এ বছর বাংলাদেশে আরও ৩০ লাখ মানুষ ‘অতি গরিব’ হবে, কারণ কী
Published: 24th, April 2025 GMT
এ বছর বাংলাদেশে আরও ৩০ লাখ মানুষ অতি গরিব হবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক। অতি দারিদ্র্যের হার বেড়ে ৯ দশমিক ৩ শতাংশ হবে।
বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, চলতি বছরে শ্রমবাজারের দুর্বল অবস্থা অব্যাহত থাকবে। এ ছাড়া সাধারণ মানুষের, বিশেষ করে দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাওয়ার ঝুঁকিতে থাকা মানুষের প্রকৃত আয় কমতে পারে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের শ্লথগতির কারণে ঝুঁকিতে থাকা গরিব মানুষের ওপর বেশি প্রভাব ফেলছে। এতে বৈষম্য আরও বাড়বে বলে বিশ্বব্যাংক মনে করে।
শুধু অতি দারিদ্র্য হার নয়; জাতীয় দারিদ্র্য হারও বাড়বে বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুসারে, অতি দারিদ্র্যের হার ৭ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২৫ সালে ৯ দশমিক ৩ শতাংশে উঠবে। জাতীয় দারিদ্র্য হার গত বছরে ছিল সাড়ে ২০ শতাংশ। ২০২৫ সালে তা বেড়ে ২২ দশমিক ৯ শতাংশ হবে।
২০২২ সালের জনশুমারি অনুসারে, দেশের সংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি। বিশ্বব্যাংকের হিসাবটি বিবেচনায় আনলে ২০২৫ সাল শেষে অতি গরিব মানুষের সংখ্যা হবে ১ কোটি ৫৮ লাখের মতো। অন্যদিকে জাতীয় দারিদ্র্য হার বা গরিব মানুষের সংখ্যা হবে ৩ কোটি ৯০ লাখের মতো।
মূলত প্রকৃত আয় কমে যাওয়ার কারণেই মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যায় কিংবা গরিব থেকে আরও গরিব বা অতি গরিব হয়। গরিব মানুষ বৃদ্ধির কারণে হিসেবে দুর্বল শ্রমবাজার ও অর্থনৈতিক শ্লথগতির কথাও বলেছে বিশ্বব্যাংক।
দারিদ্র্য কীআন্তর্জাতিক দারিদ্র্যরেখা দিয়ে গরিব মানুষ চিহ্নিত করা হয়। ক্রয়ক্ষমতা সমতা (পিপিপি) অনুসারে, দিনে ২ দশমিক ১৫ ডলার আয় করে প্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবা কেনার সামর্থ্য না থাকলে অতি দরিদ্র হিসেবে ধরা হয়। এটি আন্তর্জাতিক দারিদ্র্যরেখা।
তবে প্রতিটি দেশের জন্য নিজস্ব একটি দারিদ্র্যরেখা ঠিক করা হয়। বাংলাদেশের জাতীয় দারিদ্র্যসীমার মানদণ্ড হলো খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত পণ্য ও সেবা কেনার জন্য একজন মানুষের প্রতি মাসে গড়ে ৩ হাজার ৮২২ টাকা খরচ করার সামর্থ্য যদি না থাকে, তাহলে তিনি দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাবেন বা গরিব হয়ে যাবেন। এর পাশাপাশি দারিদ্র্য পরিমাপে ১১৯ ধরনের বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় আনেন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) কর্মকর্তারা।
প্রকৃত আয় কীভাবে কমেএক বছরের বেশি সময় ধরে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের বেশি আছে। অর্থাৎ পণ্য ও সেবা কিনতে আগের বছরের গড়ে ১০ শতাংশ দাম দিতে হচ্ছে। কিন্তু মূল্যস্ফীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মজুরি বাড়েনি। এতে প্রকৃত আয় কমেছে সাধারণ মানুষের।
প্রকৃত আয় কমার একটি সাধারণ উপায় হলো মূল্যস্ফীতি যে হারে বাড়ে, এর কম হারে মজুরি বাড়লে প্রকৃত আয় কমে যায়। ৩ বছর ৩ মাস বা ৩৯ মাস ধরে বাংলাদেশে মজুরির হার বৃদ্ধি মূল্যস্ফীতির চেয়ে কম। বিবিএসের হিসাবমতো, ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে মূল্যস্ফীতির চেয়ে মজুরির হার বৃদ্ধি বেশি। এরপর ৩৯ মাস ধরে মূল্যস্ফীতির চেয়ে মজুরি বৃদ্ধির হার কম। গত ৩ বছরের বেশি সময় ধরে সাধারণ মানুষের বিশেষ করে গরিব মানুষের প্রকৃত আয় কমেছে।
২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ এবং মজুরি বৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ৯২ শতাংশ।
গত মার্চ মাসে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ আর মজুরি বৃদ্ধির হার ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ।
মূল্যস্ফীতি একধরনের করের মতো। ধরুন, আপনার আপনার প্রতি মাসে আয়ের পুরোটাই সংসার চালাতে খরচ হয়ে যায়। কিন্তু হঠাৎ জিনিসপত্রের দাম বাড়লে এবং সেই অনুযায়ী আপনার আয় না বাড়লে আপনাকে ধারদেনা করে সংসার চালাতে হবে কিংবা খাবার, কাপড়চোপড়, যাতায়াতসহ বিভিন্ন খাতে কাটছাঁট করতে হবে। মূল্যস্ফীতির চেয়ে মজুরি বৃদ্ধি বা আয় বৃদ্ধি কম হলে সাধারণ মানুষের কষ্ট বাড়ে। প্রকৃত আয় কমে যায়। প্রকৃত আয় কমে গেলে সহজেই দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যায়। মৌলিক জীবনধারণের প্রয়োজন মেটাতে তাঁদের কষ্ট হয়।
দুর্বল শ্রমবাজার ও অর্থনৈতিক শ্লথগতিরাজনৈতিক অনিশ্চয়তাসহ নানা কারণে অর্থনীতির শ্লথগতি চলছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। রাজস্ব আদায় পরিস্থিতি, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন, বিনিয়োগ—এসব সূচকে চাঙা ভাব নেই। ৯ মাসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি সাড়ে ৬৫ হাজার কোটি টাকা। অন্যদিকে ছয় বছরের মধ্যে এডিবি বাস্তবায়ন সবচেয়ে কম। উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে টাকা খরচ গতবারের চেয়ে কমেছে। এ ছাড়া বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহও কমেছে। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে বেসরকারি খাতে নতুন বিনিয়োগ কম। এতে কর্মসংস্থানের সুযোগ কমে যায়।
এ ছাড়া দুর্বল শ্রমবাজার আগের মতো বিরাজমান। ৮৬ শতাংশের বেশি কর্মসংস্থান হয় অনানুষ্ঠানিক খাতে। যাঁরা অনানুষ্ঠানিক খাতে দিনমজুরের মতো কাজ করেন, তাঁদের চাকরি বা কাজের নিশ্চয়তার ঝুঁকি বেশি থাকে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ রমব জ র দ র বল দশম ক বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন চাকরি, পদ ১৭১
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় ও এর নিয়ন্ত্রণাধীন বিভিন্ন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে রাজস্ব খাতে জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। ১১ থেকে ২০তম গ্রেডে ছয় ক্যাটাগরির এ নিয়োগে মোট পদ ১৭১টি। এ নিয়োগে চট্টগ্রাম জেলার স্থায়ী বাসিন্দারা (বাংলাদেশের প্রকৃত নাগরিক) আবেদন করতে পারবেন। ৩০ অক্টোবর আবেদন শুরু হয়েছে।
পদের নাম ও সংখ্যা১. পরিসংখ্যানবিদ: ৫টি
বেতন স্কেল: ১০,২০০–২৪,৬৮০ টাকা।
২. অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক: ১৫টি
বেতন স্কেল: ৯,৩০০-২২,৪৯০ টাকা।
৩. স্বাস্থ্য সহকারী: ১৩৪টি
বেতন স্কেল: ৯,৩০০-২২,৪৯০ টাকা।
আরও পড়ুন১০ ব্যাংক ও ১ আর্থিক প্রতিষ্ঠান নেবে ১৮৮০ অফিসার, ফি ২০০৩০ অক্টোবর ২০২৫৪. স্টোরকিপার: ৪টি
বেতন স্কেল: ৯,৩০০-২২,৪৯০ টাকা।
৫. গাড়িচালক: ৩টি
বেতন স্কেল: ৯,৩০০-২২,৪৯০ টাকা।
৬. অফিস সহায়ক: ১০টি
বেতন স্কেল: ৮,২৫০-২০,০১০ টাকা।
আবেদনে শিক্ষাগত যোগ্যতা: প্রতিটি পদের জন্য ভিন্ন ভিন্ন শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রয়োজন। বিস্তারিত তথ্য মিলবে বিজ্ঞপ্তিতে।
আরও পড়ুনমেডিকেল ও ডেন্টালে ভর্তির নীতিমালা প্রকাশ, নম্বর কাটাসহ যে যে পরিবর্তন৩০ অক্টোবর ২০২৫বয়সসীমা: ২৯/১০/২০২৫ তারিখে প্রার্থীর বয়স সর্বনিম্ন ১৮ (আঠারো) বছর হতে হবে। একই সময়ে সর্বোচ্চ ৩২ (বত্রিশ) বছর হতে হবে আবেদনকারী প্রার্থীর। সরকারি বিধিবিধান অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধা কোটা ও শারীরিক প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা শিথিলযোগ্য।
আবেদনের প্রক্রিয়া: আগ্রহী প্রার্থীরা অনলাইনে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। সরাসরি বা ডাকযোগে কোনো আবেদন গ্রহণ করা হবে না।
গুরুত্বপূর্ণ তারিখ ও সময়আবেদন শুরু: ৩০/১০/২০২৫ খ্রি. সকাল ১০ ঘটিকা
আবেদনের শেষ তারিখ: ১৯/১১/২০২৫ খ্রি. বিকেল ৫ ঘটিকা
ফি জমা দেওয়ার শেষ সময়: অনলাইন আবেদন জমাদানের ৭২ (বাহাত্তর) ঘণ্টার মধ্যে।
আরও পড়ুন৪৮তম বিশেষ বিসিএসে আর পদ বাড়ানোর সুযোগ নেই৩০ অক্টোবর ২০২৫আবেদন ফিক্রমিক নং ১ থেকে ৫ পর্যন্ত পদের জন্য: ১১২ টাকা (সার্ভিস চার্জসহ)।
ক্রমিক নং ৬ পদের জন্য: ৫৬ টাকা (সার্ভিস চার্জসহ)।
টেলিটক প্রি-পেইড মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে এই ফি জমা দিতে হবে।
পরীক্ষার তথ্য: প্রবেশপত্র প্রাপ্তির বিষয়টি ওয়েবসাইট ও প্রার্থীর মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে (শুধু যোগ্য প্রার্থীদের) যথাসময়ে জানানো হবে।
আরও পড়ুন‘দই মই’ অর্থনীতি–‘ক্লাউড সিডিং’–পিএস মাহসুদ ও বুরেভেসতনিক কী৩০ অক্টোবর ২০২৫