বকেয়া পরিশোধ ও চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সব গেটে তালা দিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন কোভিড-১৯ প্রকল্পের অধীনে নিয়োগ পাওয়া স্বাস্থ্যকর্মীরা।

মঙ্গলবার বিকেলে সাড়ে তিনটায় দিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সব গেটে তালা লাগিয়ে দেয় স্বাস্থ্যকর্মীরা। এতে অধিদপ্তরের দুই শতাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ভবনের ভেতরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। কেউ বের হতে পারছেন না।

আন্দোলনকারী ও কর্মকর্তারা জানান, বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আন্দলনরত কয়েকশ স্বাস্থ্যকর্মী অধিদপ্তরের গেটে তালা লাগিয়ে দেন।

আন্দোলনরত স্বাস্থ্যকর্মী মো.

মেহেদী হাসান বলেন, ‘আমরা জানুয়ারি থেকে বেতন পাচ্ছি না। এছাড়াও, চলতি বছরের জুনে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে। তাই আমরা চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছি।’
 
‘গত রোববার থেকে আমরা অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি নিয়েছি। সোমবার থেকে অনশন শুরু করেছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো আশ্বাস না পেয়ে আজ গেটে তালা দিয়েছি।’, বলেন তিনি। 

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর বলেন, তাদের দাবি অযৌক্তিক। প্রকল্পের চাকরি অস্থায়ী। এটা কোনো সরকার স্থায়ী করে না। তাদের অযৌক্তিক আন্দোলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে প্রায় দু শতাধিক কর্মকর্তা কর্মচারী অবরুদ্ধ রয়েছে। বের হতে পাচ্ছে না।

২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারির সময় স্বাস্থ্যসেবা, বিশেষ করে কোভিড পরীক্ষার জন্য সরকার ৩৯৩ জন স্বাস্থ্যকর্মীকে নিয়োগ দিয়েছিল সরকার। কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যান্ডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস (ইআরপিপি) প্রকল্পের অধীনে নিয়োগ পেয়েছিলেন তারা। পরবর্তীতে, তাদের ইআরপিপি প্রকল্পের অধীনে স্থানান্তরিত করা হয় এবং মেডিকেল অফিসার, নার্স এবং টেকনোলজিস্টসহ আরও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করা হয়। এতে মোট কর্মীর সংখ্যা ১,১৫৪ জনে উন্নীত হয়। বর্তমানে, প্রকল্পের অধীনে ১,০০৪ জন কাজ করছেন।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ব স থ যকর ম কর মকর ত

এছাড়াও পড়ুন:

পাল্টাপাল্টি হামলার তীব্রতা বাড়ল

ইরান ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলা ঘিরে আরও অশান্ত হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্য। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হামলার তীব্রতা বাড়াচ্ছে দুই দেশ। ইসরায়েলে গত শনিবার রাতভর ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। একই রাতে ইরানের গ্যাসক্ষেত্র ও তেল শোধনাগারে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এ হামলায় ইরানের কতজন নিহত হয়েছে, তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি।

গতকাল রোববার ছিল দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হামলার তৃতীয় দিন। শনিবার রাতের পর রোববার দিনের বেলায়ও পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল ও ইরান। এদিন ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা জানিয়েছে ইয়েমেনের সশস্ত্র

গোষ্ঠী হুতি। চলমান সংঘাতে এই প্রথম ইরানপন্থী কোনো গোষ্ঠী যোগ দিল। এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশকে শান্ত করার জন্য প্রচেষ্টা শুরু করেছে বিভিন্ন দেশ।

গতকাল রাত একটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছিল। এ রাতেও তেহরানের নিয়াভারান, ভালিয়াসর ও হাফতে তির স্কয়ার এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। ইরানের পূর্বাঞ্চলে মাশহাদ বিমানবন্দরে একটি ‘রিফুয়েলিং’ উড়োজাহাজে আঘাত হানার কথা জানায় ইসরায়েলি বাহিনী। এই উড়োজাহাজগুলো আকাশে থাকা অবস্থায় অন্য উড়োজাহাজে জ্বালানি সরবরাহ করতে সক্ষম। ইরান থেকেও ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার খবর পাওয়া গেছে।

ইসরায়েলে ব্যাপক হামলা ইরানের

ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি ঠেকানোর কথা বলে গত বৃহস্পতিবার রাতে দেশটিতে প্রথমে হামলা চালায় ইসরায়েল। ওই রাতে ইসরায়েলের দুই শতাধিক যুদ্ধবিমান ইরানের ‘পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র’ স্থাপনায় আঘাত হানে। শুক্র ও শনিবারও ইরানে হামলা চলে। পাল্টা জবাব দিচ্ছে তেহরানও। তবে ইসরায়েলে শনিবার রাতভর ইরান যে হামলা চালিয়েছে, তা ছিল সবচেয়ে ব্যাপক।

ইসরায়েলে শনিবার প্রথম দফায় ইরানের হামলা শুরু হয় রাত ১১টার পরপর। এ সময় ইসরায়েলের জেরুজালেম ও হাইফা শহরে বেজে ওঠে সাইরেন। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাইফায় অবস্থিত তেল শোধনাগার। পরে রাত আড়াইটার দিকে দ্বিতীয় দফায় হামলা শুরু করে ইরান। তখন তেল আবিব ও জেরুজালেমে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, শনিবার রাতে দুই দফায় ৭৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। প্রথম দফায় ছোড়া হয় ৪০টি। এতে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের তামরা শহরে চারজন নিহত হন। দ্বিতীয় দফায় ছোড়া হয় ৩৫টি ক্ষেপণাস্ত্র। এর একটি আঘাত হানে তেল আবিবের কাছে বাত ইয়াম এলাকায়। এতে অন্তত ছয়জন নিহত ও প্রায় ২০০ জন আহত হন। এ ছাড়া রেহভোত শহরে আহত হয়েছেন ৪০ জন।

ইসরায়েলি হামলায় জ্বলছে ইরানের শাহরান তেলের ডিপো। গতকাল দেশটির রাজধানী তেহরানের কাছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ