ইতালীয় সংবাদপত্রের সঙ্গে বিক্রি হচ্ছে এআই দিয়ে লেখা ক্রোড়পত্র
Published: 22nd, April 2025 GMT
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহার করে অনেক কিছুই লেখা যায়। এআই বিভিন্ন বই সম্পর্কে যেমন পর্যালোচনা লিখতে পারে, তেমনি বিভিন্ন বিষয়ে লিখতে পারে। লেখালেখি বা সাংবাদিকতায় নানাভাবে এআই ব্যবহার করার মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। ইতালীয় একটি সংবাদপত্র এআই ব্যবহার করে নতুন একটি চমক তৈরি করেছে।
ইল ফোগলিও নামের একটি পত্রিকা বিশ্বে প্রথমবারের মতো এআই দিয়ে তৈরি ক্রোড়পত্র প্রকাশ করছে। এক মাসের জন্য চার পৃষ্ঠার একটি দৈনিক ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে পত্রিকাটি। ক্রোড়পত্র পুরোটাই এআই দিয়ে লেখা। সাধারণ সংবাদপত্রের অংশ হিসেবে বিক্রি করা হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হলেও বেশ সাফল্য পেয়েছে পত্রিকাটি। এআই দিয়ে ক্রোড়পত্র তৈরি করে ছাপানো সংবাদপত্র বিক্রি বৃদ্ধি পেয়েছে। পত্রিকার সম্পাদক ক্লাউদিও সেরাসার ভাষ্য থেকে জানা যায়, এখন থেকে ছাপা পত্রিকার সঙ্গে এআই দিয়ে লিখিত একটি আলাদা বিভাগ সপ্তাহে একবার প্রকাশ করা হবে। ইল ফোগলিও পত্রিকায় এখন ২২ জন কর্মী কাজ করছেন। আকারে ছোট রক্ষণশীল সংবাদপত্রে জ্যোতির্বিদ্যা বিষয় নিবন্ধের মতো যেসব ক্ষেত্রে সংবাদপত্র বা সাংবাদিকদের দক্ষতা নেই, সেসব বিষয়ে মাঝেমধ্যে নিবন্ধ লিখতে এআই ব্যবহার করা হবে।
পত্রিকার সম্পাদক জানিয়েছেন, এআই প্রোগ্রাম চালু করলেও নিউজরুমে কোনো সাংবাদিকের চাকরি হারানোর ভয় নেই। সম্পাদক সেরাসা জানান, কিছু প্রকাশক এআইকে কম সাংবাদিক ও বেশি যন্ত্র ব্যবহারের উপায় হিসেবে দেখছেন, যা আসলে বড় ভুল ও আত্মঘাতী। মূল বিষয় হচ্ছে, আপনি এআই দিয়ে বেশি করতে পারেন, তা বোঝা প্রয়োজন। এআই এমন লোকদের জন্য চাকরি তৈরি করবে, যাঁরা সঠিক প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে ও প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার করতে জানেন। এআইয়ের ব্যবহার সাংবাদিকদের আরও গভীরভাবে অনুসন্ধান করতে ও আরও মৌলিক হতে বাধ্য করে উচ্চ মানের সাংবাদিকতাকেও উৎসাহিত করবে। লেখকদের আরও সৃজনশীল ও লেখার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির জন্য নতুন উপাদান খুঁজে বের করতে বাধ্য করবে এআই।
সেরাসা প্রতিদিন তাঁর এআই প্রোগ্রাম ব্যবহার করতেন। সেরাসা বলেন, সবচেয়ে রহস্যময় জিনিস, সবচেয়ে অবিশ্বাস্য জিনিস হচ্ছে এআইয়ের রসবোধ বেশ ত্বরিত ও খাঁটি। আপনি যদি এটিকে কোনো বিষয়ে ব্যঙ্গাত্মক নিবন্ধ লিখতে বলেন, এআই জানে কীভাবে তা লিখতে হয়। এআই বই পর্যালোচনা তৈরিতেও দক্ষ। ৭০০ পৃষ্ঠার বই বিশ্লেষণ করতে ও কয়েক মিনিটের মধ্যে সমালোচনা তৈরি করতে সক্ষম। যদিও এখনো এআইয়ের চিন্তাভাবনায় কিছুটা দুর্বলতা রয়েছে বলে সতর্কতার কথা জানিয়েছেন সম্পাদক সেরাসা।
সূত্র: রয়টার্স
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক র ড়পত র স ব দপত র এআই দ য়
এছাড়াও পড়ুন:
মানুষের মস্তিষ্কের চেয়েও শক্তিশালী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি তৈরি করতে চায় মেটা
মানুষের মস্তিষ্কের চেয়েও শক্তিশালী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি, অর্থাৎ ‘সুপার ইন্টেলিজেন্স’ তৈরি করতে চায় মেটা। এ জন্য স্কেল এআইয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী আলেক্সান্দ্র ওয়াংকের সহায়তায় নতুন গবেষণাগার তৈরি করতে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানটি। সর্বাধুনিক প্রযুক্তির গবেষণাগার চালুর জন্য কয়েক শ কোটি ডলার বিনিয়োগ করা হবে। শুধু তাই নয়, স্কেল এআইয়ের বেশ কিছু কর্মীকেও মোটা অঙ্কের বেতনে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে।
মার্ক জাকারবার্গের নেতৃত্বে এক দশক ধরেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করছে মেটা। ২০১৩ সালে ডিপমাইন্ড অধিগ্রহণ করতে না পেরে মার্ক জাকারবার্গ মেটার জন্য প্রথম পূর্ণাঙ্গ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষণাগার গড়ে তোলেন। বর্তমানে মেটার এআই গবেষণায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও ২০১৮ সালের টুরিং পুরস্কারজয়ী বিজ্ঞানী ইয়ান লেকুন। নিউরাল নেটওয়ার্ক প্রযুক্তির পথিকৃৎ এই বিজ্ঞানী মনে করেন, বর্তমানে প্রচলিত প্রযুক্তি দিয়ে সাধারণ বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন এআই (এজিআই) তৈরি সম্ভব নয়; এ জন্য একেবারে নতুন ধরনের কাঠামো ও ধারণার প্রয়োজন।
মেটা ইতিমধ্যে বেশ কিছু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর পণ্য বাজারে এনেছে। ‘মেটা এআই’ নামের চ্যাটবট এখন ব্যবহৃত হচ্ছে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ এবং রে-ব্যান স্মার্ট চশমায়। গত মে মাসে জাকারবার্গ জানান, বর্তমানে প্রতি মাসে শতকোটির বেশি মানুষ মেটা এআই ব্যবহার করছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে আলেক্সান্দ্র ওয়াং ও লুসি গুও মিলে স্কেল এআই প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তী সময়ে লুসি গুও প্রতিষ্ঠান থেকে বরখাস্ত হন। শুরুতে ওপেনএআই, মাইক্রোসফট, কানাডাভিত্তিক কোহিয়ারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে এআই প্রযুক্তি উন্নয়নে সহায়তা করত। তবে সাম্প্রতিক সময়ে স্কেল এআই বিভিন্ন দেশের করপোরেট ও সরকারি সংস্থার সঙ্গে কাজ শুরু করেছে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস