ডাকসু নির্বাচন: পঞ্চম দিনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ১৮ জন
Published: 16th, August 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে অংশ নিতে আজ শনিবার পঞ্চম দিনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ১৮ জন। আর হল সংসদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ২৩ জন।
আজ বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনের তৃতীয় তলায় ডাকসুর প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
ব্রিফিংয়ে অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, পঞ্চম দিনে ডাকসুর বিভিন্ন পদে ১৮ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তাঁদের মধ্যে সহসভাপতি (ভিপি) পদে ৪ জন, সম্পাদক পদে ৩ জন এবং সদস্য পদে ১১ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা আরও বলেন, এখন পর্যন্ত ডাকসুতে মোট মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ৬১ জন। তাঁদের মধ্যে ভিপি পদে ১৪ জন, জিএস পদে ১ জন, এজিএস পদে ২ জন, সম্পাদক পদে ২১ জন এবং সদস্য পদে ২৩ জন। এখন পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ১৩ জন।
ডাকসুর বিভিন্ন পদে এখন পর্যন্ত ছয়জন নারী শিক্ষার্থী মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। যাঁদের মধ্যে ভিপি পদে একজন, সহসাধারণ সম্পাদক পদে একজন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে একজন, গবেষণা ও প্রকাশনা পদে একজন এবং দুজন সদস্য পদে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, ‘ছাত্রসংগঠনগুলো নিজেদের মধ্যে আলোচনা বা জোট গঠনের জন্য হয়তো সময় নিচ্ছে। আমরা আশা করছি, শেষ দুই দিনে সবচেয়ে বেশ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ হবে। সেই অনুযায়ী আমাদের প্রস্তুতি আছে।’
নারীদের ভোটকেন্দ্র পরিবর্তনের দাবির বিষয়ে অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, ভোটকেন্দ্র পরিবর্তনের বিষয়ে একটা আবেদন এসেছে। আগামীকাল বিকেলে এ–সংক্রান্ত একটা সভা আছে। সেখানে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে ভোটকেন্দ্রে কোনো জটলা যেন তৈরি না হয়, সে বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। প্রত্যেক শিক্ষার্থী যেন আনন্দমুখর পরিবেশে ভোট দিতে পারে, তা নিশ্চিত করা হবে।
অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন আরও বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে হামলার মামলায় আসামিরা ডাকসু নির্বাচনে প্রার্থী বা ভোটার হতে পারবেন না। ভোটের আগের দিনও খোঁজ পাওয়া গেলে তাঁদের ভোট থেকে বিরত রাখা হবে।
ডাকসুর তফসিল অনুযায়ী, ১২ থেকে ১৮ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১৯ আগস্ট বেলা ৩টা। যাচাই-বাছাই শেষে ২১ আগস্ট চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। প্রতিটি মনোনয়ন ফরমের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০০ টাকা।
ইতিমধ্যে ডাকসু এবং হল সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। খসড়া ভোটার তালিকা থেকে চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় বাদ পড়েছেন ১৫৭ জন।
চূড়ান্ত তালিকায় মোট ভোটার সংখ্যা ৩৯ হাজার ৭৭৫ জন। এর মধ্যে ছাত্র ভোটার ২০ হাজার ৮৭১ জন ও ছাত্রী ভোটার ১৮ হাজার ৯০২ জন।
আরও পড়ুনডাকসু নির্বাচন: চতুর্থ দিনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন একজন২১ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
২০ মিনিটেই মিলল টিসিবির পণ্য, খুশি ক্রেতা
চট্টগ্রাম নগরের ঝাউতলা এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মাহমুদ করিম। স্ত্রী ও তিন ছেলেমেয়ে নিয়ে পাশেই আমবাগান এলাকায় থাকেন। স্বল্প আয়ের সংসার চালাতে হয় হিসাব করে। তাই খবর পেলেই চলে আসেন টিসিবির ট্রাক থেকে পণ্য কিনতে। আজ বৃহস্পতিবার তাঁকে পাওয়া গেল নগরের টাইগারপাস এলাকায়। পণ্য নিয়ে ঘরের দিকে পা বাড়িয়েছেন মাত্র।
মাহমুদ বলেন, প্রায় এক বছর ধরে টিসিবির পণ্য কিনছেন তিনি। ছোট্ট একটি ঝাল নাশতার দোকান তাঁর। এ আয়ে ছেলেমেয়েদের স্কুল–কলেজের বেতন দিয়ে সংসারে টান পড়ে। আগে ধস্তাধস্তি করে পণ্য নিতে হতো। এবার ২০ মিনিট অপেক্ষা করেই পণ্য পেয়েছেন। এগুলো দিয়ে এ মাসে কিছুটা খরচ বেঁচে যাবে তাঁর।
প্রায় দুই মাস বন্ধ থাকার পর চট্টগ্রামে ট্রাকে পণ্য বিক্রি শুরু করেছে সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। গত রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রম শুরু হয়। প্রতিদিন নগরের ২৫টি আলাদা স্থানে ট্রাকে পণ্য বিক্রি করেছে সংস্থাটি। এর বাইরে নগরের ৪১ ওয়ার্ডে পরিবার কার্ডের মাধ্যমেও পণ্য বিক্রি চলছে।
আজ নগরের ৯টি ওয়ার্ডের ২৫টি স্থানে পণ্য বিক্রি করেছে টিসিবি। এর মধ্যে শুলকবহর, লালখান বাজার, বাগমনিরাম, উত্তর আগ্রাবাদ, পূর্ব মাদারবাড়ী, আন্দরকিল্লা, উত্তর মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ডের তিনটি করে স্থানে এবং দেওয়ান বাজার ও বক্সিরহাট ওয়ার্ডের দুটি করে স্থানে পণ্য বিক্রি হয়েছে। পরিবেশকেরা জানিয়েছেন, কোনো স্থানে পণ্য না পেয়ে ক্রেতারা ফিরে যাননি। ফেরত যাওয়া ক্রেতার সংখ্যা সর্বোচ্চ পাঁচ।
টিসিবি সাধারণত দুইভাবে পণ্য বিক্রি করে থাকে। একটি সারা বছর ধরে চলে নগরের ৪১টি ওয়ার্ডে। নগরের প্রায় তিন লাখ পরিবার এ সুবিধা পেয়ে থাকে। নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় গত বছরের ২৪ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরে ২০টি স্থানে ট্রাকের মাধ্যমে পণ্য বিক্রির কার্যক্রম শুরু করে টিসিবি। সবশেষ গত কোরবানির ঈদে বন্ধ হওয়ার পর চলতি আগস্টে আবার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
মূলত যেসব গ্রাহকের কাছে পরিবার কার্ড নেই, তাঁরা সারি বেঁধে ট্রাক থেকে পণ্য সংগ্রহ করেন। পরিবার কার্ডধারীদের ট্রাক থেকে পণ্য কিনতে নিরুৎসাহিত করা হয়। এ মাসের কার্যক্রমে ক্রেতাদের কথা মাথায় রেখে ট্রাকের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে পাঁচটি। এ ছাড়া প্রতি ট্রাকে বরাদ্দও বাড়ানো হয়েছে। প্রতিটি ট্রাক থেকে এখন প্রতিদিন ৫০০ ক্রেতা পণ্য কিনতে পারবেন।
টিসিবি চট্টগ্রামের যুগ্ম পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, নগরে মোট পরিবেশকের সংখ্যা ১৫৯। প্রতিদিনই স্থান বদল করে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। যেসব ওয়ার্ডে জনসংখ্যা বেশি, সেখানে একাধিক ট্রাকে পণ্য বিক্রি হচ্ছে। এবার দামও কমানো হয়েছে, বরাদ্দও বেড়েছে। সুশৃঙ্খলভাবে পণ্য বিক্রি হচ্ছে।
টিসিবির ট্রাকে পণ্য বিক্রির কার্যক্রম থেকে তেল, ডাল ও চিনি কিনতে আগে একজন ক্রেতার খরচ হতো ৫২০ টাকা। মাঝখানে পবিত্র রমজানে খেজুর যোগ হওয়ায় সেটি ছিল ৫৮৮ টাকা। তবে এবারের কার্যক্রমে প্রতিটি পণ্যের দাম কমিয়েছে টিসিবি।
টিসিবি জানিয়েছে, টিসিবির ট্রাক থেকে একজন ভোক্তা সর্বোচ্চ দুই লিটার ভোজ্যতেল, দুই কেজি মসুর ডাল ও এক কেজি চিনি কিনতে পারবেন। টিসিবির ট্রাক সেল কার্যক্রমে এখন ভোজ্যতেল ২৫ টাকা কমে ১১৫ টাকা, ডাল ১০ টাকা কমে ৭০ টাকা ও চিনি ৫ টাকা কমে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ আগের তুলনায় খরচ কমেছে ৭০ টাকা। এখন একজন ক্রেতার ৪৫০ টাকা খরচ হবে। তবে পরিবেশকের দোকান থেকে পরিবার কার্ডের মাধ্যমে কেনা পণ্যের দাম একই থাকছে।
জানতে চাইলে চট্টগ্রামে টিসিবি পরিবেশক সমিতির সভাপতি আবদুস ছবুর বলেন, বরাদ্দ বাড়ানোর কারণে পরিবেশক ও ক্রেতার লাভ হয়েছে। পরিবহন খরচের পর পরিবেশকদের হাতে কিছু লাভ থাকবে। অন্যদিকে আগে অনেক ক্রেতাকে খালি হাতে ফিরতে হতো। এখন সে সংখ্যাও কমেছে।