পুলিশের বিরুদ্ধে যুবদল নেতাকে মাদক মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ
Published: 2nd, May 2025 GMT
গ্রেপ্তার করা হয় পল্লবী থেকে। এজাহারে লেখা হয় দারুস সালামের কথা। মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে দেখা যায়, তিন মাসেও সেখানে যাননি অভিযুক্ত। সিসিটিভি ফুটেজেও ধরা পড়েনি গ্রেপ্তারের দৃশ্য। রাজধানীর দারুস সালাম থানায় এক মাদক মামলায় এমন কারসাজি করেছে পুলিশ।
এ মামলায় ১০ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সদস্য সচিব শান্তনুর হোসেন রুবেলকে ফাঁসানো হয়। গত বছরের ৭ জুলাই গ্রেপ্তার করা হয়। ৩০০ গ্রাম হেরোইন পাওয়া যায় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। রাসায়নিক পরীক্ষায় ধরা পড়ে, সাদা পাউডার।
এদিকে অভিযান-সংশ্লিষ্ট এক পুলিশ সদস্য আগে থেকে হেরোইন সংরক্ষণ করে রুবেলকে ফাঁসানোর পরিকল্পনা করেন। তাঁর সঙ্গে সেই পুলিশ সদস্যের মোবাইল ফোনের কথোপকথন ও হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে এর প্রমাণ রয়েছে। নতুন করে তদন্তের পর সম্প্রতি এ মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ। সম্প্রতি আদালতও এই ‘সাজানো’ মামলা থেকে তাঁকে অব্যাহতি দিয়েছেন। এর পর এ ঘটনায় দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মহাপরিদর্শকের কাছে (আইজিপিস কমপ্লেইন মনিটরিং সেল) লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন রুবেলের ভাই সুমন হোসেন।
সুমন সমকালকে জানান, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে কলেজছাত্র মো.
সুমনের অভিযোগ, নাবিল খানের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে রুবেলকে মাদক মামলায় ফাঁসিয়েছে পুলিশ। এ উদ্দেশ্যে গ্রেপ্তারের দু-তিন মাস আগে রুবেলের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন দারুস সালাম থানার তৎকালীন সহকারী উপপরিদর্শক মোখলেসুর রহমান। তিনি অতুলকে গ্রেপ্তার করে তাঁর নামে হেরোইনের মামলা দেওয়ার কথা জানান। এক পর্যায়ে রুবেলের সঙ্গে দেখা করতে চান মোখলেস। দেখা করতে গেলে তিনিসহ উপপরিদর্শক সুব্রত কুমার দাস, জুয়েল, তুষার ও নাসির পল্লবীর ১১ নম্বর সেকশন থেকে রুবেলকে গ্রেপ্তার করেন। এর আগে রুবেলের সঙ্গে মোখলেসুরের মোবাইল ফোনে কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড পাওয়া গেছে। সেখানে মোখলেসুর বলছেন, ‘অতুলের জন্য ২২০ গ্রাম হেরোইন বরাদ্দ আছে। ২২০ গ্রাম মানে মোটামুটি এক বছর ভেতরে থাকতে হবে।’ যদিও পরে ৩০০ গ্রাম হেরোইন দিয়ে রুবেলকেই ফাঁসানো হয়। তবে এ জন্য হেরোইন যে আগে থেকে সংরক্ষণ করা ছিল, তা এই কথোপকথন থেকে বোঝা যায়। দু’জনের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে এর প্রমাণ পাওয়া যায়।
মাদক মামলার বাদী দারুস সালাম থানার তৎকালীন এসআই সুব্রত কুমার দাস দাবি করেন, রুবেলের কাছে হেরোইন পাওয়া গিয়েছিল। প্রথমবার রাসায়নিক পরীক্ষায় তার প্রমাণ মিলেছে। তবে দ্বিতীয় দফা পরীক্ষায় কেন ভিন্ন প্রতিবেদন এসেছে, তাঁর জানা নেই।
অভিযুক্ত এএসআই মোখলেসুরসহ অভিযান-সংশ্লিষ্ট অন্য পুলিশ সদস্যরা বর্তমানে কোথায় কর্মরত, জানা যায়নি। তাদের বক্তব্যও নেওয়া সম্ভব হয়নি।
সুমনের ভাষ্য, যুবদল করায় রুবেলকে একাধিক রাজনৈতিক মামলাসহ অন্যান্য মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়। তবে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর তিনি সব রাজনৈতিক মামলা থেকে খালাস এবং অন্যান্য মামলায় জামিন পান। তার পরও তিনি যেন কারাগার থেকে বের হতে না পারেন, সে জন্য নাবিল খান পুলিশকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে এখনও ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন। এর ধারাবাহিকতায় দারুস সালাম থানার এসআই আমির সোহেল ও মিরপুর থানার এসআই আতাউল গনি ওসমানী পৃথক মামলায় সন্দিগ্ধ আসামি হিসেবে রুবেলকে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আদালতে আবেদন করেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রুবেল কারাগারে থাকলেও মিরপুর থানার এসআই আব্দুল্লাহ আল মামুন এ-সংক্রান্ত মামলায় সন্দিগ্ধ হিসেবে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন।
এসআই আব্দুল্লাহ আল মামুন দাবি করেন, মামলার বাদী ও সাক্ষীদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তিনি রুবেলকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন জানান। তবে রোববার সেটি নাকচ করে দেন আদালত।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর প ল শ সদস য র ব লক হ র ইন
এছাড়াও পড়ুন:
সড়ক বিভাজকে মোটরসাইকেলের ধাক্কা, কিশোর নিহত
রাজবাড়ীতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক বিভাজকে ধাক্কা দিয়েছে একটি মোটরসাইকেল। এ ঘটনায় মোটরসাইকেলটির আরোহী কিশোর নিহত ও চালক আহত হয়েছেন।
রবিবার (২ নভেম্বর) সকালে রাজবাড়ী ফয়ার সার্ভিস অফিসের সামনে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে। আহলাদিপুর হাইওয়ে থানার এসআই সাজ্জাদ হোসেন মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
সিলেটে বাস-প্রাইভেটকার সংঘর্ষ, বাবা-মেয়ে নিহত
সিলেটে পাথরবাহী ট্রাক্টরচাপায় পর্যটক নিহত, আহত ৫
মারা যাওয়া কিশোরের নাম রিয়াদ আলী শেখ (১৪)। সে সদর উপজেলার দদশি ইউনিয়নের বড়দোয়াল গ্রামের রহমত আলী শেখের ছেলে। আহত রওনক সরকারকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রাজবাড়ী ফায়ার সার্ভিসের সব-স্টেশন কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান বলেন, “দ্রুত গতির মোটরসাইকেলটি আজ সকাল ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক বিভাজকে ধাক্কা দেয়। আমরা ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তাৎক্ষণিক আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই।”
স্থানীয়দের বরাতে আহলাদিপুর হাইওয়ে থানার এসআই সাজ্জাদ হোসেন জানান, রিয়াদ ও রওনক সকালে মোটরসাইকেল যোগে রাজবাড়ী বাজারে যাচ্ছিলেন। ফায়ার সার্ভিস অফিসের সামনে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের বিভাজকে ধাক্কা দেয়। ফলে তারা আহত হন। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তাদের উদ্ধার করে রাজবাড়ী হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসক রিয়াদকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অতিরিক্ত গতির কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
ঢাকা/রবিউল/মাসুদ