রোহিত শর্মা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ১২,০০০ রানের মাইলফলকে পৌঁছানো দ্বিতীয় ভারতীয় ক্রিকেটার। বুধবার (২৩ এপ্রিল) সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিপক্ষে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের ম্যাচ চলাকালীন তিনি এই কীর্তি গড়েন।
ঘরের মাঠ রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে হায়দরাবাদ। তবে মুম্বাইয় পেসার বোল্টের তোপে পড়ে স্বাগতিকরা। কিউই পেসার ছিলেন দুর্দান্ত। প্রতিপক্ষের নামকরা টপ অর্ডার ধ্বংস করে দেন ২৬ রানে ৪ উইকেট নিয়ে। হায়দরাবাদ ৮ উইকেটের বিনিময়ে ১৩ রানে ৪ ও ৩৫ রানবে ৫ উইকেট হারানো হায়দরাবাদ ৮ উইকেটের বিনিময়ে ১৪৩ রানের জুটি পার হাইনরেখ ক্লাসেনের কল্যাণে। ৪৪ বলে ৭১ রানের ইনিংস খগেলেন এই প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান।
জবাব দিতে নেমে রোহিতের দাপুটে ৪৬ বলে ৭০ রানের ইনিংসে ভর করে মুম্বাই মাত্র ১৫.
আরো পড়ুন:
লক্ষ্ণৌ মালিককে ব্যাটেই জবাব দিলেন রাহুল
কোহলির ব্যাটে দারুণ জয়ে শীর্ষ তিনে বেঙ্গালুরু
ভারতীয়দের মধ্যে রোহিতের আগে এই অর্জন গড়েছেন কেবল বিরাট কোহলি। বিশ্বব্যাপী রোহিত অষ্টম ব্যাটার হিসেবে ১২,০০০ রান পার করলেন এবং ইনিংসের বিচারে তিনি পঞ্চম দ্রুততম।
টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে কম ইনিংসে ১২,০০০ রান:
ক্রিস গেইল- ৩৪৫ ইনিংস
বিরাট কোহলি- ৩৬০ ইনিংস
ডেভিড ওয়ার্নার- ৩৬৮ ইনিংস
অ্যালেক্স হেলস- ৪৩২ ইনিংস
রোহিত শর্মা- ৪৬৬ ইনিংস
রোহিতের এই অর্জন এসেছে আইপিএল তার ফর্মে ফেরার মুহূর্তে। টুর্নামেন্টের শুরুতে ধীরগতির পারফরম্যান্সের পর তিনি আগের ম্যাচে চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে ৪৫ বলে ৭৬ রান করেছিলেন। গতরাতে হায়দরাবাদের বিপক্ষে করলেন ৭০ রান। গত নয় বছরে এই প্রথম রোহিত আইপিএলে পরপর দুইটি ম্যাচে ফিফটি করলেন।
একই ম্যাচে রোহিত মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের ইতিহাসে কাইরন পোলার্ডকে টপকে সবচেয়ে বেশি ছক্কা মারার রেকর্ডও গড়েছেন।
মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের পেসার ট্রেন্ট বোল্ট রোহিত শর্মার উপর তার আস্থার কথা জানালেন। ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বোল্ট বলেন, “আমি মনে করি পুরো স্কোয়াডে অনেক বিশ্বমানের খেলোয়াড় রয়েছে। রোহিত অবশ্যই সেই তালিকায় উপরের দিকে। তার আলাদা করে পরিচয় দেওয়ার কিছু নেই।”
“আমি নিশ্চিত, প্রত্যেকেই কিছু না কিছু অবদান রাখতে চায়, তবে রোহিত সাম্প্রতিক সময়ে অসাধারণ খেলছেন এবং ঠিক সময়ে ফর্মে ফিরেছেন। তিনি মৌসুমের বাকি অংশে আমাদের জন্য অনেক বড় ভূমিকা পালন করবেন। আমি মনে করি, আপনাকে যেকোনো ভূমিকায় প্রস্তুত থাকতে হবে।”
এই জয় শুধু তাদের নেট রান রেটই বাড়ায়নি, বরং পয়েন্ট টেবিলেও মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে তৃতীয় স্থানে তুলে এনেছে।
ঢাকা/নাভিদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ম ব ই ইন ড য উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।