২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা দুর্ঘটনাকে জাতীয় ইস্যুতে পরিণত করে অবিলম্বে আহতদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান আহমেদ।

গতকাল বুধবার বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড  অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) আয়োজনে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত ‘রানা প্লাজা ভবন ধস: বিচারের অপেক্ষায় এক যুগ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। 

সৈয়দ সুলতান আহমেদ বলেন, রানা প্লাজা ভবন ধসের মতো ভয়াবহ দুর্ঘটনাকে জাতীয় ইস্যুতে পরিণত করা হয়নি। অথচ এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশের সব মামলা প্রক্রিয়ার পরিবর্তন হওয়ার কথা ছিল। দেশে একটা নিরাপত্তা সংস্কৃতি তৈরি হওয়ার কথা ছিল। এত মানুষ আমরা এত বছর ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছি, তবুও ঘটনার বিচার সম্ভব হয়নি। এটিকে জাতীয় ইস্যুতে পরিণত করে ধারাবাহিকভাবে এর যাবতীয় আইনি কার্যক্রম ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

তিনি বলেন, শ্রম সংস্কার কমিশনের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে আমি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে এটাই বলে যাচ্ছি– ১২ বছর আগের করে দেওয়া ব্যবস্থা এখন আর প্রযোজ্য নয়। আহতদের পুনর্বাসন করতে হবে। প্রত্যেককে এনে অ্যাসেসমেন্টের মাধ্যমে আলাদা প্রোফাইল তৈরি করতে হবে; বড় বড় হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের কী ধরনের চিকিৎসা বা পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে, তা জানতে হবে এবং দ্রুততম সময়ে কাজগুলো শুরু করতে হবে। এটা অসম্ভব কিছু নয়। কারণ মানুষ এখনও মনে করে, এ ঘটনার বিচার হওয়া সম্ভব। ক্ষতিপূরণ দেওয়া ও পুনর্বাসন হওয়া সম্ভব।

সভায় উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন জায়গায় যে সমন্বয়হীনতা রয়েছে, তার কারণে এক যুগ পরও রানা প্লাজা ভবন ধসের কোনো বিচার হয়নি। আলোচনায় অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আবুল কালাম খান বলেন, আমরা সুসংগঠিত পদ্ধতিতে এগিয়ে যাচ্ছি। আশা করি, ২০২৬ সালের মধ্যে মামলাটির নিষ্পত্তি হবে।

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ব্লাস্টের পরিচালক লিগ্যাল মো.

বরকত আলী, শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য তাসলিমা আক্তার, আইনজীবী একেএম নাসিম, আইনজীবী শারমিন সুলতানা ও মাসুম বিল্লাহ, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক দলের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন প্রমুখ।  

যুগপূর্তিতে মোমবাতি প্রজ্বালনে নিহতদের স্মরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভার জানান, রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির যুগপূর্তি উপলক্ষে মোমবাতি প্রজ্বালন করা হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় রানা প্লাজার সামনে শহীদ বেদিতে নিহত শ্রমিকদের স্মরণে এ কর্মসূচি পালন করেন হতাহতদের স্বজনসহ বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীরা। পরে নিহতদের স্মরণে নীরবতা পালন ও বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এ সময় রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিতে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানানো হয়।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বরগুনায় বিএনপির কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের মামলা প্রত্যাহারের আবেদন আদালতে নাকচ

বরগুনা জেলা বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন নাকচ করেছেন আদালত। গতকাল সোমবার বরগুনার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিরুজ্জামান এই আদেশ দেন।

এদিকে আদালতের নথি কাটাছেঁড়ার অভিযোগে মামলার বাদী শহিদুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

এর আগে ২৩ জুলাই জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্য শহিদুল ইসলাম ২৩১ জন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। মামলার পর আদালত বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ৩০ মে বরগুনা জেলা বিএনপির কার্যালয়ে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল চলাকালে আসামিরা আগ্নেয়াস্ত্র, রামদা, ছেনি, চায়নিজ কুড়ালসহ কার্যালয় ঘিরে ফেলেন। এরপর তাঁরা হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর, ককটেল বিস্ফোরণ ও ত্রাস সৃষ্টি করেন। এ সময় বিএনপির নেতা-কর্মীদের মারধর ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

গত রোববার বরগুনা জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম এক বৈঠকে শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ফোরামের সদস্যসচিব আবদুল ওয়াসি মতিন বলেন, ‘তিনি (শহিদুল ইসলাম) আমাদের সদস্য। তিনি মামলা করেছেন, তা আমরা জানতাম না। তাই তাঁকে শোকজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

একই দিনে শহিদুল ইসলামের দুটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি জানি না কার নামে মামলা হয়েছে, নেতারাই আমাকে দিয়ে মামলা করিয়েছেন।’

বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা প্রথম আলোকে বলেন, এটি দলীয় সিদ্ধান্ত নয়। যিনি মামলা করেছেন, তিনি ব্যক্তিস্বার্থে করেছেন। এতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।

আদালতের পেশকার নাদিরা পারভীন বলেন, মামলার আদেশ হওয়ার পর বাদী আদালতের নথিতে কাটাছেঁড়া করেছেন। তাই আদালত তাঁকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন এবং আগামী ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

মামলা প্রসঙ্গে শহিদুল ইসলাম বলেন, কিছু আসামির নাম-ঠিকানা ভুল ছিল, সে কারণে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করেছিলাম।

উল্লেখ্য, একই ঘটনায় বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত এস এম নজরুল ইসলামের ছেলে এস এম নইমুল ইসলাম ৩০ এপ্রিল একটি মামলা করেন। ওই মামলায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের পাশাপাশি বিস্ফোরক আইনের ধারা সংযোজন করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শিক্ষকের মুক্তি চেয়ে শিক্ষার্থীদের আদালত চত্বরে অবস্থান, সড়ক অব
  • কিশোরগঞ্জে আইনজীবীর বাড়িতে ডাকাতি, ২৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুট
  • আবু সাঈদ হত্যা: ‘ঘটনাস্থলে ছিলেন না’ দাবি করে দুই আসামির অব্যাহতির আবেদন
  • দুদকের মামলায় রাজশাহীর সাবেক জেলা রেজিস্ট্রার কারাগারে
  • বরগুনায় বিএনপির কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের মামলা প্রত্যাহারের আবেদন আদালতে নাকচ
  • আহতদের চিকিৎসা দিয়ে ফিরে গেছে ভারতীয় চিকিৎসকরা
  • মাইলস্টোনে বিমান দূর্ঘটনায় হতাহতদের জন্য মহানগর সাংস্কৃতিক জোটের দোয়া
  • জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগ জাতি ভুলে যেতে পারে না: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা
  • মাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্তে হতাহতদের জন্য জিয়া সৈনিকদলের দোয়া 
  • বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে সোনারগাঁয়ে দোয়া মাহফিল