সূর্যবংশীর প্রসঙ্গ উঠতেই বোল্ট বললেন, ‘আমি গেইল, ডি ভিলিয়ার্সকেও বল করেছি’
Published: 1st, May 2025 GMT
এই বয়সে এত বড় মঞ্চে খেলতে নেমে যাঁর ভয় পাওয়ার কথা, তিনিই নির্ভীক। বরং বোলাররা তাঁর কারণে আতঙ্কে আছেন।
কার কথা বলা হচ্ছে, নিশ্চয় বুঝতে পারছেন! বৈভব সূর্যবংশী—১৪ বছরের এই কিশোর কদিন ধরে বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে আলোচিত নাম।
তুখোড় প্রতিভাবান সূর্যবংশী প্রথমে তোলপাড় তোলেন সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে আইপিএলের নিলামে বিক্রি হয়ে। এরপর তাঁকে ঘিরে আলোচনার ঝড় ওঠে আইপিএল অভিষেকে প্রথম বলেই ছক্কা মারায়। তবে সোমবার রাতে স্বীকৃতি টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান বনে যাওয়ার পর থেকে তাঁর প্রসঙ্গ যেন থামছেই না।
গুজরাট টাইটানসের বিপক্ষে সেদিন ৩৫ বলে বিশ্ব রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরি করে রাজস্থান রয়্যালসকে জিতিয়েছেন সূর্যবংশী। মেরেছেন ১১ ছক্কা ও ৭ চার। শেষ পর্যন্ত আউট হয়েছেন ৩৮ বলে ১০১ রান করে। তাঁর অতিমানবীয় ইনিংসটির কারণেই রাজস্থান এখনো আইপিএল প্লে-অফে খেলার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রেখেছে।
‘মারো অথবা মরো’ পরিস্থিতিতে চলে যাওয়া রাজস্থান আজ খেলতে নামবে আইপিএল ইতিহাসের অন্যতম সফল দল মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের বিপক্ষে। শুরুর দিকে খানিকটা পিছিয়ে থাকলেও টানা পাঁচ জয়ে পয়েন্ট তালিকার তিনে উঠে এসেছে মুম্বাই। দলটির বোলিং আক্রমণেও তারকাদের ছড়াছড়ি—যশপ্রীত বুমরা, ট্রেন্ট বোল্ট, মিচেল স্যান্টনার, হার্দিক পান্ডিয়া।
কিন্তু সূর্যবংশী যে বোলার নন; শুধু বল দেখছেন আর সজোরে ব্যাট চালাচ্ছেন। রাজস্থানের এই কিশোর প্রতিভাকে নিয়ে তাই মুম্বাইয়ের বাড়তি সতর্ক থাকার কথা।
তা সূর্যবংশীকে ঠেকাতে কী পরিকল্পনা করছে মুম্বাই? সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নটা করা হয়েছিল দলটির তারকা পেসার বোল্টকে। তাঁর উত্তর, সূর্যবংশীর মুখোমুখি হতে তিনি প্রস্তুত। অতীতে এমন অনেক বিধ্বংসী ব্যাটসম্যানের উইকেট নিয়েছেন, সেটিও মনে করিয়ে দিয়েছেন।
৩৫ বছর বয়সী বোল্ট বলেছেন, ‘আমি বিশ্বজুড়ে কয়েকজন দুর্দান্ত ব্যাটসম্যানের বিপক্ষে বল করেছি, ক্রিস গেইল, এবি ডি ভিলিয়ার্স.
বিরল প্রতিভা তুলে নিয়ে আসার ব্যাপারটিকে আইপিএলের সৌন্দর্য মনে করেন বোল্ট, ‘সেই রাতে গোটা বিশ্ব তার পারফরম্যান্স দেখেছে। একটা ছোট্ট বালক কীভাবে এমন ইনিংস খেলতে পারে। এটাই এই টুর্নামেন্টের সৌন্দর্য। সবাই সুযোগটাকে দুই হাতে লুফে নিয়ে চায়। আমার মনে হয় সে এটা সুন্দরভাবে করেছে।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘মুক্তবুদ্ধি ও যুক্তির সাধক ছিলেন লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরী’
লেখক, প্রাবন্ধিক ও চিন্তাবিদ মোতাহের হোসেন চৌধুরী সারা জীবন মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তার চর্চা করে গেছেন। প্রকৃত মানবতাবাদী দার্শনিক ছিলেন তিনি। এ কারণে তাঁর লেখা, সৃষ্টিকর্ম ও চিন্তা এখনকার মানুষের জন্যও সমান প্রাসঙ্গিক।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরীর ৬৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণসভায় বক্তারা এ কথা বলেন। লেখকের নিজ জেলা লক্ষ্মীপুরে তাঁকে নিয়ে প্রথম স্মরণসভা ছিল এটি।
রামগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এ স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম রবিন শীষ। প্রধান অতিথি ছিলেন লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার। বক্তব্য দেন প্রবন্ধিক, গবেষক ও শিক্ষক ড. কুদরত-ই-হুদা, যুগান্তরের সাহিত্য সম্পাদক কবি জুননু রাইন, লেখকপুত্র ক্যাপ্টেন সৈয়দ জাহিদ হোসাইন, লক্ষ্মীপুর সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক গাজী গিয়াস উদ্দিন।
জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার তাঁর বক্তব্যে বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন বাংলার একজন উজ্জ্বল প্রাবন্ধিক, মুক্তচিন্তার আলোকবর্তিকা। তাঁর লেখায় যেমন মানবতার বোধ রয়েছে, তেমনি যুক্তি ও প্রগতিশীল চিন্তার শক্ত ভিত্তি রয়েছে। তরুণ প্রজন্মকে তাঁর জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
বাবার স্মৃতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ক্যাপ্টেন সৈয়দ জাহিদ হোসাইন বলেন, ‘আমরা লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। অথচ দুঃখজনক হলো, এত দিন বাবাকে নিয়ে এ জেলায় আলোচনা বা স্মরণসভা হয়নি। তাঁর মতো মহান প্রাবন্ধিকের জীবন ও দর্শন নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা জরুরি।’
জাতীয় শিক্ষাক্রম পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের গবেষক ড. কুদরত-ই-হুদা বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন চিন্তার দিক থেকে ব্যতিক্রমধর্মী এক ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন মুক্তবুদ্ধির সাধক, মানবতাবাদী দার্শনিক ও সাহিত্যপ্রেমী। তাঁর প্রবন্ধ আজও পাঠককে সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পথে চলার প্রেরণা দেয়।
সাহিত্য, দর্শন ও সমাজচিন্তায় মোতাহের হোসেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন বলে জানান কবি জুননু রাইন। তিনি বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরীর লেখনী আজও প্রজন্মকে চিন্তার খোরাক জোগান।
মোতাহের হোসেন চৌধুরী ১ এপ্রিল ১৯০৩ সালে তৎকালীন নোয়াখালী জেলা এবং বর্তমানে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ থানার কাঞ্চনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কাজী আবদুল ওদুদ, আবুল হুসেন, কাজী মোতাহার হোসেন, আবুল ফজল, আবদুল কাদিরের সঙ্গে যৌথভাবে বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন গড়ে তোলেন তিনি। বের করেন ‘শিখা’ নামের পত্রিকা। তাঁর রচিত প্রবন্ধ সংকলন ‘সংস্কৃতি কথা’ পাঠকমহলে সমাদৃত হয়েছে। ১৯৫৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।