বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সংকটময় বলে জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। খালেদা জিয়া দুদিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গতকাল রাতে ডাক্তাররা বলেছেন, তাঁর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটময়।’

আজ শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টন জামে মসজিদে দোয়ার আয়োজনে মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে আজ সারা দেশের মসজিদে মসজিদে দোয়ার আয়োজন করে বিএনপি।

নয়াপল্টন মসজিদে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গণতান্ত্রিক উত্তরণে সবচেয়ে বড় অবদান খালেদা জিয়ার। গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি লড়াই করেছেন, সংগ্রাম করেছেন, কারাবরণ করেছেন, নির্যাতিত হয়েছেন। সর্বশেষ তিনি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। আপনারা জানেন, দুই দিন ধরে তিনি আবার অসুস্থ হয়ে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এ জন্য আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকে গণতন্ত্রের নেত্রী, গণতন্ত্রের মাতা খালেদা জিয়ার রোগমুক্তির জন্য, সারা দেশের জনগণের কাছে বাদ জুমা দোয়া চেয়েছি।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, আল্লাহ যেন তাঁকে সুস্থ করে দেন। সুস্থ অবস্থায় আবার জনগণের মধ্যে ফিরে এসে দেশের মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ করে দেন।

নয়াপল্টন জামে মসজিদে দোয়ার আয়োজনে বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরাও অংশ নেন।

প্রায় ৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্‌রোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনির জটিলতাসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন। গত রোববার শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে দ্রুত তাঁকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে চিকিৎসকেরা জানান, খালেদা জিয়ার হৃদ্‌যন্ত্র ও ফুসফুসে সংক্রমণ দেখা দিয়েছে।

উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৭ জানুয়ারি লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। ১১৭ দিন লন্ডনে অবস্থান শেষে গত ৬ মে তিনি দেশে ফেরেন। এরপর একাধিকবার শারীরিক নানা জটিলতায় তাঁকে হাসপাতালে যেতে হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র র জন য অবস থ ফখর ল মসজ দ

এছাড়াও পড়ুন:

জনগণের সম্পত্তির প্রতি শেখ হাসিনার ছিল লোভাতুর দৃষ্টি: আদালত

শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে নিয়মানুযায়ী প্লট বরাদ্দের কোনো আবেদন না করলেও প্লটের দখল বুঝে পেতে ঠিকই আবেদন করেছিলেন। এতে বোঝা যায়, সম্পদের প্রতি লোভ ছিল তাঁর।

শেখ হাসিনা ও তাঁর দুই সন্তানের বিরুদ্ধে পূর্বাচলের প্লট দুর্নীতির মামলায় রায়ে এ কথা বলেছেন ঢাকার বিশেষ জজ-৫ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন। আজ বৃহস্পতিবার তিনি এ রায় দেন।

বিচারক বলেন, ‘শেখ হাসিনা নিজে প্লট নেওয়ার পর তাঁর ছেলে ও মেয়ের নামেও বরাদ্দ নেন। এরপর তাঁর বোন শেখ রেহানা, বোনের মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের নামেও বরাদ্দ নিয়েছেন। জনগণের সম্পত্তির প্রতি ওনার লোভাতুর দৃষ্টি পড়েছে। উনি চারবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এরপরও জনগণের সম্পদ থেকে লোভ সামলাতে পারেননি।’

প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির পৃথক ৩ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ বছর করে ২১ বছর কারাদণ্ডাদেশ হয়েছে। তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে দেওয়া হয়েছে ৫ বছর করে কারাদণ্ড। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছর ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা ও তাঁর তিন সন্তানকে পলাতক দেখিয়ে এ মামলার বিচার হয়েছে।

রায়ে শাস্তি ঘোষণার আগে বিচারক এ মামলার পটভূমি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘প্লট দুর্নীতির বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমেই উঠে আসে। মিডিয়া যে চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে কাজ করে, আমরা এ মামলার মাধ্যমে দেখলাম। আপনাদের রিপোর্ট না থাকলে দুদক কখনোই এ মামলা করত না। পত্রিকা রিপোর্টের আলোকেই দুদক পদক্ষেপ নিয়েছে।’

শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দুদক রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে তাঁর পরিবারের ছয় সদস্যের নামে ছয়টি প্লট (প্রতিটি ১০ কাটা আয়তনের) নিয়ে তদন্তে নামে। তাতে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ার পর এ বছরের শুরুতে ছয়টি মামলা করে।

শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর পূর্বাচলের নতুন শহর প্রকল্পে নিজের ও পরিবারের অন্য সদস্যদের নামে ছয়টি প্লট বরাদ্দ নেন। ঢাকা শহরে তাঁদের নামে সম্পত্তি থাকার পরও তা গোপন করে এই প্লট বরাদ্দ নেওয়া হয়।

তাতে অভিযোগ করা হয়, শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচলের নতুন শহর প্রকল্পে নিজের এবং পরিবারের অন্য সদস্যদেরও নামে ছয়টি প্লট বরাদ্দ নেন। ঢাকা শহরে তাঁদের বসবাসের সম্পত্তি থাকলেও তা গোপন করে এই প্লট বরাদ্দ নেওয়া হয়। পাশাপাশি প্লট পাওয়ার আবেদনের সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও নিয়ম ভেঙে তাঁদের এগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়।

ছয়টি মামলার তিনটি হয়েছে শেখ রেহানা, তাঁর মেয়ে আজমিনা ও ছেলে রাদওয়ান মুজিবের প্লট নিয়ে। সব কটি মামলাতেই শেখ হাসিনা আসামি। এগুলোর মধ্যে শেখ হাসিনা ও তাঁর ছেলে-মেয়ের প্লট–সংক্রান্ত দুর্নীতির মামলাটির রায় আজ হলো।

বিচারক প্রথমে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার পর্যবেক্ষণ দেন। তিনি বলেন, রাজউকের ক্ষেত্রে দুই ধরনের ক্যাটাগরিতে প্লট দেওয়া হয়। একটা জেনারেল, আরেকটা স্পেশাল। এ মামলার বিষয়টি স্পেশাল ক্যাটাগরি।

শেখ হাসিনা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভিন্নমত পোষণ করলেই তাকে শত্রু মনে করা হয়: ফখরুল
  • ঈশ্বরদীতে যা ঘটে গেল তা হঠাৎ করে হয়নি: জামায়াত আমির
  • সিলেটের ছয়টি আসনে বিজয় নিশ্চিত করতে বিএনপি ঐক্যবদ্ধ: বিএনপি নেতা কাইয়ুম চৌধুরী
  • জনগণের সম্পত্তির প্রতি শেখ হাসিনার ছিল লোভাতুর দৃষ্টি: আদালত
  • মুক্ত দেশ না হয়েও চীন কীভাবে উদ্ভাবনে এগিয়ে
  • ডা. মিলন শহীদ হলো, গণতন্ত্র এল কি?
  • হাসিনাকে ফেরত চেয়ে বাংলাদেশের দেওয়া চিঠি পরীক্ষা করে দেখছে ভারত: রণধীর জয়সওয়াল
  • প্রান্তিক মানুষের অন্তর্ভুক্তি গণতন্ত্রের বড় চ্যালেঞ্জ: হোসেন জিল্লুর রহমান
  • ঝামেলা ছাড়াই নির্বাচন হবে: ফখরুল