ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুর খবর সোমবার (২১ এপ্রিল) বিশ্ববাসীকে সর্বপ্রথম যিনি দিয়েছিলেন, তিনি হলেন কেভিন ফ্যারেল।

তিনি একজন কার্ডিনাল, যার সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। সাধারণত পোপের খুবই ঘনিষ্ঠ মহলের সদস্য হন কার্ডিনালরা। পৃথিবীজুড়ে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের চার্চগুলো পরিচালনার ক্ষেত্রে কার্ডিনালরা পোপকে সহায়তা করেন। সূত্র: বিবিসি

আইরিশ-আমেরিকান কার্ডিনাল কেভিন ফ্যারেল সোমবার ঘোষণা করেন, পোপ তার প্রভুর ঘরে ফিরে গেছেন। এই ঘোষণার পর তিনি 'ক্যামেরলেনগো' হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। নতুন পোপ নির্বাচিত হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনিই এখন থেকে ভ্যাটিকানের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান।

এই দায়িত্বের জন্য ২০১৯ সালেই তাকে মনোনীত করেছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। পোপের মৃত্যু অথবা কোনো পোপ পদত্যাগ করলে পোপের পরবর্তী উত্তরসূরি নির্বাচনের আগ পর্যন্ত যে সময়, এটি 'অ্যাপোস্টোলিকা সেডেস ভ্যাকান্স' নামে পরিচিত।

শুধু প্রশাসনিক দায়িত্বের ক্ষেত্রে না, পোপ ফ্রান্সিসকে শ্রদ্ধা জানানোর শত শত বছরের প্রথাগত আনুষ্ঠানিকতার নেতৃত্বেও থাকবেন কেভিন ফ্যারেল।

১৯৪৭ সালে ডাবলিনে জন্ম নেওয়া কেভিন ফ্যারেল পড়াশোনা করেছেন স্পেনের ইউনিভার্সিটি অব সালামাঙ্কা ও রোমের পন্টিফিক্যাল গ্রেগরিয়ান ইউনিভার্সিটিতে।

তিনি কর্মজীবনে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে কাজ করেছেন। যেমন— মেক্সিকোর ইউনিভার্সিটি অব মন্টেরে-তে চ্যাপলেইন বা ধর্মগুরু হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। আবার, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ডের বেথেসডা'র একটি প্যারিশেও (গির্জা ও যাজক সংক্রান্ত দেশের বিভাগ বিশেষ) তিনি কাজ করেছেন।

৭৭ বছর বয়সী কার্ডিনাল ফ্যারেল তার জীবনের ৩০ বছরেরও বেশি সময় কাটিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন গির্জায় কাজ করে।

২০০৭ সালে তিনি ডালাসের বিশপ হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। এরপর ২০১৬ সালে পোপ ফ্রান্সিস তাকে ভ্যাটিকানের প্যাস্টোরালেয়ার বিষয়ক নতুন একটি বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব দেন এবং পাশাপাশি তিনি তাকে কার্ডিনালের মর্যাদায়ও উন্নীত করেন।

'ক্যামেরলেনগো' হিসাবে নির্বাচিত করার কয়েক বছর পর, ২০২৩ সালে কেভিন ফ্যারেলকে ভ্যাটিকান সিটি স্টেটের সুপ্রিম কোর্টের প্রেসিডেন্ট এবং কমিশন ফর কনফিডেনশিয়াল ম্যাটারসের প্রধান হিসেবেও নিয়োগ দেওয়া হয়।

এখন ক্যামেরলেনগো হিসেবে তার মূল দায়িত্ব— পরবর্তী পোপ নির্বাচনের জন্য সব আয়োজন সম্পন্ন করা। তবে এই পদ থেকেও পোপ নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ আছে, যদিও তা বিরল। এর আগে ইতিহাসে মাত্র দু'জন ক্যামেরলেনগো পোপ হয়েছেন।

তাদের একজন হলেন গিওআচিনো পেচি (পোপ লিও ১৩), যিনি ১৮৭৮ সালে ক্যামেরলেনগো পোপ হয়েছিলেন। দ্বিতীয়জন হন ১৯৩৯ সালে, তার নাম ইউগেনিও পাচেলি (পোপ পায়াস ১২)।

কার্ডিনাল ফ্যারেলই আনুষ্ঠানিকভাবে পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুর সনদে স্বাক্ষর করবেন। তারপর তিনিই পোপ ফ্রান্সিসের মরদেহ কফিনে শায়িত করবেন।

ধারণা করা হচ্ছে, স্থানীয় সময় বুধবার সকালে শোকযাত্রার মাধ্যমে পোপের মরদেহ ডোমাস সান্তা মার্তা চ্যাপেল থেকে সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় নিয়ে যাওয়া হবে। এই শোকযাত্রার নেতৃত্বেও থাকবেন কার্ডিনাল কেভিন ফ্যারেল।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর ছ ন ক জ কর

এছাড়াও পড়ুন:

‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার

রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল বুধবার দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। আজ মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ পরবর্তী ওই দিন ধার্য করেন।

এর আগে গত ১৮ মে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ শুনানির জন্য ১ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন। ধার্য তারিখে বিষয়টি শুনানির জন্য রিভিউ আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ১৫ জুলাই পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। আজ বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।

ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদধারীদের পদক্রম ওপরের দিকে রাখা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি জেলা জজদের পদক্রম আট ধাপ উন্নীত করে সচিবদের সমান করা হয়।

আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির পদক্রম এক ধাপ উন্নীত করে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সমান এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করে যে মুক্তিযোদ্ধারা বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন) পদক্রমে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।

ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন। রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পক্ষভুক্ত হন। পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর গত ২৭ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়।

আজ আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। রিট আবেদনকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে অংশ নেন।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে তা সংশোধন করা হয়।

সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। সংশোধিত এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ, সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমিকে রাখা হয়েছে—এমন উল্লেখ করে এর বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে রিট করেন।

রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (সংশোধিত) অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে করা আবেদনের ওপর শুনানি চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আসামির কাঠগড়ায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের ৪৫ মিনিট
  • পরবর্তী সরকারের পক্ষে এত সহজে সংস্কার আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করা সম্ভব হবে না: আসিফ নজরুল
  • বিসিআইসির নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ
  • এলডিসি উত্তরণের পরবর্তী প্রস্তুতি নিতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন
  • ৪৪তম বিসিএস: মনোনীত প্রার্থীদের তথ্য চেয়ে পুনরায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
  • ‘আগামীর বাংলাদেশে মিডিয়াকে দালাল হিসেবে দেখতে চাই না’ 
  • ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার
  • মাইলস্টোনে দগ্ধ ৩৩ জন এখনো ভর্তি, আইসিইউতে ৩
  • শেখ হাসিনার অডিওগুলো শুনলে বোঝা যায়, তাঁর এখনো প্রতিশোধ নেওয়ার ইচ্ছা আছে: আইন উপদেষ্টা
  • দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্র্যাক ব্যাংকের মুনাফা বেড়েছে