২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীদের গ্রেপ্তারের আলটিমেটাম এনসিপির
Published: 4th, May 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলার ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিল করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে নাগরিক পার্টির নেতাকর্মীরা। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীদের ধরতে না পারলে কঠোরতম কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
রোববার রাজধানীর বাংলামোটর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড় পাড়ি দিয়ে পুনরায় বাংলামোটরে এসে মিছিল শেষ করেন এনসিপির নেতারা। এনসিপি ঢাকা মহানগর শাখা এ আয়োজন করে।
এ সময় এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব মাহিন সরকার, লুৎফর রহমান, হুমায়রা নূর, জয়নাল আবেদীন শিশির, নিজাম উদ্দীন, এনসিপি নেতা আরমান হোসেন, ভীম্পাল্লী ডেভিড রাজুসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বিক্ষোভকালে এনসিপি নেতারা ‘হাসনাত, হাসনাত’, ‘আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে, অ্যাকশন টু অ্যাকশন’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘নিষিদ্ধ নিষিদ্ধ করো, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করো’, ‘হাসনাতের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’, ‘জুলাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’, ‘সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে, অ্যাকশন অ্যাকশন’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
বিক্ষোভ মিছিলে মাহিন সরকার বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদের জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। আইন উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দায়ভার হাসনাত আব্দুল্লাহর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারা। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হাসনাত আব্দুল্লাহর উপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করতে হবে, তা না হলে আমরা কঠোরতম কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হব।
তিনি বলেন, আহত অবস্থায়ও তিনি পুলিশ প্রটেকশন পাননি। পরবর্তী জনরোষ ফুঁসে ওঠায় পুলিশ সেখানে এসেছে। আমাদের প্রশ্ন, এত দীর্ঘ সময় কেন? হাসনাত আব্দুল্লাহর নিরাপত্তার যদি এ অবস্থা হয় তাহলে সাধারণ জনগণ কোথায় যাবে? আমরা মনে করি এ হামলায় আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদীরা জড়িত। আমরা ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে আন্দোলনে আমাদের সঙ্গে দেশের মানুষ থাকবে। সাধারণ জনগণ আজকে আওয়ামী লীগের হাতে নিরাপদ নয় এটা আবার প্রমাণ হয়েছে।
এ দিকে হাসনাত আব্দুল্লাহর গাড়িতে হামলার ঘটনা নিয়ে নিন্দা জানিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির। রোববার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, ‘জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপর সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানাচ্ছি। পতিত ফ্যাসিস্টদের বিচারের আওতায় আনতে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতার কারণে জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের জীবন হুমকির মুখে পড়েছে।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘ফ্যাসিস্ট শক্তিকে রাজনৈতিকভাবে ও সামাজিকভাবে মোকাবিলা না করে সব মনোযোগ শুধু নিজস্ব রাজনৈতিক প্রচারণার পেছনে দেওয়ার কারণে জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানকারী জনতা গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী রাজনৈতিক দিশা থেকে ক্রমান্বয়ে বঞ্চিত হচ্ছে।’
নাসির উদ্দিন আরও বলেন, ‘ব্যক্তিগত রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ নয়, বরং গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে সমুন্নত রাখাই আমাদের সব রাজনৈতিক পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত।’
এ ছাড়া হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপর সন্ত্রাসী হামলা ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের মিছিলটি হলপাড়া থেকে রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে শেষ হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এনস প গণঅভ য ত থ ন র জন ত ক অ য কশন আম দ র আওয় ম সরক র এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় নির্বাচন মানেই গণতন্ত্র নয়, আগে প্রয়োজন গণপরিষদ
কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, যে গণঅভ্যুত্থান হয়ে গেল তা কোনো রাজনৈতিক দলের ব্যানারে গণঅভ্যুত্থান হয়নি, গণঅভ্যুত্থান হয়েছে জনগণের ব্যানারে সেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ ছিল। কী অভিপ্রায়ে গণঅভ্যুত্থান হলো সে বিষয় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। এ জন্য তৃনমূল পর্যায়ে এ অন্তর্বর্তী সরকারকে যেতে হবে। জনগণের কথা শুনে তাদের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ঢাকায় বসে সংস্কার কমিশন গঠন করে সিদ্ধান্ত নিলে তা জনগণের অভিপ্রায় পূরণ হবে না।
আজ শুক্রবার দুপুরে তিনি বগুড়া প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন।
ফরহাদ মজহার আরও বলেন, বাংলাদেশের জন্য নতুন সংবিধান না, নতুন গঠনতন্ত্রের প্রয়োজন। গঠনতন্ত্র মানে কিন্তু আইন না, তবে সংবিধান মানে হচ্ছে আইন। আর আমরা কিন্তু ঔপনিবেশিক শাসক না। ইংরেজরা আইন প্রণয়ন করে আর জনগণ গঠনতন্ত্র করে। আর এ পার্থক্যটাই মনে রাখতে হবে। তার মানে আপনি যখনই সংবিধান বলবেন আপনি ঔপনিবেশিক একজন শাসক। তখন আপনি লুটেরা মাফিয়াতন্ত্রের ন্যায় একজন শাসক। আপনি একটা আইন দিয়ে গরীবদের শাসন করবেন। তাই আগে গঠনতন্ত্র তৈরি করে গণপরিষদ নির্বাচন করা প্রয়োজন, তারপর জাতীয় নির্বাচন।
গঠনতন্ত্র মানে জনগণ নিজেরাই অংশগ্রহণ করবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, তারা পরস্পরের সঙ্গে কীভাবে বাস করবে এটা তারা তৈরি করবে। সাধারণ মানুষ রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ করতে পারবে, তরুণদের মতামতের গুরুত্ব দিতে হবে। তা না হলে আবার যারা ক্ষমতায় আসবে তারা আগের সরকারের মতোই লুটপাট করবে। নির্বাচন মানেই গণতন্ত্র নয়। এ জন্য সাধারণ মানুষ ও তরুণদের অংশগ্রহণে আগে গণপরিষদ নির্বাচন, তারপরে জাতীয় নির্বাচন।
তিনি বলেন, তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। এক. কোন মানুষের অধিকার হরণ করা যাবে না; মানুষকে মর্যাদা দিতে হবে। দুই. প্রাকৃতিক কোনো কিছু দখল করা যাবে না, তিন মানুষের জীবন-জীবিকা বিপন্ন হয় এমন কোন আইন করা যাবে না।
ফরহাদ মজহার মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যর সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের মানবিক করিডোর দেওয়ার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে প্রক্সি ওয়ারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আমি কোনভাবেই চাইবো না করিডোর দেওয়া হোক। করিডোর কখনও আমাদের দেশের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে না। এসব কারণে বাংলাদেশের প্রতিটি তরুণকে সেনাবাহিনীর সদস্য করে তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রস্তুত রাখা প্রয়োজন। সেনাবাহিনীকে জাতীয় সেনাবাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।