লঞ্চে দুই তরুণীকে মারধরের ঘটনায় আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নিন্দা
Published: 11th, May 2025 GMT
মুন্সিগঞ্জ লঞ্চঘাটে যাত্রাবিরতির জন্য থামা একটি লঞ্চে দুই তরুণীকে প্রকাশ্যে মারধরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে ও নারীর স্বাধীন চলাফেরায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা। আজ রোববার আসকের এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে মারধরের ঘটনা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। বাংলাদেশ দণ্ডবিধিতে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে, কোনো ব্যক্তিকে স্বেচ্ছায় আঘাত করা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের তথ্যের ভিত্তিতে আসক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে, ৯ মে ঢাকা-লালমোহন রুটে চলাচলকারী একটি লঞ্চ প্রায় ৩০০ যাত্রী নিয়ে ঢাকায় ফিরছিল। লঞ্চটির দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় বেশ কয়েকটি কেবিনে ২০-২৫ জন কিশোর, যুবক ও নারী ছিলেন। রাত ৮টার দিকে লঞ্চটি মুন্সিগঞ্জ ঘাটে নোঙর করে। এ সময় স্থানীয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কমিটির নেতৃস্থানীয় কর্মীসহ কিছু লোক লঞ্চে উঠে পিকনিকে আসা যাত্রীদের ওপর হামলা করেন। মুন্সিগঞ্জ জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরিচিত মুখ নেহাল আহমেদ জিহাদ লঞ্চের এক নারী যাত্রীকে বেল্ট দিয়ে বেপরোয়াভাবে পেটান। এ সময় বিভিন্ন বয়সী ৫০ থেকে ৬০ জন পুরুষ সেই দৃশ্য তাঁদের মুঠোফোনে ধারণ করে উল্লাস করেন এবং বিভিন্ন স্লোগান দেন।
আসক মনে করে, সমাজে নারীর প্রতি সংবেদনশীলতা কোন পর্যায়ে এবং কারও কারও দৃষ্টিভঙ্গি কতটা নিষ্ঠুর, তার একটি নিকৃষ্ট উদাহরণ এই ঘটনা। প্রতিদিনই দেশের কোনো না কোনো জায়গায় নারীদের এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার শিকার হতে দেখা যাচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, নারীর স্বাধীনতা, নারীর পছন্দ করার বা সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার, চলাফেরার অধিকার সবই সাংবিধানিক অধিকার। এসব অধিকার আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সনদ দ্বারাও স্বীকৃত।
আসকের বিবৃতিতে বলা হয়, যেখানে নারীর মর্যাদা, অধিকার ও নিরাপত্তা সর্বোত্তম উপায়ে নিশ্চিত হওয়ার কথা, সেখানে তাঁদের প্রকাশ্য মারধরের এমন ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। মুন্সিগঞ্জে নির্যাতনকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি সহিংসতার শিকার নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে আসক। এ ধরনের ঘটনাকে বৈষম্যহীন সরকারের রীতিনীতির সম্পূর্ণ পরিপন্থী বলে উল্লেখ করেছে আসক।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
লাকসামে অস্ত্রের মুখে এতিমখানার ৫ গরু লুট, আহত ৮
কুমিল্লার লাকসামে একটি এতিমখানার খামার থেকে গত শুক্রবার পাঁচটি গরু লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাত দল। এ সময় তাদের হামলায় মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ আটজন আহত হন। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ থানায় মামলা করেছে।
গত শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) ভোরে উপজেলার আজগরা ইউনিয়নের বড়বাম আল-জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদরাসা ও এর সংলগ্ন এতিমখানার খামারে ঘটনাটি ঘটে। তিন মাস আগেও এই খামারের সাতটি গরু লুট করেছিল ডাকাতরা।
আরো পড়ুন:
খুলনায় বিএনপি নেতার অফিসে বোমা-গুলি, শিক্ষক নিহত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিপক্ষের হামলা: গুলিবিদ্ধ যুবকের মৃত্যু
সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে ঘটনাটি জানাজানি হয়।
এলাকাবাসী জানান, মাদরাসার আয় এই খামারের মাধ্যমে হয়। তিন মাসের ব্যবধানে দুই দফা ডাকাতি হওয়ায় শিক্ষক ও ছাত্রদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। খামারের বড় গরুগুলো লুট হয়ে যাওয়ায় এক পাশ ফাঁকা পড়ে আছে। বর্তমানে খামারে ১১টি গরু অবশিষ্ট রয়েছে।
খামারের সামনে পড়ে আছে ডাকাত দলের ব্যবহৃত তুষের বস্তা, যা দিয়ে গরুগুলো পিকআপ ভ্যানে তোলে তারা। গরু উদ্ধার এবং ডাকাত দলের সদস্যদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
মামলার বাদী এবং মাদরাসার শিক্ষক ইমরান হোসাইন জানান, গত শুক্রবার ভোরে একদল ডাকাত দুটি পিকআপ ভ্যান নিয়ে এসে অস্ত্রের মুখে মাদরাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে। শিক্ষকদের মারধর করে তাদের মোবাইল ফোন নিয়ে যায় ডাকাতরা। তারা খামারে ঢুকে কেয়ারটেকার উৎসব হোসেনকে বেঁধে একে একে পাঁচটি গরু পিকআপ ভ্যানে তুলে নেয়। শিক্ষক ও ছাত্রদের চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে আসলে ডাকাতরা পালিয়ে যায়।
মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা শরীফুল আলম খন্দকার জানান, খামারের আয়ের ওপর ভিত্তি করে মাদরাসার কার্যক্রম চলে। তিন মাস আগেও এই খামারের সাতটি গরু নিয়ে যায় ডাকাতরা।
লাকসাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজনীন সুলতানা বলেন, “লুট হওয়া গরু উদ্ধার এবং ডাকাতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। মাদরাসার শিক্ষক ইমরান হোসাইন বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন।”
ঢাকা/রুবেল/মাসুদ