক্যাম্পাসে সহিংসতা ছড়ানোর পেছনে থাকা বাস্তব চিত্রকে আড়াল করে তারা ঘটনার রাজনৈতিক ব্যবচ্ছেদে মনোযোগী হয়েছে। এমনকি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গণঅভ্যুত্থানের প্লাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে এই হত্যার মদদদাতা হিসেবে অভিযুক্ত করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ঘটনার সময় উপস্থিত ব্যক্তিদের মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বনানী থানা কমিটির সাথে যুক্ত প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি বিভাগের ছাত্র হৃদয় মিয়াজি এবং ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সোবহান নিয়াজ তুষার ছিলেন। একইসাথে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী ইমতিয়াজ জাহিদ, ছাত্রদল কর্মী তাওহিদ অন্য শিক্ষার্থীরাও সেখানে ছিলেন। তদন্তের আগে আমরা কোনোভাবেই সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে চাই না যে কারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার আগেই ছাত্রদল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালিয়ে ‘মিডিয়া ট্রায়ালে’ লিপ্ত হয়েছে, যা নিন্দনীয় ও অনভিপ্রেত।
তিনি আরও বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত যে-ই হোক, তাদেরকে রাজনৈতিক পরিচয়ের ঊর্ধ্বে গিয়ে, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে বিচারের আওতায় আনতে হবে। যেহেতু ক্যাম্পাসে এক শিক্ষার্থী হত্যার মতো গুরুতর অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তাই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উপস্থিত সকলকে—তা তারা যে সংগঠনেরই হোক—তদন্তের আওতায় আনা অবশ্যই যুক্তিযুক্ত।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হত য ল প ত হয় ছ ছ ত রদল অপর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ মির্জা ফখরুলের
গণঅভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নে দলীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গণসংযোগের সময় দেওয়া বক্তব্যে এই আহ্বান রাখেন তিনি।
শেখ হাসিনার শাসন আমলে বিএনপি নেতাকর্মীদের নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথা তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল। গুম, খুন, ভিত্তিহীন মামলা, লুটপাট, টাকা পাচার, বাকস্বাধীনতা হরণ ও ভোট চুরিসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।
আরো পড়ুন:
জুলাই গণহত্যা: শেখ হাসিনাসহ ৪০৮ জনের বিরুদ্ধে আরেক মামলা
হাসিনা-রেহানাসহ ২২ জনের গ্রেপ্তার-সংক্রান্ত প্রতিবেদন ১২ মে
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমাদের নেতাকর্মীদের গুম করা হয়েছে। লাখ লাখ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে, তাদের ঘরে থাকতে দেননি আপনি। আমরা তো কোথাও পালিয়ে যাইনি। আদালতে মিথ্যা মামলা আইনের মাধ্যমে ফেইস (মোকাবিলা) করেছি। উকিল ধরে জামিন নিয়েছি। আপনি (শেখ হাসিনা) পালিয়ে আছেন কেন? আপনিও মামলা লড়েন। আপনি দেশে এসে দাড়ান না দেখি।”
জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা অনেকে মনে করেন শেখ হাসিনা আবারো দেশে ফিরে আসবেন। তিনি তো ১৫ বছর দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার বাবা শেখ মুজিবুর রহমান একজন বিখ্যাত মানুষ ছিলেন। তার তো দেশ থেকে পালানোর কথা ছিল না। তিনি পালালেন কেন? কারণ তিনি একজন ডাইনি ছিলেন। জনগণের ওপর এমন নির্যাতন করেছেন যে, তিনি পালাতে বাধ্য হয়েছেন। জনগণ যদি সেদিন তাকে পেত, তাহলে ছিঁড়ে খেত।”
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, “হাসিনা দেশে ফিরে রাজনীতি করলে আমাদের কিছু করতে হবে না, জনগণই তাকে দেখে নেবে।”
আওয়ামী লীগের শাসনামলের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “বিএনপির নেতাকর্মীরা যেন আওয়ামী লীগের মতো অন্যায় না করে; এতে মানুষ ভালোবাসবে না। দলের কোনো নেতাকর্মীরা অন্যায় করলে যেন জেলার নেতারা তাদের শক্ত হাতে দমন করেন; তারা যেন অন্যায়কারীদের পুলিশের হাতে তুলে দেন। তাই অপকর্ম বন্ধ করুন, না হলে আওয়ামী লীগের মতো অবস্থা হবে।”
ত্রোদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দৃষ্টি রেখে জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। মির্জা ফখরুলসহ দলটির শীর্ষ নেতারা সভা-সমাবেশ করছেন। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা, না রাখা নিয়ে ব্যাপক মতপার্থক্য রয়েছে; সেই সঙ্গে আইনি ঝক্কিও সামনে আসছে।
গণহত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একাধিক মামলায় আসামি করা হয়েছে শেখ হাসিনাকে। এ ছাড়া কয়েক শত ফৌজদারি মামলায় তিনি আসামি। অনেক মামলায় তাকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। তবে ভারতের আশ্রয়ে থাকা শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর কোনো নিশ্চয়তা এখনো তৈরি হয়নি।
গণঅভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ছোট বোন রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। সেদেশে উচ্চনিরাপত্তা শৃঙ্খলে বসবাস করছেন বলে আন্তর্জাতিক সাংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়ে থাকে। সেখান থেকে দেশে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে অনলাইনে তার কথোপকথনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যা নিয়ে অস্বস্তির কথা ভারতকে জানিয়ে রেখে অন্তর্বর্তী সরকার।
ঢাকা/মঈনুদ্দীন/মাসুদ