বেসরকারি তিনটি টিভি চ্যানেলের তিন সাংবাদিককে অব্যাহতি দেওয়া নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টার সংবাদ সম্মেলনে বিতর্কিত প্রশ্ন করার পরদিন তাদের তিনজনের চাকরিচ্যুত করায় সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনা করা হচ্ছে।

তিন সাংবাদিক হলেন– এটিএন বাংলার বিশেষ প্রতিনিধি ফজলে রাব্বি, চ্যানেল আইয়ের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রফিকুল বাসার ও দীপ্ত টিভির জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মিজানুর রহমান (রহমান মিজান)।

ফজলে রাব্বিকে চাকরি থেকে বরখাস্ত সংক্রান্ত চিঠিতে এটিএন বাংলা জানিয়েছে, যথাযথ পেশাগত দায়িত্ব পালন না করায় মঙ্গলবার থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। দীপ্ত টিভির মিজানুর রহমানের বরখাস্ত সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘আপনাকে তাৎক্ষণিকভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হলো।’

চ্যানেল আই জানিয়েছে, সংস্কৃতি উপদেষ্টার সংবাদ সম্মেলনে পেশাদারিত্ব প্রদর্শন না করার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট রিপোর্টারের বিষয়ে চ্যানেল আই কর্তৃপক্ষের তদন্ত শুরু ও দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদান করেছে। 

এ ছাড়া মঙ্গলবার দুপুরে দীপ্ত টিভির এক স্ক্রলে বলা হয়– ‘অনিবার্য কারণবশত দীপ্ত টিভির সকল সংবাদ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হলো।’ 

গতকাল রাত সাড়ে ৯টায় দীপ্ত টিভির জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রুবায়েত হাসান সমকালকে বলেন, আমাদের সমস্যাটা অভ্যন্তরীণ। প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে নিউজ বন্ধ রাখা হয়েছিল। পরে রাত ১১টা থেকে যথারীতি সংবাদ সম্প্রচার শুরু হয়।

এটিএন বাংলার হেড অব নিউজ মনিউর রহমান বলেন, কোনো রিপোর্টারকে বরখাস্ত করার বিষয়ে সরকার বা জুলাই রেভলুশনারি অ্যালায়েন্সের পক্ষ থেকে আমাদের চাপ দেওয়া হয়নি। 

তবে তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা না নিলে ‘মার্চ টু দীপ্ত টিভি, চ্যানেল আই, এটিএন বাংলা’ ঘোষণা দিয়েছিল জুলাই রেভলুশনারি অ্যালায়েন্স। সংগঠনের আহ্বায়ক সালেহ মাহমুদ রায়হান বলেন, যেসব সাংবাদিক গণহত্যার পক্ষ নিয়েও দিব্যি কাজ করে যাচ্ছেন তাদের বিচারের আওতায় আনা উচিত। 

এদিকে সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেছেন, তাঁকে প্রশ্ন করায় চাকরি গেছে– এটি হাস্যকর কথা। মঙ্গলবার রাতে ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, ‘তাদের চাকরির ব্যাপারে আমাদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনো রকম সংশ্লিষ্টতা নাই।’ 

এ নিয়ে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, সরকার দীপ্ত টিভির সংবাদ কার্যক্রম বন্ধ করেনি। এটি দীপ্ত টিভি কর্তৃপক্ষের অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বরখ স ত উপদ ষ ট রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

৪,৫০০ কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতির অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদক

ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ আমদানি চুক্তিতে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতির অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সচিব আহমদ কায়কাউসের বিরুদ্ধে অভিযোগটি অনুসন্ধানের দায়িত্ব পেয়েছেন দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক রেজাউল করিম। গতকাল বুধবার এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন। 

দুদক গত ১৬ এপ্রিল এ নিয়ে আদেশ জারি করলেও গতকালই বিষয়টি জানাজানি হয়। দুদকের আদেশে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) পাশ কাটিয়ে আদানির সঙ্গে চুক্তি করে সরকারের সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকি দিয়েছেন আহমদ কায়কাউস। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে এ চুক্তি-সংক্রান্ত কাগজপত্র খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। এ জন্য চুক্তির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যাবতীয় নথিপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি, বিদ্যুৎ কেনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম, পদবি, বর্তমান ঠিকানা এবং এ নিয়ে কোনো বিভাগীয় তদন্ত করা হয়েছে কিনা– খতিয়ে দেখতে হবে।   

আদানি গ্রুপের কাছ থেকে বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তিটি শুরু থেকেই বিতর্কিত। ২৫ বছরের এ চুক্তির পদে পদে রয়েছে অসমতা। চুক্তিতে এমন অনেক শর্ত রয়েছে, যেগুলোর কারণে ২৫ বছরে প্রায় ৩ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা বাড়তি নিয়ে যাবে আদানি। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ