দেশের প্রতিটি জেলার অন্তত একটি নদী দূষণ ও দখলমুক্ত করার পরিকল্পনা আছে বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, ‘পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণ না করে দখল, অবকাঠামো তৈরি এবং জেদের বশে গত ৫৪ বছরে নদীর যে ক্ষতিটা আমরা করেছি, তার পুরোটা এক–দেড় বছরে সরকারের পক্ষে সমাধান করা সম্ভব নয়; তবে সমস্যার সমাধানে রূপরেখা করে যাওয়া সম্ভব। যা ইতিমধ্যে আমরা শুরু করেছি।’

আজ সোমবার বেলা দুইটার দিকে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার আটঘরিয়া এলাকায় বড়াল-১ ভোল্ট রেগুলেটর ও বড়াল নদ পরিদর্শন শেষে এসব কথা বলেন উপদেষ্টা।

রূপরেখা প্রসঙ্গে রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘প্রতিটি বিভাগে একটি করে নদী বেছে নিয়েছি। এ ছাড়া কক্সবাজারে একটি ও ঢাকায় চারটি নদীকে কেন্দ্র করে পরিকল্পনা প্রণয়ন করে বাজেটে অর্থ বরাদ্দ নিয়ে কাজ শুরু করেছি। আসলে প্রতিটি জেলার অন্তত একটি নদী দূষণ ও দখলমুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।’

এর আগে আজ বেলা ১১টার দিকে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় বড়াল নদের উৎসমুখ ও স্লুইসগেট পরিদর্শন করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা। সেখানে বড়াল রক্ষা আন্দোলন কমিটির নেতা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলীদের সঙ্গে আলোচনায় তিনি জানান, বড়াল নদের স্লুইসগেটের এখন আর কোনো প্রয়োজন নেই। তাঁরা দায়িত্বে থাকতেই এটি সরিয়ে দেওয়া হবে।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সমন্বিত পদক্ষেপের মাধ্যমে বড়ালসহ দেশের সব নদী বাঁচাতে হবে। বড়াল নদ বাঁচাতে নদী পুনর্খনন এবং চারঘাটের স্লুইসগেট অপসারণ করা হবে। নদীর বর্তমান প্রেক্ষাপটে স্লুইসগেটের আর প্রয়োজন নেই। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে (পাউবো) বুঝতে হবে, মানুষের কথা তাকে শুনতে হবে। যে প্রকল্পই করুক জনগণের অর্থে হবে, তাই তাঁরা যেভাবে চাইবে, সেভাবে কাজ হবে।
ফারাক্কা চুক্তির বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ফারাক্কা চুক্তির মেয়াদ আরও দেড় বছর আছে। চুক্তি অনুযায়ী দুই দেশের টেকনিক্যাল কমিটি প্রতিনিয়ত মাঠপর্যায়ের তথ্য–উপাত্ত সংগ্রহ করছে। যেহেতু এটা আমাদের ন্যায্য হিস্যা; কাজেই যখন সময় আসবে, সংগৃহীত তথ্য–উপাত্ত অনুযায়ী চুক্তির বিষয়ে কাজ করা হবে।

আজ সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটের দিকে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান চারঘাটে পৌঁছান। সেখানে তাঁকে স্বাগত জানান বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন ও বড়াল রক্ষা আন্দোলনের সদস্যরা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ল ইসগ ট উপদ ষ ট র জওয় ন পর ব শ

এছাড়াও পড়ুন:

‘বউ পেটানো’ অভিনেতার দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন

সৈয়দা আলিজা সুলতানের সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন পাকিস্তানের জনপ্রিয় অভিনেতা ফিরোজ খান। তাদের এই সংসার ভেঙে গেছে। আলিজা অভিযোগ করেছিলেন, তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন ফিরোজ। কেবল তাই নয়, শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের ছবিও প্রকাশ করেছিলেন। এরপর তোপের মুখে পড়েন ফিরোজ খান। নেটিজেনদের অনেকে তাকে ‘বউ পেটানো’ অভিনেতার তকমাও দেন।

প্রথম সংসার ভাঙার প্রায় দুই বছর পর ডা. জয়নবের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ফিরোজ খান। এদিকে, সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন ছড়িয়েছে। মূলত, বিনোদনভিত্তিক একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ডা. জয়নবের ইনস্টাগ্রাম পোস্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করা হয়। তারপরই শুরু হয় ফিরোজ খানের সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদের গুঞ্জন। দ্রুত সময়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে জয়নবের অভিযোগের স্ক্রিনশট। 

ডা. জয়নব কথিত এই নোটে বলেন, “আমি আমার সহনসীমার শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছি। অবিরাম মানসিক চাপ ও উদ্বেগে ক্লান্ত। এমন একজন মানুষের সঙ্গে সম্পর্কে আছি, যে আমাকে বিশ্বাস করে না। আমি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমি এখন ক্লান্ত। প্রতিটি কথোপকথন একটা লড়াইয়ের মতো লাগে, প্রতিটি মতবিরোধ যেন যুদ্ধ। এমন আচরণের শিকার হয়ে আমি ক্লান্ত। আমি যখন তাকে কিছু বলি, সে আমার উপর রাগ ঝাড়ে।”

স্ত্রী জয়নবের সঙ্গে ফিরোজ খান

সুখ স্মৃতিগুলো কষ্টে ঢাকা পড়ে গিয়েছে। এমন মন্তব্য করে জয়নব বলেন, “সত্যি বলতে, আমরা একসঙ্গে যে স্মৃতিগুলো তৈরি করেছিলাম, তা এখন কষ্ট ও আঘাতে ঢাকা পড়ে গেছে। আমি অসংখ্যবার তাকে ক্ষমা করেছি। কিন্তু সেই ক্ষতগুলো কখনো পুরোপুরি সারেনি। বুঝতে পারছি, আমি এক ধরণের মানসিক অস্থিরতার মধ্যে বাস করছি, একটা সম্পর্কে আটকে আছি, যা আমার জীবনের শক্তি শুষে নিচ্ছে। আমি জানি, আমি এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। আমি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও কোমলতার যোগ্য। সবকিছু ঠিক আছে—আমি আর এই ভান করতে চাই না।”

ডিভোর্সের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে জয়নব বলেন “এমন বিষাক্ত একটা সম্পর্কের জন্য আমি আমার সুখ ত্যাগ করেছি। আমি এখন নিজের জন্য, নিজের মানসিক সুস্থতার জন্য দাঁড়াচ্ছি। বেদনা ও কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে, আমি আমার জীবনের এই অধ্যায় (বিবাহিত জীবন) শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি ডিভোর্স নিচ্ছি। কারণ আমি জানি, এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। জীবনের নতুন অধ্যায় শুরুর জন্য আমি প্রস্তুত, যেখানে আমাকে মূল্য দেওয়া হবে, সম্মান করা হবে, ভালোবাসা হবে।”

জয়নবের এই ‘ডিভোর্স নোট’ নিয়ে যখন জোর চর্চা চলছে, তখন মুখে কুলুপ এঁটেছেন ফিরোজ খান। তবে এর আগে ফিরোজ খানের অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে দেওয়া একটি পোস্টে দেখা যায়। তাতে জয়নবের বিরুদ্ধে ‘ব্ল্যাকমেইল’ ও ‘মানসিক চাপের’ অভিযোগ তোলেন। যদিও পরবর্তীতে পোস্টটি মুছে ফেলা হয়। পাশাপাশি এই অভিনেতা জানান, তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছিল।

ডা. জয়নব

তবে সংসার ভাঙার গুঞ্জনে সরাসরি কোনো বক্তব্য দেননি ফিরোজ খান কিংবা তার স্ত্রী ডা. জয়নব। তবে বিনোদনভিত্তিক যে পেজ থেকে জয়নবের ‘ডিভোস নোট’ ছড়ানো হয়েছে, সেই পোস্টে মন্তব্য করেছেন তিনি। তাতে জয়নব লেখেন, “এই ধরনের পেজগুলো আনফলো করুন অথবা রিপোর্ট করুন। এই ধরনের পেজ থেকে ভুয়া খবর ছড়িয়ে মানুষকে বিরক্ত করা হচ্ছে। সত্যি বলছি, আমি জানি না কীভাবে তারা আমার স্টোরিতে পোস্টটি করার অ্যাকসেস পেয়েছে। এই পোস্ট আমি কখনো করিনি।”

২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথম স্ত্রী সৈয়দ আলিজা সুলতানের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় ফিরোজ খানের। এ সংসারে সুলতান খান ও ফাতিমা খান নামে দুই সন্তান রয়েছে। বর্তমানে দুই সন্তানের দায়িত্ব নিয়ে আদালতে মামলা লড়ছেন এই প্রাক্তন দম্পতি। ২০২৪ সালে ডা. জয়নবকে বিয়ে করেন ফিরোজ খান।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ