রানা প্লাজা স্মরণে বটতলার সাংস্কৃতিক সমাবেশ
Published: 9th, May 2025 GMT
সাভারের রানা প্লাজায় ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ড স্মরণে ‘বটতলা’ শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সপক্ষে আন্দোলনরত সাংস্কৃতিক সংগঠন, শিল্পী এবং সংস্কৃতিকর্মীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক সমাবেশ ‘কারখানা কেন বন্দিশিবির’ করেছে।
গতকাল ৯ মে রায়ের বাজারের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে সাংস্কৃতিক সমাবেশে পথনাটক, প্রতিবাদী গান, কবিতা নিয়ে যুক্ত হয় বটতলার সুহৃদ শিল্পী সংগঠন ও বন্ধুরা। বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলে এ আয়োজন।
সামিনা লুৎফা নিত্রার লেখা ‘জতুগৃহ’ নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন আলী হায়দার। এতে অভিনয় করেন ইমরান খান মুন্না, সামিনা লুৎফা, শারমীন ইতি, ইভান রিয়াজ, আশরাফুল অশ্রুসহ অনেকেই। অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন বটতলার শিল্পীরা। প্রতিবাদী গান পরিবেশন করেন রিশাদুর রহমান রিশাদ, লায়েকী বশীর, লোচন পলাশ, শারমীন ইতি, তাহি, রেওয়াজ। শেষ পর্বে ছিল ‘সমগীত’ এর পরিবেশনা।
আয়োজকরা বলেন, ২৪ এপ্রিল ২০১৩ ধসে পড়ে রানা প্লাজা, সহস্র প্রাণ নিমেষেই লাশের স্তূপ! বেঁচে ফিরেছেন যারা, সেই বিভীষিকার স্মৃতি আজও তাড়া করে ফেরে। এই বৃত্তান্ত কি শুধুই রানা প্লাজার? এর আগে পরে এমন ঘটনাই ঘটেছে নানান কারখানায়। বন্দিশিবিরের মতো কারখানাঘরে বারবার বলি হয়েছে শ্রমিকের জীবন।
শিল্পচর্চার মধ্য দিয়ে রানা প্লাজা, তাজরীন গার্মেন্টস, তুবা কিংবা যে কোনো কারখানায় ঘটে যাওয়া এসব কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি, এসব হত্যাকাণ্ডকে ভুলিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত রুখে দিতে বটতলা সোচ্চার। এ লক্ষ্যেই হচ্ছে নানা সাংস্কৃতিক আয়োজন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
৮% জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য হয়, প্রশ্ন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনসহ কোনো সংস্কার কমিশনে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি দেখা যায়নি বলে মন্তব্য করেছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন। তাদের প্রশ্ন, ঐকমত্য কমিশনে কোনো রাজনৈতিক দলকেও প্রশ্ন করতে দেখা গেল না যে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীর কোনো প্রতিনিধি না থাকলে বা তাদের বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য গঠন হয়।
‘অভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ৮% জনগোষ্ঠীর অবস্থা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্ন তোলা হয়েছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের লিখিত বক্তব্যে। আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) তরুণ রায়। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের আগে হোক বা পরে, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে এখনো ৮ শতাংশ শুধু রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার জায়গা। তাদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট হতে দেখা যাচ্ছে না কোনো রাজনৈতিক দলকে। সে ক্ষেত্রে এমন অবস্থা চলমান থাকলে ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে ভবিষ্যতে নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্র বয়কটের সিদ্ধান্তও নিতে হতে পারে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা আক্রান্ত হতে থাকেন। তাৎক্ষণিকভাবে গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে সংখ্যালঘুরা জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলেন। সেই আন্দোলন থেকে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠনসহ ৮ দফা দাবি তোলা হয়। সেসব দাবি বাস্তবায়নে তখন অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। কিন্তু গত ১ বছরে ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের আশানুরূপ কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি।
সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেছে, বিগত ৫৩ বছরে কোনো সরকারই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। আগামী দিনের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় ৮ দফার বাস্তবায়ন করতে হবে। ৮ দফা যে দেশের ৮ শতাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রত্যেকের মনের কথা জানান দিতে ২২ আগস্ট ‘জাতীয় সংখ্যালঘু সম্মেলন-২০২৫’ আয়োজন করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক সুস্মিতা কর বলেন, সরকারের ঐকমত্য কমিশনে সংখ্যালঘু প্রতিনিধি নেই। দেশের একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে নিয়ে তো ঐকমত্য গঠন হতে পারে না। গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিজেদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট আছে। সংখ্যালঘুদের সব সংগঠন আট দফা দাবিতে একাত্ম। যদি নির্বাচন–পূর্ববর্তী সময়ে সরকার কিংবা রাজনৈতিক দলগুলো থেকে এসব দাবি বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে না দেখা যায়, তাহলে হয়তো সংখ্যালঘুরা ভোট বয়কট লড়তে পারে।
এই সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের প্রচার সম্পাদক সুব্রত বল্লভ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির আদিবাসী সংগঠক সুমন ত্রিপুরা।