ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কুয়েট উপাচার্যের কুশপুত্তলিকা দাহ
Published: 21st, April 2025 GMT
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি (কুয়েট) বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে কুয়েট উপাচার্যের কুশপুত্তলিকা দাহ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। সোমবার রাতে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দ’–এর ব্যানারে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে এই কর্মসূচি থেকে কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগও দাবি করেন তাঁরা।
সংহতি সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রেজওয়ান আহমেদ বলেন, ‘একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হচ্ছেন একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ওপর শুধু ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলাই নয়, আমরা পত্রিকা মারফত জেনেছি সেখানে ১০ রাউন্ডের বেশি গুলিও হয়েছিল। এই ধরনের পরিস্থিতিতেও ভিসি তাঁর শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ান নাই।’
রেজওয়ান আহমেদ বলেন, ‘আমরা ইন্টেরিমের (অন্তর্বর্তী সরকার) কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই, যে বিশ্ববিদ্যালয় ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী তাদের ভিসির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি তার শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে পারে না, যে বিশ্ববিদ্যালয় বিএনপি এবং দলীয় সংগঠন এনে হামলা করায়, তাদেরকে রেখে আপনারা একটি বিশ্ববিদ্যালয় কীভাবে চালাবেন?’
ছাত্রদলকে ইঙ্গিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী সরদার নাদিম বলেন, ‘গত ষোলো বছর আপনাদের আন্দোলনে শেখ হাসিনার পতন হয়নি, সাধারণ শিক্ষার্থীদের দুই মাসের আন্দোলনে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে।’
ছাত্রদল ‘নব্য ছাত্রলীগ’ হয়ে উঠছে কি না, সে প্রশ্ন তুলে ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী রাইয়ান ফেরদৌস বলেন, ‘আমরা দেখেছি ছাত্রলীগের সময় আমাদের ওপর হামলা হতো আবার আমাদের ওপরেই মামলা হতো। সেই কালচারই আমরা আবার দেখছি।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা
‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’
এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’
প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।