ছুটিতে যাচ্ছেন পররাষ্ট্রসচিব জসীম, স্থলাভিষিক্ত হবেন নজরুল
Published: 20th, May 2025 GMT
ছুটিতে যাচ্ছেন পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন। তার ছুটিতে যাওয়ার বিষয়টি সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের অনুমোদনের অপেক্ষায়। জসীম উদ্দিনের ছুটিতে গেলে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) মো. নজরুল ইসলাম। মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, কয়েক মাস ছুটিতে থাকবেন পররাষ্ট্রসচিব। এরই মধ্যে পররাষ্ট্রসচিবের পদ থেকে জসীম উদ্দিনকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ছুটি শেষে তিনি উত্তর আমেরিকা মহাদেশের কোনো একটি দেশে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত পদে যোগ দিতে পারেন।
এই নিয়ে দ্বিতীয়বার পররাষ্ট্রসচিব পদে পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিল অন্তর্বর্তী সরকার। গত বছরের সেপ্টেম্বরে পররাষ্ট্রসচিব পদে যোগ দেন বিসিএস (পররাষ্ট্র ক্যাডার) ১৩তম ব্যাচের কর্মকর্তা জসীম উদ্দিন। ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে তার অবসরোত্তর ছুটিতে যাওয়ার কথা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পরর ষ ট রসচ ব ন পরর ষ ট র
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানে হামলার নিন্দা ব্রিকসের, কাদের ওপর অতিরিক্ত ১০% শুল্ক বসানোর হুমকি দিলেন ট্রাম্প
ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে নেতারা ‘ভবিষ্যৎ না ভেবে দেওয়া’ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা আমদানি শুল্ক আরোপ এবং সম্প্রতি ইরানে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ হামলার কড়া সমালোচনা করেছেন। গতকাল রোববার ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
গতকাল রাতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এই সমালোচনার জবাবে হুমকি দিয়ে লিখেছেন, ‘যেকোনো দেশ, যারা ব্রিকসের যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী নীতির সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করবে, তাদের ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। এ নীতির কোনো ব্যতিক্রম হবে না।’
ব্রিকসের ১১টি উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে রয়েছে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশ। এই সংস্থা বিশ্বের প্রায় অর্ধেক মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে এবং বৈশ্বিক উৎপাদনের ৪০ শতাংশের বেশি অবদান রাখে।
এই জোট অনেক বিষয়ে বিভক্ত হলেও যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা শুল্কনীতি ও আচরণের বিষয়ে তারা একমত। অবশ্য সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নাম সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি।
সম্মেলনের যৌথ বিবৃতিতে ব্রিকস নেতারা বলেন, ‘একতরফাভাবে বৃদ্ধি করা শুল্ক নিয়ে আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। কারণ, এই শুল্ক বিশ্ব অর্থনীতির ক্ষতি করতে পারে।’
ইরানের পাশে ব্রিকস
ব্রিকস সম্মেলনে ইরানের প্রতি প্রতীকী সমর্থন জানিয়ে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক সামরিক হামলার নিন্দা জানানো হয়েছে। এই দুই দেশ ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ নিশানায় এসব হামলা চালায়।
চলতি বছরের এপ্রিলে ট্রাম্প তাঁর মিত্র ও প্রতিপক্ষ দেশগুলোকে একের পর এক শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপের হুমকি দেন। তবে বাজারে ভয়াবহ দরপতনের মুখে পড়ে কিছু সময়ের জন্য তা স্থগিত করেন।
ট্রাম্প হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, আগামী ১ আগস্টের মধ্যে চুক্তি না হলে তিনি একতরফা শুল্ক আরোপ করবেন। তবে সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র যেমন ব্রাজিল, ভারত ও সৌদি আরবের প্রতি সম্মান রেখে যুক্তরাষ্ট্র বা ট্রাম্পের নাম কোনো জায়গায় সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি।
সম্মেলনের প্রেক্ষাপট ও অনুপস্থিতির বিষয়
প্রায় ২০ বছর আগে গঠিত ব্রিকস এখন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা শক্তির বিকল্প কেন্দ্র হিসেবে চীনের নেতৃত্বাধীন একটি শক্তিশালী মঞ্চ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
তবে সদস্যসংখ্যা বাড়িয়ে ইরান, সৌদি আরবসহ নতুন নতুন দেশ যুক্ত হওয়ায় গাজা যুদ্ধ কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্য নিয়ে জোটের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠা কঠিন হয়ে পড়েছে।
যেমন ব্রিকস সম্মিলিতভাবে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বে শান্তিপূর্ণ দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের পক্ষে অবস্থান নেয়। অথচ ইরান বহুদিন ধরে বলে আসছে, ইসরায়েলের ধ্বংস হওয়া উচিত।
একজন ইরানি কূটনীতিক বলেন, তাঁদের সরকারের পক্ষ থেকে ‘কিছু আপত্তি’ ব্রাজিলের আয়োজকদের জানিয়েছে। তবুও ইরান পুরো বিবৃতিকে প্রত্যাখ্যান করেনি।
ব্রাজিল সরকারের একটি সূত্র জানায়, এই স্পর্শকাতর অবস্থান থেকে বোঝা যায়, কেন সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গতকালের আলোচনায় অংশই নেননি।
সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপ্রযুক্তির অস্ত্রের সবচেয়ে বড় গ্রাহকদের একজন এবং বহুদিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র।
গুরুত্বপূর্ণ দুই নেতা অনুপস্থিত
চলতি বছরের সম্মেলনের রাজনৈতিক গুরুত্ব কিছুটা কমে গেছে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়েরঅনুপস্থিতির কারণে। তিনি ১২ বছরের মধ্যে এবার প্রথম ব্রিকস সম্মেলনে উপস্থিত হননি।
এ ছাড়া রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সরাসরি সম্মেলনে আসেননি। তিনি ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে সম্মেলনে অংশ নেন। তাঁর বিরুদ্ধে ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত।
সম্মেলনে পুতিন তাঁর বক্তব্যে বলেন, ব্রিকস এখন বৈশ্বিক নেতৃত্বের গুরুত্বপূর্ণ এক শক্তি হয়ে উঠেছে।
এআই নিয়ে উদ্বেগ
সম্মেলনে নেতারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারে আন্তর্জাতিক নিয়মকানুন গঠনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, এই প্রযুক্তি শুধু ধনী দেশগুলোর একচেটিয়া অধিকার হতে পারে না।
বর্তমানে এই খাতে যুক্তরাষ্ট্রের টেক জায়ান্টরা এগিয়ে থাকলেও চীন ও অন্যান্য দেশও দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে।