রাজধানীর গাবতলী গবাদিপশুর হাট ইজারায় ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে দুদকের সহকারী পরিচালক রুবেল হাসানের নেতৃত্বে ডিএনসিসিতে এই অভিযান চালানো হয়।

অভিযানে গিয়ে প্রথমেই দুদকের কর্মকর্তারা ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পরবর্তী সময়ে দুদকের কর্মকর্তারা ইজারার প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ডিএনসিসির বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেন। এ সময় ইজারা-সংক্রান্ত যাবতীয় নথিপত্র দুদকের কর্মকর্তাদের সংগ্রহ করতে দেখা যায়।

দুদকের অভিযানের বিষয়ে ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ সাংবাদিকদের বলেন, সংস্থাটি (দুদক) স্বপ্রণোদিত হয়ে গাবতলী হাটের বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নেমেছে। তাদের এই তদন্তকে তিনি স্বাগত জানান। ইজারা প্রক্রিয়া-সংক্রান্ত যাবতীয় নথিপত্র দুদকের কর্মকর্তাদের কাছে দেওয়া হয়েছে। ডিএনসিসি থেকে তাঁরা নিজেরাও বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছেন। দায়িত্বশীল যেসব কর্মকর্তার কারণে ইজারার প্রক্রিয়ায় নীতিমালার ব্যত্যয় হয়েছে, সেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অভিযান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন দুদকের কর্মকর্তারা। দুদকের সহকারী পরিচালক রুবেল হাসান বলেন, গাবতলী হাটের ইজারা নিয়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। সেসব অভিযোগের অনুসন্ধান করতেই অভিযান চালানো হয়। হাট ইজারাসংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। এগুলো যাচাই করে দেখা হবে।

রুবেল হাসান আরও বলেন, হাট ইজারার প্রক্রিয়ায় কিছু অসংগতি থাকার কারণে ডিএনসিসির প্রশাসক হাটের ইজারা স্থগিত করে দিয়ে খাস আদায় চলমান রেখেছেন। সিটি করপোরেশনের ইজারা নীতিমালা ও সিপিটিইউর (বর্তমান বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথোরিটি—বিপিপিএ) নীতিমালার সঙ্গে কিছুটা ‘কনফ্লিক্ট’ (বিরোধ) আছে। সরকারি ক্রয় সিপিটিইউর (বিপিপিএ) ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। কিন্তু রেভিনিউ (রাজস্ব আয়) ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয় না।

ডিএনসিসিতে অভিযান শেষ করে গাবতলী পশুর হাটে যাচ্ছেন বলে জানান দুদকের কর্মকর্তারা। অভিযানে দুদকের সহকারী পরিচালক আবদুল মালেক ও উপসহকারী পরিচালক এম এম তাহের ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ড এনস স র হ ট ইজ র গ বতল

এছাড়াও পড়ুন:

এনসিপির উদ্বেগ আদালত অবমাননার শামিল: ইশরাক

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদ নিয়ে ইশরাক হোসেনের মামলা, রায় এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তৎপরতা নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উদ্বেগ প্রকাশের বিষয়টিকে আদালত অবমাননার শামিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেন। তিনি বলেছেন, এনসিপি আইনের ব্যাখ্যা এবং আইন সম্পর্কে অজ্ঞ থাকায় ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করছে। একই সঙ্গে বিজ্ঞ আদালতের আদেশকে অবমাননা করেছে।

বুধবার রাতে এক প্রতিবাদলিপিতে ইশরাক হোসেনের পক্ষে তাঁর আইনজীবী রফিকুল ইসলাম এ কথা বলেছেন। এর আগে গতকাল বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছিল এনসিপি।

দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি হওয়া নিয়ে এনসিপির উদ্বেগের বিষয়টি উল্লেখ করে ইশরাক হোসেনের পক্ষে পাঠানো প্রতিবাদলিপিতে তাঁর আইনজীবী বলেন, মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির কারণ নিয়ে এনসিপির বক্তব্য একেবারেই শিশুসুলভ। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় যেকোনো মামলায় দ্রুত নিষ্পত্তির বিজ্ঞ আদালতের একটি সহজাত ক্ষমতা। তা ছাড়া ২০২০ সালে দায়ের করা মামলাটি ২০২৫ সালে নিষ্পত্তি হয়েছে। এটি দীর্ঘ পাঁচ বছরের অধিক সময় অতিক্রান্ত হয়েছে, যা মোটেও সংক্ষিপ্ত সময় নয়; বরং মোকদ্দমাটি আরও আগেই নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন ছিল।

নির্বাচনী মামলার নিষ্পত্তি সংক্ষিপ্ত সময়ে হওয়া উচিত উল্লেখ করে প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, এনসিপির এ জাতীয় বক্তব্য আদালত অবমাননার শামিল। এ ছাড়া এ-সংক্রান্ত যে বক্তব্য দিয়েছে, তার সম্পূর্ণ আইনি অজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ। মামলার তদবিরকারক বাদীর ইচ্ছা অনুযায়ী যে কেউ হতে পারে বিধায় বিজ্ঞ আদালত হলফনামা গ্রহণ করেছেন, যা সম্পূর্ণ আইন মেনেই করা হয়েছে। এ ছাড়া আদালত কোনো প্রকার বিচার-বিশ্লেষণ করেননি বলে যে বক্তব্য এনসিপি দিয়েছে, তা এককথায় তাদের জ্ঞানের স্বল্পতারই বহিঃপ্রকাশ এবং আদালত অবমাননার শামিল।

প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়, ‘আদালত যথাযথ আইন মেনেই রায় প্রদান করেন। এ ক্ষেত্রে কেউ যদি ন্যায়বিচার হয়নি বলে মনে করে, তাহলে উচ্চ আদালতে আপিল করার সুযোগ আছে এবং তার বক্তব্য ওই উচ্চ আদালতে রাখারও সুযোগ আছে। এভাবে প্রেসনোট দিয়ে বক্তব্য প্রদান দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করা ও বিজ্ঞ আদালতকে অবমাননা ছাড়া কিছুই নয়।’

২০২০ সালে অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ফল বাতিল করে সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে বিএনপি নেতার ইশরাক হোসেনকে গত ২৭ মার্চ মেয়র ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন আদালত। এর এক মাস পর আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গেজেট প্রকাশের পর এটি বর্তমানে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এই মন্ত্রণালয় থেকে শপথ গ্রহণের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা। তবে কবে নাগাদ শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হবে, সে বিষয়টি নিয়ে এখন ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।

নির্বাচনের হিসাব অনুযায়ী আগামী ১৫ মে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ