জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান চলাকালে সাভারের আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় নিহতদের মরদেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়। মরদেহগুলো ভ্যানে স্তূপ করে আগুন দেওয়ার আগে একটি ভিডিও পাওয়া গেছে। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ ঘটনার নতুন আরেকটি ভিডিও পাওয়া গেছে বলে সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে জানিয়েছেন প্রসিকিউশন বিভাগ। পাশাপাশি মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তদন্ত প্রতিবেদনে ভিডিও যাচাই-বাছাইয়ের জন্য আরও এক মাস সময় চাওয়া হয়। 

আবেদনের ওপর শুনানিতে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, এই মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে। তবে এই হত্যাকাণ্ডের একটি নতুন ভিডিও হাতে পেয়েছে তদন্ত সংস্থা। জড়িত দুজনকে শনাক্ত করা গেছে, বাকীদের শনাক্তের কাজ চলছে। তাই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আরও এক মাস সময় প্রয়োজন। 

শুনানি শেষে বিচারপতি মো.

গোলাম মূর্তজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল আজ আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ২৫ মে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ঠিক করেন।

পরে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ভিডিওটি যাচাই-বাছাই শেষে ২৫ মে ওই বিষয়ে ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। তিনি বলেন, তদন্ত পর্যায়ে আমরা একটা ভিডিও উদ্ধার করেছি। সেখানে কারা কিভাবে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে তা দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘তদন্ত একটা চলমান প্রক্রিয়া। তদন্ত পর্যায়ে নতুন কোনো তথ্য-উপাত্ত আসলে এটাকে অবহেলা করার সুযোগ নাই। বিচার বিলম্বিত নয়, পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য এবং ন্যায় বিচারের স্বার্থে এই সময় নেওয়া হয়েছে।

এ মামলার আসামি হিসেবে সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহিদুল ইসলাম, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহিল কাফী, গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাবেক পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন, সাবেক উপপরিদর্শক মালেক ও সাবেক কনস্টেবল মুকুল চোকদারকে আজ কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

এ দিন জুলাই-আগস্টের ঘটনায় যাত্রাবাড়ী, রামপুরার গণহত্যাসহ তিনটি মামলার শুনানি হয়। এসব মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসানসহ ১৩ আসামিকেও হাজির করা হয় ট্রাইব্যুনালে। 

গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের দিনে গত বছরের ৫ আগস্ট আশুলিয়া বাইপাইল এলাকায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনায় বেশ কয়েকজন নিহত হন। পরে ঘটনাটির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে পুলিশের ভেস্ট ও মাথায় হেলমেট পরা এক ব্যক্তি আরেক জনের সহায়তায় একটি ভ্যানে একজন যুবকের মরদেহ তুলতে দেখা যায়। এবার তদন্তের শেষ মুহুর্তে ওই ঘটনার দ্বিতীয় ভিডিও পাওয়ার দাবি করলেন তদন্ত কর্মকর্তারা।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: তদন ত প র জন য ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

লন্ডনে ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠককে স্বাগত জানাল জেএসডি

লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের আলোচনা ও ঐকমত্যের সূচনাকে স্বাগত জানিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি)। দলটি বলেছে, আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, জনগণ শুধু কথায় নয়, বাস্তবে সংস্কার ও বিচারের দৃশ্যমান অগ্রগতির পদক্ষেপ দেখতে চায়।

শুক্রবার জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।

তারা বলেন, এই উচ্চপর্যায়ের সংলাপ দেশে রাজনৈতিক সমঝোতা ও জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানের কাঙ্ক্ষিত অভিপ্রায় অনুযায়ী রাষ্ট্র সংস্কার, শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর এবং গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠার পথে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, অধ্যাপক ইউনূস এবং তারেক রহমানের বৈঠক ও বিবৃতিতে আগামী বছরের পবিত্র রমজানের আগেই একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ এবং তার পূর্বশর্ত হিসেবে কাঙ্ক্ষিত সংস্কার ও ফ্যাসিস্ট সরকারের বিচারের প্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান অগ্রগতি অর্জনের ঘোষিত প্রত্যয়ে রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, গণমানুষের রক্তস্নাত গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম দাবি- গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য কাঠামোগত মৌলিক সংস্কার এবং গণহত্যাকারী ফ্যাসিবাদী শক্তির বিচারের ব্যবস্থা। এই বিষয় দুটির দৃশ্যমান অগ্রগতিই কেবল একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ভিত্তি রচনা করতে পারে।

রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি সমাজের শ্রমজীবী, কর্মজীবী ও পেশাজীবীদের মতামত, আকাঙ্ক্ষা ও অংশগ্রহণে রাষ্ট্রীয় রাজনীতির মৌলিক সংস্কারের লক্ষ্যে দ্রুত ‘জাতীয় সনদ’ প্রণয়নের আহ্বান জানায় জেএসডি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রংপুরে আবু সাঈদ হত্যা: এক মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ ট্রাইব্যুনালের
  • গণঅভ্যুত্থানে আহত সামিউলের দিন কাটছে অনিশ্চয়তায়
  • লন্ডনে ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠককে স্বাগত জানাল জেএসডি