‘দেশের জন্য গৌরব বয়ে আনা তরুণদের সহায়তা করা হবে’
Published: 27th, April 2025 GMT
দেশের জন্য গৌরব বয়ে আনা তরুণদের সহায়তা করার ঘোষণা দিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
রবিবার (২৭ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারে ২৬তম আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশ দলের বিজয়ীদের সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, “এখন থেকে আইসিটি বিভাগ দেশের কৃতি সন্তানদের নিয়মিত সংবর্ধনা দেবে। পাশাপাশি যারা বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবেন, তাদের লজিস্টিক, কারিগরি এবং ট্রেনিং সহায়তা প্রদান করা হবে। এ সহায়তা আইসিটি বিভাগের পাশাপাশি ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগও প্রদান করবে।”
আরো পড়ুন:
তিন মন্ত্রণালয়ের জন্য উপদেষ্টার জরুরি নির্দেশনা
পোপকে শ্রদ্ধা জানাতে ভ্যাটিকানে প্রধান উপদেষ্টা
তিনি আরো বলেন, “আনুষ্ঠানিকতার বাইরে গত এক বছরে দেশের জন্য গৌরব বয়ে আনা তরুণদের রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সম্মাননা এবং তাদের সব ধরনের লজিস্টিক সহায়তাও প্রদান করা হবে। তাদের উদ্ভাবনায় প্রয়োজনীয় অবকাঠামো এবং বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য ফান্ডিং করা হবে।”
ফয়েজ তৈয়্যব বলেন, “তরুণদের উদ্ভাবনের পরিবেশ বাস্তবায়ন না করলে জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা সফল হবে না। এই বিপ্লবের অর্জন তখনই সম্ভব হবে যখন আমরা আমাদের তরুণ প্রজন্মের জন্য মানসম্পন্ন কর্মসংস্থান এবং দেশে একটি সত্যিকার অর্থে স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে পারব। তরুণ প্রজন্মের সৃজনশীলতার জন্য একটি সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন এবং যেহেতু নতুন স্টার্টআপগুলোর অধিকাংশই প্রযুক্তিনির্ভর, তাই আইসিটি বিভাগের এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।”
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় আইসিটির সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, “প্রযুক্তি যতই দ্রুত এগিয়ে যাক না কেন, আমাদের ক্ষুদে বিজয়ীরা প্রমাণ করেছে যে আমরা পিছিয়ে নেই। আমরা আজ আত্মবিশ্বাসী এবং আগামী আসরে তাদেরকে উদার হস্তে সহযোগিতা করবে আইসিটি বিভাগ।”
২০১৮ সালে শুরু হয়ে ক্রমান্বয়ে আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের সফলতা বেড়েছে। এই বছর দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত ২৬তম আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশ ১০টি পদক লাভ করেছে। আগামী ডিসেম্বর ২০২৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার গোল্ড কোস্টে ২৭তম আসর অনুষ্ঠিত হবে।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের সঙ্গে তাদের কোচ মিশাল ইসলামকেও শুভেচ্ছা জানানো হয়। অনুষ্ঠানে পদকজয়ী আরিয়েত্রী ও আবরার আবীর তাদের অভিজ্ঞতা ও প্রত্যাশার কথা ব্যক্ত করেন। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইসিটি বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/হাসান/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অন ষ ঠ ন র জন য আইস ট
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা খর্ব হলে রাষ্ট্র পরিচালনায় ভারসাম্য নষ্ট হবে: সালাহউদ্দিন
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ থেকে কিছু সময়ের জন্য ওয়াকআউট করার পর আবারও আলোচনায় যোগ দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা খর্ব করা হলে রাষ্ট্র পরিচালনায় ভারসাম্য নষ্ট হবে বলে তিনি সতর্ক করেছেন।
আজ সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার ২০তম দিনে সালাহউদ্দিন আহমদ এ কথা বলেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশে যেন আর কখনো স্বৈরাচার বা ফ্যাসিবাদ জন্ম নিতে না পারে, সে লক্ষ্যে সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগে বিএনপি সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে যাচ্ছে।
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকেই প্রস্তাব ছিল, কেউ যেন ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে না পারেন, সেটি গৃহীত হয়েছে। আমরা আরও প্রস্তাব দিয়েছি, নির্বাচন কমিশন গঠনে একটি স্বাধীন সার্চ কমিটি গঠন করা হোক, যেখানে সরকারি দল, বিরোধী দল ও বিচার বিভাগের প্রতিনিধি থাকবে, সেটিও গ্রহণযোগ্য হয়েছে।’
সালাহউদ্দিন আরও বলেন, ‘আমরাই প্রস্তাব করেছি যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলে পরবর্তী সময়ে সংসদ কোনো সংশোধনী আনলে, তা রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের আগে গণভোটে যেতে হবে। এটি গৃহীত হওয়া মানে, দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় পদক্ষেপ।’
তবে এসব অগ্রগতির মধ্যেও নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিএনপির এই নেতা। বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘নির্বাহী বিভাগের জবাবদিহি যেমন সংসদের কাছে, তেমনি জনগণের কাছেও রয়েছে। কিন্তু যদি কর্তৃত্ব না থাকে, কেবল দায়িত্ব আর জবাবদিহি থাকে, তাহলে তা কার্যকর রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য যথেষ্ট নয়।’
সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগে নির্বাহী বিভাগের হাত–পা বাঁধা হলে তা ভবিষ্যতের জন্য বাধা সৃষ্টি করতে পারে বলেও মন্তব্য করেন সালাহউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘জনগণের প্রত্যাশা পূরণে নির্বাহী বিভাগকে শক্তিশালী হতে হবে, দুর্বল নয়।’
বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা গঠনমূলক লক্ষ্য নিয়ে সংলাপে অংশ নিচ্ছে। তবে যেখানে মৌলিক দ্বিমত রয়েছে, সেখানে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকা বা মতপার্থক্য প্রকাশ করাও গণতন্ত্রের ভাষা।
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, ‘সব বিষয়ে ঐকমত্য হবে, এমন দাবি কেউ করেননি। দ্বিমত থাকবে, ভিন্নমত থাকবে, আর সেগুলোর মধ্য দিয়েই তো গণতন্ত্রের সংগ্রাম এগিয়ে যায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি না যে নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে কাউকে ঐকমত্যে বাধ্য করা উচিত। ঐকমত্যের অর্থই হচ্ছে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে পথচলা। বিএনপি অংশ না নিলে কীভাবে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হবে, সেটি নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায়।’
বক্তব্য শেষে সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, সংলাপের পরবর্তী পর্যায়ে বিএনপি অংশ নেবে এবং ইতিবাচক আলোচনার জন্য প্রস্তুত থাকবে।
আরও পড়ুনঐকমত্য কমিশনের বৈঠক: ফায়ার অ্যালার্ম বেজে ওঠায় হুড়োহুড়ি করে বের হলেন সবাই৫৪ মিনিট আগেবিএনপির ওয়াকআউটকমিশনের প্রস্তাবিত সরকারি কর্ম কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং ন্যায়পাল নিয়োগের বিধান আলোচনায় অংশ নেয়নি বিএনপি। বেলা সাড়ে ১১টার পর বিষয়টি আলোচনার জন্য উপস্থাপন করেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, তাঁরা আলোচনায় অংশ নেবেন না।
পরে আলী রীয়াজ বলেন, বিএনপির পক্ষে বলা হয়েছে, তারা আলোচনায় থাকবে না। একটি রাজনৈতিক দল আলোচনায় অংশ না নিলে আলোচনা করা যাবে না, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত দিতে পারি না।
আজ আলোচনায় অংশ নিয়েছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), গণসংহতি আন্দোলনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দল।
আলোচনায় সভাপতিত্ব করছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত আছেন কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, এমদাদুল হক, সফর রাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান ও আইয়ুব মিয়া।
আরও পড়ুনজাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক থেকে বিএনপির ওয়াক আউট, পরে যোগদান২ ঘণ্টা আগে