বিএনপি জনগণবিরোধী এক পরিণতির পথে হাঁটছে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
Published: 22nd, May 2025 GMT
বিএনপি আজ জনগণবিরোধী এক পরিণতির পথে হাঁটছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। বৃহস্পতিবার রাতে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে এ মন্তব্য করেন তিনি।
পোস্টে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, চুপ্পুর অপসারণ, জুলাই ঘোষণাপত্র—যে কোনো জনগণের পক্ষে উদ্যোগে বিএনপি বাধা দিয়েছে কিংবা নীরব থেকেছে। তারা ক্রমাগত পুরোনো বন্দোবস্ত ও শাসকগোষ্ঠীর স্বার্থরক্ষায় ব্যস্ত। সর্বশেষ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতেও তাদের অবস্থান ছিল নিশ্চুপ। জনগণের পক্ষে কোনো আন্দোলনে কখনো বিএনপিকে পাওয়া যায়নি; তারা রাজপথে নামে শুধু নিজেদের ক্ষমতার লোভে।
তিনি আরও বলেন, ইশরাক হোসেনের মেয়র হওয়ার দাবিকে ঘিরে বিএনপির আচরণ আবারও প্রমাণ করে, এই দল কেবল নিজেদের এজেন্ডা নিয়ে ভাবে—বাংলাদেশের জনগণের জন্য তাদের সংগ্রাম নেই, প্রতিশ্রুতি নেই, আত্মত্যাগ তো দূরের কথা। আজ বিএনপি হয়ে উঠেছে কিছু বুড়ো রাজনীতিকের ক্ষমতা চর্চার এক গোড়া প্ল্যাটফর্ম, যেখানে ইশরাকের মতো তরুণ নেতাদেরও একটি মেয়র পদের জন্য রাস্তায় বসে থাকতে হয়।
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, ১৬ বছর ধরে বিএনপির ভুল নেতৃত্ব এবং কৌশলগত ব্যর্থতায় জনগণ ও দলের ভেতরের বাংলাদেশপন্থি কর্মীরা ফ্যাসিস্ট দমননীতির শিকার হয়েছে। আজকের এই জুলাই অভ্যুত্থানকেও বিএনপি দেখে শুধু একটি ক্ষমতার পালাবদল হিসেবে—তাদের কাছে এটি কোনো জাতীয় রূপান্তরের আন্দোলন নয়।
তিনি আরও বলেন, ঢাকার মানুষকে অবৈধ নির্বাচনের বৈধতা দিতে জিম্মি করে বিএনপি এখন একটি সামান্য মেয়র পদ নিয়েও নাটক করছে। তারা জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে পদদলিত করে আরেকটি এক-এগারোর পথে হাঁটতে চায়। লক্ষ্য একটাই—পুরোনো বন্দোবস্তে ফিরে গিয়ে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষমতার স্বাদ নেওয়া। তারা হয়তো ৫ অগস্ট ভুলে গেছে। ভাবে, ছাত্র-জনতা ঘরে ফিরে গেছে। কিন্তু তারা বুঝতে পারছে না—একটি পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে যে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে, আরেকটি মাফিয়াতন্ত্র টিকিয়ে রাখার প্রয়াস নিলে দ্বিতীয় অভ্যুত্থান অনিবার্য হয়ে উঠবে। জুলাই প্রস্তুতি নিচ্ছে। রাজপথে আবারও দেখা হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ এনস প জনগণ র ক ষমত ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
আবু সাঈদ, মুগ্ধ বা ওয়াসিমরা রক্ত দিয়েছে শুধু স্থানীয় নির্বাচনের জন্য না: জাহিদ হোসেন
মানুষ গত চারটি টার্ম গেল ভোট দিতে পারেনি। জনগণ তাদের অধিকার চায়, জনগণ তার ভোটাধিকার চায়, জনগণ তার গণতন্ত্র ফেরত চায়। সে জন্যই ছিল ১৭ বছরের আন্দোলন, যার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল ৫ আগস্ট। আবু সাঈদ, মুগ্ধ বা ওয়াসিমরা রক্ত দিয়েছে বা আমাদের চৌধুরী আলম অথবা ইলিয়াস আলীরা হারিয়ে গেছেন শুধু স্থানীয় নির্বাচনের জন্য না, দেশের মানুষের গণতন্ত্র ফেরত দেওয়ার জন্য। সেই রক্তের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে।
আজ রোববার বেলা সাড়ে তিনটায় দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বিএনপির উপজেলা ও পৌর শাখার উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হাকিমপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফেরদৌস রহমান।
জাহিদ হোসেন তাঁর বক্তব্য বলেন, ‘আজকে যারা বিএনপির সমালোচনা করেন তাঁদের বলব, সমালোচনা না করে ঐক্যবদ্ধ হোন। কারণ, ঐক্যবদ্ধ জাতি ২০২৪ সালে ৫ আগস্ট তৈরি করতে পেরেছিল। যদি অনৈক্য হয়, তাহলে মনে রাখবেন ওই লুটেরার দল ওরা কিন্তু ভেগে গেছে মাত্র দুই-চার-দশজন। কিন্তু ওরা আপনার আশপাশেই আছে। কাজেই স্বৈরাচারের দোসরদের পথ বা ছিদ্রি দিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। আজকে যারা জাতীয় নির্বাচনকে দূরে ঠেলে স্থানীয় নির্বাচনের কথা বলেন, তাঁরা কিসের কথা বলেন। আপনি কি চান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও অবনতি হোক।’
জাহিদ হোসেন বলেন, ‘বিএনপি ভবিষ্যৎমুখী রাজনৈতিক দল। আমাদের নেতা তারেক রহমান উনি কত সুদূরপ্রসারী চিন্তা করেছেন। দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান উনি ১৯ দফা কর্মসূচি দিয়েছিলেন। দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ডালভাত কর্মসূচি দিয়েছিলেন। সর্বোপরি ভিশন ২০৩০। তারেক রহমান ওনাদের যোগ্য সন্তান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।’
সংস্কার প্রসঙ্গে জাহিদ হোসেন বলেন, আজকে সংস্কার নিয়ে অনেকে অনেক কথাই বলে। কেউ কেউ একটু বলার চেষ্টা করে। বিএনপি নাকি সংস্কারে বিশ্বাস করে না। আরে বাবারা যারা আপনারা কথা বলেন, আপনারা কি ভুলে গেছেন বিএনপি তো সেই দল, আপনারা যখন একদলীয় শাসনব্যবস্থায় আটকে গিয়েছিলেন, তখন কিন্তু বিএনপি বহুদলীয় গণতন্ত্র ফেরত দিয়েছিল। সেটি মনে থাকার কথা, শহীদ জিয়ার নেতৃত্বে। যখন আপনারা চারটি পত্রিকায় আটকে গিয়েছিলেন, তখন কিন্তু বিএনপি সংস্কারের মাধ্যমে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা উন্মুক্ত করে দিয়েছিল। যখন এই দেশে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ছিল, এই বিএনপি বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে তখন কিন্তু সংসদীয় গণতন্ত্র দিয়ে সংস্কার করেছিল। ১৯৭৪–এর কালাকানুন কে সরিয়েছে, বিএনপির নেতৃত্বে বেগম খালেদা জিয়া সরিয়েছেন।
জাহিদ হোসেন আরও বলেন, ‘শহীদের এই জুলাই মাসে দাঁড়িয়ে অহেতুক অনৈক্য সৃষ্টি করবেন না। ঐক্যবদ্ধ জাতি পারে বাংলাদেশকে আগামীর ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যেতে। অনৈক্য কোনো অবস্থাতেই আপনাকে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ উপহার দেবে না। বরং বিশৃঙ্খলা উপহার দিতে পারে। কাজেই সবাইকে বলব, দায়িত্বশীল আচরণ করুন। কথাবার্তা বলার সময় আয়নায় চেহারা দেখুন। অতীত থেকে শিক্ষা নিন, ভবিষ্যৎমুখী রাজনীতি করেন এবং জাতীয়তাবাদী দলের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে আজকে বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য ঐক্যবদ্ধ। যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলার জন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি সব সময়ই প্রস্তুত। আগামী দিনে মানুষকে, জাতিকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য বিএনপি সামনের দিকে এগিয়ে যাবে ইনশা আল্লাহ।’
অনুষ্ঠানে উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা আকরাম হোসেন মণ্ডল, সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন শিল্পী, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজা আহমেদ, পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফরিদ খান, পৌর বিএনপির সভাপতি ফরিদ খান, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।