৯০ দিনের জন্য পারস্পরিক শুল্ক প্রত্যাহারে সম্মত যুক্তরাষ্ট্র-চীন
Published: 12th, May 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন প্রাথমিকভাবে ৯০ দিনের জন্য একে অপরের পণ্যের ওপর শুল্ক ব্যাপকভাবে প্রত্যাহার করতে সম্মত হয়েছে। সোমবার (১২ মে) দুই দেশের এক যৌথ বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়েছে। খবর বিবিসির।
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির কর্মকর্তাদের সপ্তাহান্তে ম্যারাথন বাণিজ্য আলোচনার পর এই ঘোষণা আসলো। যৌথ বিবৃতি অনুসারে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের উপর সাময়িকভাবে তার শুল্ক ১৪৫ শতাংশ থেকে ৩০ এ কমিয়ে আনবে। অন্যদিকে চীন আমেরিকান আমদানির উপর তার শুল্ক ১২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করবে।
বিবিসি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের তুলনামূলক কিছুটা বেশি শুল্ক আরোপ বজায় রাখার লক্ষ্য হলো, শক্তিশালী ওপিওয়েড ড্রাগ ফেন্টানাইলের অবৈধ ব্যবসা রোধে বেইজিংয়ের উপর আরো চাপ সৃষ্টি করা।
আরো পড়ুন:
যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টায় মার্কিন–ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিচ্ছে হামাস
পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করতে তুরস্ক যাচ্ছেন জেলেনস্কি
তবে মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, সমস্যা মোকাবিলায় চীনের আগ্রহ দেখে তারা ইতিবাচকভাবে অবাক হয়েছেন।
যৌথ বিবৃতিতে নিশ্চিত করা হয়েছে, ৯০ দিনের জন্য এই শুল্ক বিরতি বুধবার (১৪ মে) থেকে শুরু হবে।
এতে আরো বলা হয়েছে, উভয় দেশ ‘অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য একটি প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা করবে’।
পরবর্তী আলোচনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন বা কোনো সম্মত তৃতীয় পক্ষের দেশে অনুষ্ঠিত হতে পারে।
এর আগে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনায় চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বড় অগ্রগতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
রবিবার (১১ মে) নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘সুইজারল্যান্ডে চীনের সঙ্গে ভালো বৈঠক হয়েছে। অনেক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে; অনেক ক্ষেত্রেই ঐকমত্য হয়েছে। বন্ধুত্বপূর্ণ ও গঠনমূলক পদ্ধতিতে পুরো বিষয়টি নতুন করে সাজানো হয়েছে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ের কল্যাণে আমরা দেখতে চাই, মার্কিন ব্যবসার-বাণিজ্যের জন্য চীন দুয়ার খুলে দিচ্ছে। বড় অগ্রগতি হয়েছে।’
গত কয়েক দিন ধরে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের আলোচনা চলছে। এই আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করছেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট এবং চীন সরকারের প্রতিনিধিত্ব করছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট হি লাইফেং।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
সৌদির কালোতালিকায় চ্যালেঞ্জার ট্রাভেলস, ১০১৮ হজযাত্রীর ভোগান্তির শঙ্কা
সৌদি আরবের মক্কায় হজযাত্রীদের জন্য বাড়িভাড়া না করা এবং এক বাড়ি দেখিয়ে অন্য বাড়িতে হাজি রাখার অভিযোগে চ্যালেঞ্জার ট্রাভেলসকে কালোতালিকাভুক্ত করেছে সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়। এটি ১৬টি হজ এজেন্সির সমন্বয়ে গঠিত একটি লিড এজেন্সি। এর অধীন ১৬টি হজ এজেন্সির ১ হাজার ১৮ জন হজযাত্রী রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকে ইতিমধ্যে মক্কায় পৌঁছে গেছেন।
গতকাল রোববার রাতে বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয় ও হজ এজেন্সিগুলোর সঙ্গে সৌদি সরকারের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের ভার্চ্যুয়াল সভায় দেশটির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাসান আল মনোয়ার এ তথ্য জানান। সৌদি সরকারের এই ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে চ্যালেঞ্জার ট্রাভেলসের লাইসেন্সের অনুকূলে মোনাজ্জেম বা প্রতিনিধিত্বকারী ব্যক্তির পাসপোর্ট জব্দ, ভিসা বাতিল এবং সৌদি আরবে তার চলাচল সীমিত করে দিয়েছে। এর ফলে ১৬টি হজ এজেন্সির ১ হাজার ১৮ জন হজযাত্রী দুর্ভোগে পড়তে পারেন।
ভার্চ্যুয়াল সভায় উপস্থিত একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সভায় সৌদি উপমন্ত্রী বাংলাদেশি হজযাত্রীদের বাড়িভাড়ায় কয়েকটি এজেন্সির অনিয়মের কথা উল্লেখ করেন। তিনি জানান, প্রায় ১৫ হাজার হজযাত্রীর বাড়িভাড়ার কাগজপত্রের সঙ্গে প্রকৃত বাড়ির কোনো মিল নেই। অনেক হজযাত্রীর বেলায় কাগজপত্রে বাড়িভাড়া দেখানো হয়েছে, প্রকৃতপক্ষে বাড়িভাড়া হয়নি বা এক বাড়ি দেখিয়ে অন্য বাড়িতে হজযাত্রী রাখা হচ্ছে। এ কারণে ১৫ হাজার হজযাত্রীর মিনার কার্ড তাঁরা অবরুদ্ধ করে রেখেছেন।
চ্যালেঞ্জার ট্রাভেলসের মালিক হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি সৈয়দ গোলাম সারোয়ার। তিনি দাবি করেন, চ্যালেঞ্জার ট্রাভেলসকে কালোতালিকাভুক্ত করা হয়নি, কালোতালিকাভুক্ত করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সৌদি উপমন্ত্রী। গোলাম সারোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, ‘কোনো অনিয়মের জন্য চ্যালেঞ্জার ট্রাভেলসকে কালোতালিকাভুক্ত করার কথা বলা হয়নি। সৌদি সরকারের আইন অনুযায়ী, লিড এজেন্সি হিসেবে অন্যের অনিয়ম বা অপরাধের দায় আমাদের ওপর পড়েছে। “ইউসূফ এয়ার” নামের আমাদের সহযোগী একটি হজ এজেন্সির নিবন্ধিত ৩৫ জন হজযাত্রীর বাড়িভাড়াসংক্রান্ত অনিয়মের কারণে এই জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চ্যালেঞ্জার ট্রাভেলসকে কালোতালিকাভুক্ত করা এবং ১৫ হাজার হজযাত্রীর বাড়িভাড়ার কাগজপত্রে অসংগতির তথ্য জানার পর এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সৌদি আরবে বাংলাদেশ হজ মিশনকে দায়িত্ব দিয়েছে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. মঞ্জুরুল হক (হজ অধিশাখা) প্রথম আলোকে বলেন, ‘চ্যালেঞ্জার ট্রাভেলসকে কালোতালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা এই লিড এজেন্সির সহযোগী ১৬টি হজ এজেন্সির কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দিচ্ছি। একই সঙ্গে যে কারণে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, সে বিষয়ে প্রকৃত তথ্য-উপাত্তসহ কিছু বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, খুব দ্রুতই এর সমাধান হয়ে যাবে।’
প্রসঙ্গত, এ বছর ৭৫৩টি হজ এজেন্সির অধীন নিবন্ধিত ৮১ হাজার ৯০০ জন ব্যক্তি ৭০টি ‘লিড এজেন্সির’ মাধ্যমে হজে যাচ্ছেন। এ বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৭ হাজার ১০০ জন হজে যাচ্ছেন। এর মধ্যে বেসরকারিভাবে ৮১ হাজার ৯০০ জন এবং সরকারিভাবে ৫ হাজার ২০০ জন হজের জন্য নিবন্ধন করেছেন। গত ২৯ এপ্রিল থেকে হজযাত্রা শুরু হয়েছে।