জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলার ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিল করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে নাগরিক পার্টির নেতাকর্মীরা। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীদের ধরতে না পারলে কঠোরতম কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

রোববার রাজধানীর বাংলামোটর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড় পাড়ি দিয়ে পুনরায় বাংলামোটরে এসে মিছিল শেষ করেন এনসিপির নেতারা। এনসিপি ঢাকা মহানগর শাখা এ আয়োজন করে।

এ সময় এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব মাহিন সরকার, লুৎফর রহমান, হুমায়রা নূর, জয়নাল আবেদীন শিশির, নিজাম উদ্দীন, এনসিপি নেতা আরমান হোসেন, ভীম্পাল্লী ডেভিড রাজুসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বিক্ষোভকালে এনসিপি নেতারা ‘হাসনাত, হাসনাত’, ‌‘আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে, অ্যাকশন টু অ্যাকশন’, ‌‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘নিষিদ্ধ নিষিদ্ধ করো, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করো’, ‘হাসনাতের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’, ‘জুলাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’, ‘সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে, অ্যাকশন অ্যাকশন’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

বিক্ষোভ মিছিলে মাহিন সরকার বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদের জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। আইন উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দায়ভার হাসনাত আব্দুল্লাহর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারা। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হাসনাত আব্দুল্লাহর উপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করতে হবে, তা না হলে আমরা কঠোরতম কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হব।

তিনি বলেন, আহত অবস্থায়ও তিনি পুলিশ প্রটেকশন পাননি। পরবর্তী জনরোষ ফুঁসে ওঠায় পুলিশ সেখানে এসেছে। আমাদের প্রশ্ন, এত দীর্ঘ সময় কেন? হাসনাত আব্দুল্লাহর নিরাপত্তার যদি এ অবস্থা হয় তাহলে সাধারণ জনগণ কোথায় যাবে? আমরা মনে করি এ হামলায় আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদীরা জড়িত। আমরা ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে আন্দোলনে আমাদের সঙ্গে দেশের মানুষ থাকবে। সাধারণ জনগণ আজকে আওয়ামী লীগের হাতে নিরাপদ নয় এটা আবার প্রমাণ হয়েছে।

এ দিকে হাসনাত আব্দুল্লাহর গাড়িতে হামলার ঘটনা নিয়ে নিন্দা জানিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির। রোববার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, ‘জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপর সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানাচ্ছি। পতিত ফ্যাসিস্টদের বিচারের আওতায় আনতে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতার কারণে জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের জীবন হুমকির মুখে পড়েছে।’

তিনি উল্লেখ করেন, ‘ফ্যাসিস্ট শক্তিকে রাজনৈতিকভাবে ও সামাজিকভাবে মোকাবিলা না করে সব মনোযোগ শুধু নিজস্ব রাজনৈতিক প্রচারণার পেছনে দেওয়ার কারণে জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানকারী জনতা গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী রাজনৈতিক দিশা থেকে ক্রমান্বয়ে বঞ্চিত হচ্ছে।’

নাসির উদ্দিন আরও বলেন, ‘ব্যক্তিগত রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ নয়, বরং গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে সমুন্নত রাখাই আমাদের সব রাজনৈতিক পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত।’

এ ছাড়া হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপর সন্ত্রাসী হামলা ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের মিছিলটি হলপাড়া থেকে রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে শেষ হয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এনস প গণঅভ য ত থ ন র জন ত ক অ য কশন আম দ র আওয় ম সরক র এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

বাঁধন-সাবার ভার্চুয়াল দ্বন্দ্বে যোগ দিলেন অরুণা বিশ্বাস

চব্বিশের ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ঘিরে তৈরি হয় মতপার্থক্য। এ হাওয়া লাগে দেশের শোবিজ অঙ্গনের তারকাদের মাঝেও। নীতিগত বিভাজনের সমাপ্তি এখনো ঘটেনি। অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন, সোহানা সাবার ভার্চুয়াল দ্বন্দ্ব অন্তত সে কথাই বলছে। তাদের এই দ্বন্দ্বে যোগ দিয়েছেন অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস।

‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ সময়ের সঙ্গে রূপ নেয় গণআন্দোলনে। গণঅভুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। এই সময়ে আন্দোলনের পক্ষে জোরালো ভূমিকা পালন করেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। তৎকালীন সরকারের পক্ষে অবস্থান নেন সোহানা সাবা, অরুণা বিশ্বাসসহ অনেক তারকাই। আলোচিত ‘আলো আসবেই’ গ্রুপের সদস্যও সাবা-অরুণা। 

গত কয়েক দিন ধরে গণঅভ্যত্থানে অংশ নেওয়ার ঘটনা ক্রমান্বয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করছেন আজমেরী হক বাঁধন। এ নিয়ে নেটিজেনদের কেউ কেউ তাকে আক্রমণ করে মন্তব্য করছেন। বাঁধনের পোস্টে রিয়া ঘোষ নামে একজন লেখেন, “সারা জীবন ড্রামাবাজি করে সতী সাজতে চেয়েছেন। আপনি আপাদমস্তক একজন ভণ্ড। আপনার পুরো জগৎটা ঘোরে আপনাকে ঘিরেই। কী জীবন আপনার! করুণা লাগে আপনাকে দেখে। কেউ যদি সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ হতেন, তাহলে কলকাতায় গিয়ে ব্যক্তিজীবনের কেচ্ছা গাইতেন না।” 

আরো পড়ুন:

‘বাংলাদেশের বড় ব্যর্থতা জন্মনিয়ন্ত্রণে’

কাঁদতে কাঁদতে টাকা চাইলেও সাড়া মেলেনি, আক্ষেপ ডলি জহুরের

বাঁধনের ফেসবুক ওয়াল থেকে এই মন্তব্যের স্ক্রিনশট সোহানা সাবা তার ফেসবুকে পোস্ট করেন। মূলত, তারপরই সাবা-বাঁধনের ভার্চুয়াল দ্বন্দ্বের সূচনা। সাবা স্ক্রিনশটটি পোস্ট করে লেখেন, “এই কমেন্টটা আপু ডিলিট করে দিয়েছেন। মেবি দিদিটিকে ব্লক করেও দিয়েছেন। ভাগ‍্যক্রমে আমার টাইমলাইনে ভেসে উঠেছিল আর আমি তক্ষনি স্ক্রিনশট নিয়ে রেখেছিলাম।” এরপর সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয় চর্চা। যুক্ত হন অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস। সাবার এ পোস্টে তিনি লেখেন—“ড্রামাবাজি।” 

সোহানা সাবা তার এ পোস্টে বেশ কটি মন্তব্য করেছেন। একটি মন্তব্যে বাঁধনের স্ক্রিনশট শেয়ার করার কারণ ব্যাখ্যা করেন। সোহানা সাবা লেখেন, “প্রথমে ভেবেছিলাম স্ক্রিনশট নিয়ে কিছু পোস্ট করব না। কিন্তু পরে মনে হলো এটা তো পাবলিক পোস্ট, যে কেউ নিতে পারে, শেয়ার করতেও পারে। তাই আমিও করলাম।” 

গতকাল ফেসবুকে বেশ কটি পোস্ট দিয়েছেন আজমেরী হক বাঁধন। সোহানা সাবা স্ক্রিনশট শেয়ার করার পর একটি পোস্টে সহকর্মীদের নিয়ে সমালোচনা করেন বাঁধন। দীর্ঘ এ পোস্টের সারমর্ম হলো—“আমার কিছু সহকর্মী, যাদের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করেছি, মঞ্চে দাঁড়িয়েছি, যাদের বিশ্বাস করতাম, তারা ইন্টারনেটে আমার ওপর নির্মম ও অপমানজনক আক্রমণ চালাচ্ছেন। তাদের কথাগুলো ছিল অমানবিক, উদ্দেশ্য ছিল আমাকে ছোট করা। তারা শুধু আমাকে নয়, আমি যা কিছুতে বিশ্বাস করি, সেগুলোকেও অসম্মান করছে। এই তালিকায় জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্তরাও আছেন।” 

বাঁধন তার বক্তব্যে কোনো শিল্পীর নাম উল্লেখ করেননি। তবে দুইয়ে দুইয়ে চার মেলাচ্ছেন নেটিজেনরা। তাদের দাবি—সোহানা সাবাকে উদ্দেশ্য করেই পোস্টটি দিয়েছেন বাঁধন। 

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফ্যাসিস্ট শাসকের প্রধান সহায়ক শক্তি ছিল বিচার বিভাগ: মাহমুদুর রহমান
  • ৫ আগস্ট বিজয় মিছিল সফল করতে ইসলামী আন্দোলনের যৌথ সভা 
  • ছাত্র-জনতার প্রত্যাশা পূরণে ছাত্রদলের নয় দফা প্রতিশ্রুতি
  • ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উদযাপন
  • সমাবেশস্থলে জড়ো হচ্ছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা, যান চলাচল করছে বিকল
  • ১৬ বছরের আন্দোলনের ফসল জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান: আমানউল্লাহ 
  • জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী নির্বাচন হতে হবে: নাহিদ
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সকল শক্তির ঐক্য অটুট রাখতে হবে:  সংস্কৃতি উপদেষ্টা
  • ঢাকাবাসীর কাছে ছাত্রদলের অগ্রীম দুঃখ প্রকাশ
  • বাঁধন-সাবার ভার্চুয়াল দ্বন্দ্বে যোগ দিলেন অরুণা বিশ্বাস