ভারতের সম্ভাব্য হামলা মোকাবিলার প্রস্তুতি নিচ্ছে পাকিস্তান। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছেন, পাকিস্তান যে কোনো কিছুর জন্য তৈরি; ভারত চেষ্টা করে দেখতে পারে। অন্যদিকে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভাপতিত্বে নয়াদিল্লিতে তাঁর বাসভবনে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দেড় ঘণ্টা ধরে ওই বৈঠক চলে। বৈঠকে মোদি পেহেলগাম হামলার জবাবে অভিযান পরিচালনায় প্রতিরক্ষা বাহিনীকে ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে তারা হামলার ধরন, লক্ষ্য ও সময় নির্ধারণের ক্ষমতাও পেয়েছে। 

সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি অনলাইন এ খবর জানায়। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে এটি ছিল গত সাত দিনের মধ্যে এ-সংক্রান্ত দ্বিতীয় বৈঠক। পেহেলগাম হামলা নিয়ে আলোচনা করতে বৈঠকটির আয়োজন করা হয়েছিল। এতে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল এবং চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহান উপস্থিত ছিলেন। 

বৈঠকে ভারত আর কী কী পদক্ষেপ নিতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর আগে ভারত সিন্ধুর পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিতসহ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়। পাকিস্তানও ভারতের বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধ রাখাসহ পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছে।

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছেন, ভারত যে কোনো আগ্রাসী পদক্ষেপ নিলে তার জবাব দিতে প্রস্তুত আছে তাঁর দেশ। সোমবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করেছি। কারণ, এখন এটি (সম্ভাব্য হামলা) অত্যাসন্ন হয়ে উঠেছে। তাই এমন পরিস্থিতিতে কিছু কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

চলমান উত্তেজনার মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলওসি) চার দিন ধরে গোলাগুলি চলছে। গত সোমবার রাতেও দু’পক্ষের মধ্যে এ গোলাগুলি হয়। দুই দেশ একে অপরের বিরুদ্ধে উস্কানির অভিযোগ তুলছে। এরই মধ্যে উভয় দেশ সীমান্তে সেনা মোতায়েন বাড়িয়েছে।

এ অবস্থায় সীমান্তে কাশ্মীরের লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেকে বাঙ্কার প্রস্তুত করে তাতে লুকিয়ে থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ঝুঁকি এড়াতে কাশ্মীরের ৮৭টি পর্যটন কেন্দ্রের মধ্যে ৪৮টি বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। মঙ্গলবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য এগুলো বন্ধ থাকছে।

দি এক্সপ্রেস ট্রিবিউন অনলাইন জানায়, সীমান্তে পাকিস্তান অংশে আজাদ কাশ্মীরে মঙ্গলবার নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর আকাশসীমা লঙ্ঘনের কারণে ভারতের একটি কোয়াডকপ্টার (ড্রোন) গুলি করে ভূপাতিত করার দাবি করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। ভিম্বার জেলার মানাওয়ার সেক্টরে ওই কোয়াডকপ্টার ভূপাতিত করা হয়। পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের দাবি, কোয়াডকপ্টারটি সীমান্তের ওপার থেকে নজরদারি চালানোর চেষ্টা করছিল। তখনই পাকিস্তানি সেনারা দ্রুত সেটি গুলি করে নামিয়ে আনে।

গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীর হামলায় ২৬ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হন। 

ভারতে মুসলিমবিদ্বেষী গান
পেহেলগাম হামলাকে কেন্দ্র করে ভারতে মুসলিমবিদ্বেষ বেড়েছে। মঙ্গলবার আলজাজিরার এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতীয় ইউটিউবে মুসলিমবিদ্বেষী গান ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, যা আবার দ্রুত ভাইরালও হচ্ছে। এ ছাড়া একই ধরনের আরও কয়েকটি গান সামাজিক মাধ্যমে রয়েছে। এগুলোর কথা হিন্দুত্ববাদী ও মুসলিম বিদ্বেষে পূর্ণ। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপিও একটি হিন্দুত্ববাদী দল। 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পদক ষ প ন প রস ত ত

এছাড়াও পড়ুন:

আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য

এশিয়া কাপে আজকের রাত যেন এক নাটকীয় অধ্যায়। ‘বি’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে আবুধাবির মাঠে মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান। বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হওয়া এই লড়াই কেবল দুই দলের নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের ভাগ্যও। কোটি টাইগার সমর্থক তাই আজ তাকিয়ে থাকবে টিভি পর্দায়। কারণ, এই ম্যাচেই নির্ধারিত হবে, বাংলাদেশ কি সুপার ফোরে উড়াল দেবে, নাকি গ্রুপ পর্বেই শেষ হবে স্বপ্নযাত্রা।

গ্রুপের সমীকরণ এখন টানটান নাটকের মতো। তিন ম্যাচে পূর্ণ ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে শ্রীলঙ্কা। সমান ৪ পয়েন্ট থাকলেও রান রেটে পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের ঝুলিতে আছে ২ পয়েন্ট; এক জয় ও এক হারের ফল। হংকং অবশ্য তিন ম্যাচেই হেরে অনেক আগেই বিদায় নিয়েছে।

আরো পড়ুন:

আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

আরব আমিরাতকে ১৪৭ রানের টার্গেট দিল পাকিস্তান

এখন হিসাবটা এমন—
আফগানিস্তান হেরে গেলে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবেই সুপার ফোরে।
আফগানিস্তান জিতলে সমীকরণ জটিল হবে। তখন শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের পয়েন্ট সমান ৪ হলেও নেট রান রেটে স্পষ্ট এগিয়ে থাকবে আফগানরা (২.১৫০)। শ্রীলঙ্কার রান রেট ১.৫৪৬, আর বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে -০.২৭০-তে।

অর্থাৎ আফগানিস্তান যদি জেতে, তবে বাংলাদেশকে তাকিয়ে থাকতে হবে এক অসম্ভব সমীকরণের দিকে। সেটা হলো- লঙ্কানদের অন্তত ৭০ রানের ব্যবধানে হারতে হবে এবং তা করতে হবে ৫০ বল হাতে রেখে। অন্যথায় রান রেটের খেলায় পিছিয়েই থাকতে হবে টাইগারদের। তবে বৃষ্টি যদি হানা দেয় কিংবা ম্যাচ কোনো কারণে পরিত্যক্ত হয়, তাহলে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা দু’দলই নিশ্চিতভাবেই চলে যাবে সুপার ফোরে।

ম্যাচকে ঘিরে দুই শিবিরেই চাপ-উত্তেজনার আবহ। আফগানিস্তানের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার গুলবাদিন নাইব মনে করেন, চাপটা আসলে শ্রীলঙ্কার ওপরই বেশি, “আমরা এসব টুর্নামেন্ট খেলতে অভ্যস্ত, আমাদের কোনো চাপ নেই। শ্রীলঙ্কা ভালো দল ঠিকই, তবে তারাও চাপে থাকবে। আমার মনে হয় দারুণ একটা ম্যাচ হবে।”

অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার অলরাউন্ডার দাসুন শানাকা বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “প্রতিটি ম্যাচই আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। হ্যাঁ, বাংলাদেশের সমর্থকরা আমাদের জয়ের জন্য অপেক্ষা করছে। আমরাও জয়ের লক্ষ্যেই মাঠে নামব।”

হংকংয়ের বিপক্ষে জিতলেও শ্রীলঙ্কাকে ঘাম ঝরাতে হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা বলছে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়টা সহজ হবে না তাদের জন্যও। শেষ পর্যন্ত কারা হাসবে জয়ের হাসিতে, আর কোন সমীকরণে দাঁড়াবে বাংলাদেশের ভাগ্য; এই প্রশ্নের উত্তরই দেবে আজকের আবুধাবির রাত।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ