বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে বৈঠকে বকেয়া পরিশোধে আদানি পাওয়ারের চাপ
Published: 23rd, May 2025 GMT
বাংলাদেশ সরকারকে দ্রুত বকেয়া পরিশোধের আহ্বান জানিয়েছে ভারতের আদানি পাওয়ার। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এস বি খাইলিয়া বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ফারজানা মমতাজের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এই দাবি জানান।
ভারতের ঝাড়খণ্ডে আদানির ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের আদানির এ বিদ্যুৎকেন্দ্র অবস্থিত। বিদ্যুতের বিল সাত মাস ধরে বকেয়া রয়েছে বলে জানান খাইলিয়া। তার দাবি অনুযায়ী, বকেয়া টাকার পরিমাণ প্রায় নয়শ’ মিলিয়ন ডলার। যদিও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) মতে এই অঙ্ক কম, সাতশো মিলিয়নের নিচে।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন আদানি পাওয়ারের বাণিজ্য বিভাগের প্রধান এম আর কৃষ্ণা রাও। তারা বিদ্যুৎ বিভাগের সচিবকে বলেন, ব্যাংকঋণের চাপে কোম্পানিটি আর্থিকভাবে বড় ধরনের চাপে রয়েছে। বিল পরিশোধে দেরি হওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে।
এ সময় খাইলিয়া জানুয়ারিতে জমা দেওয়া একটি প্রস্তাবের উল্লেখ করে বলেন, জুনের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ করলে বিলম্ব মাশুল বাবদ প্রায় পঞ্চাশ মিলিয়ন ডলার ছাড় দেওয়া হবে। এতদিনেও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ওই প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
এ বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ফারজানা মমতাজ জানান, এটি ছিল কেবল একটি সৌজন্য সাক্ষাৎ, কোনো সিদ্ধান্তমূলক আলোচনা হয়নি। তিনি বলেন, ‘আমরা নিয়মিত বিল পরিশোধ করছি। তবে পুরো টাকা একবারে পরিশোধ সম্ভব হচ্ছে না অর্থ মন্ত্রণালয়ের কিছু নীতিগত সীমাবদ্ধতার কারণে।’
বিদ্যুৎ বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বকেয়া নিয়ে আবারও আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে । শিগগিরই আরেকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে। এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে আদানির প্রতিনিধিদলের সদস্যরা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানরেজাউল করিমের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন।
জানা গেছে, অর্ন্তবর্তী সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আদানির সঙ্গে স্বাক্ষরিত বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি পর্যালোচনা করছে। চুক্তিটি দেশের স্বার্থ সংরক্ষণ করছে কি না, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পর শ ধ
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত
নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।
কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।
১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)
আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)
ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।
৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)
ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।
৪. ঋণের মেয়াদ
কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।
৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)
শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।
৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)
ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।
৭. প্রসেসিং ফি
আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।
৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)
বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।
৯. জামানত (কোলেটারাল)
ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।
১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও
আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।