বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনের গেজেট স্থগিত ও শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে করা রিট শুনানির সময় এক আইনজীবীর ‘আক্রমণাত্মক’ মন্তব্যে উষ্মা প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। ওই সময় ঘটনাটি অপরিচিত কেউ করে থাকতে পারে উল্লেখ করে আদালতে নিঃস্বার্থ ক্ষমা চান সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও ইশরাক হোসেনের আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।

বৃহস্পতিবার ইশরাক হোসেনকে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে করা রিট আবেদন খারিজ করেন হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ। আদেশ ঘোষণার আগে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো.

আকরাম হোসেন চৌধুরি বলেন, ‘আমার ব্রাদার জাজ আইনজীবীদের উদ্দেশে কথা বলবেন এবং তিনিই আজকের আদেশ ঘোষণা করবেন।’

পরে বেঞ্চের কনিষ্ঠ বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরী বলেন, ‘গতকাল (বুধবার) শুনানি শেষ হওয়ার পর কোনো একজন আদালতের বিষয়ে আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেছেন। এটি আমাদের নজরে এসেছে।’ 

এ সময় বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘ক্লায়েন্ট আসবে-যাবে। বার-বেঞ্চ থাকবে।’

পরে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, তৃতীয় পক্ষ বা অপরিচিত বা সিজনাল কেউ বলতে পারে। তবে যেই বলুক তার পক্ষে নিঃশর্ত ক্ষমা চাচ্ছি। 

এরপর বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরী আদেশ ঘোষণা করেন। ইশরাক হোসেনের শপথ নিয়ে দায়ের করা রিট সরাসরি খারিজ (সামারিলি রিজেক্ট) করে আদেশ দেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইশর ক হ স ন ব চ রপত আইনজ ব

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশ ১০ জুলাই

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশের জন্য ১০ জুলাই তারিখ ধার্য করা হয়েছে।

বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আজ সোমবার এই তারিখ ধার্য করেন। ট্রাইব্যুনালে অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

মামলায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন আসামি। আসামিদের মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক। তাঁদের পক্ষে আমির হোসেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী।

অভিযোগ গঠন বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের আজকের শুনানিতে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের অব্যাহতির আবেদন করেন তাঁদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন।

শুনানিতে আমির হোসেন বলেন, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত অপরাধের সঙ্গে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাঁরা সম্পূর্ণ নির্দোষ ও নিরপরাধ।

আমির হোসেন বলেন, ২০০৯ সাল থেকে শেখ হাসিনা পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড করেছেন। শেখ হাসিনা আন্দোলনকারীদের নির্মূল করার নির্দেশ দেননি। তাঁর জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে মামলায় সুপিরিয়র রেসপনসেবলিটির (সর্বোচ্চ দায়) অভিযোগ আনা হয়েছে। আসাদুজ্জামান খানও সুনামের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। এই দুই আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ উদ্দেশ্যমূলক ও কাল্পনিক।

শুনানিতে আমির হোসেন বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ৩০ লাখ বাংলাদেশিকে হত্যা ও ২ লাখ মা-বোনেরা ইজ্জত নষ্ট করা হয়েছিল। সে সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য এই আইন (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন) করা হয়েছে। ২০২৪ সালে দেশে কোনো যুদ্ধ হয়নি। এমন আন্দোলন আরও হয়েছে। তাই এই আইনে জুলাইয়ের মতো ঘটনার বিচার করা যায় না।

শুনানিতে আমির হোসেন বলেন, শেখ হাসিনা আন্দোলনকারীদের রাজাকারের নাতিপুতি বলেননি। তাঁর বক্তব্যের অপব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনকারীদের লাশ কবর দিতে বাধা, লাশে আগুন দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন ও মনগড়া, যার কোনো দালিলিক প্রমাণ নেই।
শুনানিতে আমির হোসেন বলেন, রংপুরে আবু সাঈদকে হত্যার যে অভিযোগ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে, তাও সত্য নয়। আবু সাঈদ হত্যায় তিনি মর্মাহত হয়েছিলেন। এমনকি তাঁর পরিবারকে ঢাকায় এনে শেখ হাসিনা সাহায্য করেছেন।

শুনানিতে আমির হোসেন বলেন, রাজধানীর চানখাঁরপুলে ছয়জনকে হত্যা এবং আশুলিয়ায় ছয়জনের লাশে আগুন দেওয়ার ঘটনা শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর ঘটেছে। এসব অভিযোগও ভিত্তিহীন।

এসব যুক্তির ভিত্তিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা থেকে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের অব্যাহতি চান রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন।

মামলার অপর আসামি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন গ্রেপ্তার আছেন। তাঁকে আজ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তাঁর আইনজীবী জানান, অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানিতে তিনি অংশ নেবেন না।

আজ শুনানির পর ট্রাইব্যুনাল এই মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশের জন্য তারিখ ধার্য করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘বিতর্কিত’ বিচারকদের অপসারণ চায় সুপ্রিমকোর্ট বার
  • বিচারকরাও চান খবরের শিরোনাম হয়ে অবদান রাখতে: অ্যাটর্নি জেনারেল 
  • ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’-এ অশ্লীলতার অভিযোগ, নির্মাতা-শিল্পীদের আইনি নোটিশ
  • ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’-এ অশ্লীলতার অভিযোগ, নির্মাতা-শিল্পীদের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ
  • ফারুক খানের চিকিৎসার বিষয়ে আদেশ কাল
  • জঙ্গি সন্দেহে তুলে নেওয়ার ৫ বছর পর মুক্তি পেলেন খুবির দুই
  • আইনজীবী পরিবর্তনে ভুক্তভোগীদের ভোগান্তির অবসান চান আইন উপদেষ্টা
  • হাইকোর্টের বেঞ্চ বিভাগীয় শহরে না পাঠাতে আইনজীবীদের বিক্ষোভ 
  • হাইকোর্ট বেঞ্চ বিভাগীয় শহরে স্থানান্তর না করতে প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন
  • শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশ ১০ জুলাই