ইউক্রেন যুদ্ধে সেনা পাঠানোর কথা স্বীকার করল উত্তর কোরিয়া
Published: 28th, April 2025 GMT
উত্তর কোরিয়া প্রথমবারের মতো নিশ্চিত করেছে যে, দেশটি ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার হয়ে লড়াই করার জন্য তাদের সেনা পাঠিয়েছে। খবর রয়টার্সের।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ দেশটির নেতা কিমকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, “ইউক্রেনীয় নব্য-নাৎসি দখলদারদের নির্মূল ও নিশ্চিহ্ন করার জন্য এবং রাশিয়ান সশস্ত্র বাহিনীর সহযোগিতায় কুরস্ক অঞ্চল মুক্ত করার জন্য সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছে।”
কিম বলেছেন, “যারা ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করেছিলেন তারা সকলেই বীর এবং মাতৃভূমির সম্মানের প্রতিনিধি।”
আরো পড়ুন:
ক্রিমিয়া ছাড়তে নারাজ ইউক্রেন, জেলেনস্কির কড়া সমালোচনায় ট্রাম্প
ইউক্রেনে শ্রমিকবাহী বাসে রাশিয়ার ড্রোন হামলা, নিহত ৯
কিম আরো বলেছেন, “ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যারা যুদ্ধ করেছেন তাদের সম্মান জানাতে রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে শিগগিরই একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হবে।”
কেসিএনএ জানিয়েছে, ‘উত্তর কোরিয়া রাশিয়ান ফেডারেশনের মতো শক্তিশালী রাষ্ট্রের সঙ্গে জোট বাঁধাকে সম্মানের বিষয় বলে মনে করে।’
রাশিয়ার চিফ অব স্টাফ ভ্যালেরি গেরাসিমভ ‘উত্তর কোরিয়ার সৈন্যদের বীরত্বের’ প্রশংসা করার পর উত্তর কোরিয়ার দিক থেকে এমন প্রতিক্রিয়া এলো।
মস্কোও এই প্রথম প্রকাশ্যে উত্তর কোরিয়ার সেনাদের অংশগ্রহণ স্বীকার করলো।
গেরাসিমভ জানান, রাশিয়া কুরস্ক অঞ্চলের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করেছে। তবে ইউক্রেন এটি অস্বীকার করেছে।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং কিম গত বছরের জুনে একটি বিস্তৃত কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এতে যুদ্ধের ক্ষেত্রে উভয় দেশ একে অপরের সামরিক সহায়তায় এগিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দেয়।
ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা এই বছরের শুরুতে বলেছেন, প্রায় ১৪ হাজার উত্তর কোরিয়ানকে তাদের বাহিনীর বিরুদ্ধে মোতায়েন করা হয়েছিল।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন ইউক র ন য র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’
ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।
হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।
আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’
গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’
আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই।