ড. ইউনূস থাকুক, তবে ভোট ডিসেম্বরেই চায় বিএনপি
Published: 24th, May 2025 GMT
প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের আলোচনা সামনে আসার পরও জাতীয় নির্বাচনের পথনকশার (রোডম্যাপ) দাবিতে অনড় বিএনপি। বিএনপির ভেতরের সূত্রগুলো বলছে, তাদের চাওয়া প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. ইউনূস থাকুক, কিন্তু ডিসেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা করুক।
আবার অন্তর্বর্তী সরকারের জন্যও এই মুহূর্তে বিএনপির সমর্থন অনেক জরুরি। শুধু নির্বাচনই নয়, দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি সামাল দিতে এবং সফলভাবে সরকারের দায়িত্ব শেষ করতে এটা গুরুত্বপূর্ণ। তবে সরকার-ঘনিষ্ঠদের চাওয়া, সমর্থনের ঘোষণাটা বিএনপির দিক থেকে আসুক।
যদিও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ গতকাল শুক্রবার বলেছেন, একান্তই যদি তিনি (ড.
অবশ্য প্রকাশ্যে এমন বক্তব্য থাকলেও আজ শনিবার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলতে তাঁর সরকারি বাসভবন যমুনায় যাবেন বিএনপি নেতারা। অন্যদিকে সন্ধ্যায় সরকারপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধিরা। যমুনা এবং রাজনৈতিক সূত্র সমকালকে এ তথ্য জানিয়েছে।
জামায়াতে ইসলামী, চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), হেফাজতে ইসলামের মতো দলগুলোর সমর্থন আগের মতোই পাচ্ছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরা সংস্কারের পর নির্বাচনের কথা বলছে।
বিএনপির সূত্র জানায়, তারা গতকাল মিত্র দলগুলোর সঙ্গে কথা বলেছে। এই দলগুলো আগে থেকেই নির্বাচনের বিষয়ে বিএনপির সঙ্গে একমত। প্রধান উপদেষ্টার বিষয়েও এখন তারা বিএনপির মতকে সমর্থন করছে। ইতোমধ্যে কোনো কোনো নেতা ফেসবুকে এ বিষয়ে মত প্রকাশও করেছেন। বামপন্থি দলগুলো নির্বাচনের রোডম্যাপ চাচ্ছে।
ড. ইউনূসের পদত্যাগের আলোচনার পর রাজনৈতিক দলগুলোর নানামুখী তৎপরতা শুরু হয়। বৃহস্পতিবার রাত থেকে বিভিন্ন দল পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ করছে বলে খবর পাওয়া গেছে। একাধিক দল নিজেদের মধ্যে বৈঠকও করেছে। উত্তেজনা প্রশমনেও কেউ কেউ কাজ করছেন বলে সূত্র জানায়।
ব্যাংককে চিকিৎসাধীন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সমকালকে বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক সংকট দূরের একমাত্র পথ দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা। অন্য কথা বলে লাভ নেই। বিচার ও সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া।
এনসিপির পর জামায়াতও নির্বাচনের পাশাপাশি সংস্কারের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেছেন, অনেক ত্রুটি থাকলেও জাতীয় স্বার্থে অন্তর্বর্তী সরকারকে টিকিয়ে রাখতে হবে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর বিশ্বাসের ঘাটতি দেখা যাচ্ছে, নির্বাচন ও সংস্কারের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করলে সবার সন্দেহ-সংশয় কেটে যাবে।
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম গতকাল ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে জানান, ড. ইউনূসকে সংস্কার, বিচার ও ভোটাধিকারের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে হবে। তাঁকে দায়িত্বে থেকেই রাজনৈতিকভাবে সমস্যার সমাধান করতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র, সংস্কার ও নির্বাচন করতে হবে। নির্বাচনের আগে বিচারের রোডম্যাপ আসতে হবে।
সরকারকে সমর্থন জানিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্বশীল আচরণের আহ্বান জানিয়েছেন চরমোনাই পীর তথা ইসলামী আন্দোলনের আমির সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর চাওয়া-পাওয়ার বিষয় আছে, কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারকে চাপে ফেলে দাবি-দাওয়া আদায়ের রাজনীতি ও পরস্পরবিরোধী রাজনৈতিক সংস্কৃতি থেকে সরে আসতে হবে।
বিএনপির অবস্থান
বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে দুষছেন বিএনপি নেতারা। দলের শীর্ষ নেতারা বলছেন, সরকার নির্বাচন থেকে সরে গিয়ে নানা ইস্যুতে সময়ক্ষেপণ করছে। তারা নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে পারছে না। সবার মধ্যে সংশয়, সন্দেহ আর সৃষ্ট বিভেদ থেকে বর্তমান ঘোলাটে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি নেতারা বলছেন, উত্তরণের একমাত্র উপায় হচ্ছে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা। নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি হলে সংকট আরও গভীর হতে পারে।
বিএনপি এবং তার মিত্র দলগুলো বলছে, রাষ্ট্র পরিচালনায় আবেগতাড়িত হওয়ার কিছু নেই। নিজের দুর্বলতায় পরিস্থিতি সামলাতে যখন সরকারের ব্যর্থতা স্পষ্ট হচ্ছে, তখন পদত্যাগের বার্তা রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি হুমকি বা চাপ বলে মনে করছেন তারা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ড. ইউনূস পদত্যাগ করতে চাইলে, তা তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত হতে পারে। বিএনপি কখনও তাঁর পদত্যাগ দাবি করেনি। নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা না করে যদি তিনি দায়িত্ব ছেড়ে দিতে চান, তা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে একান্তই যদি তিনি দায়িত্ব পালনে অপারগ হন, তাহলে রাষ্ট্র তো বসে থাকবে না। রাষ্ট্র নিজ দায়িত্বে বিকল্প ব্যবস্থা নেবে। পৃথিবীতে কেউ অপরিহার্য নয়। তিনি বলেন, ড. ইউনূস একজন বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে বিষয়টির গুরুত্ব বুঝবেন এবং জাতির প্রত্যাশা অনুযায়ী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করবেন।
গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক নুরুল হক নুর সমকালকে বলেন, সরকার যখন নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ তখন তাদের ইমেজ ধরে রাখতে এবং নির্বাচনী রোডম্যাপের দাবি যখন জোরালো হচ্ছে তখন এ ধরনের একটা নাটক তৈরি করে দাবিকে এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল নিয়েছে।
শক্তি দেখিয়েছে বিএনপি
বিএনপি নেতারা বলেন, জুলাই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সংবিধান পরিবর্তন, গণভোট, জুলাই সনদ এবং সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর বিভক্তি সামনে আসে। এর পর সংস্কার এবং নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বড় বিভক্তি দেখা দেয়।
এ অবস্থায় নির্বাচন, করিডোর, বন্দর, সংস্কার, সেনাপ্রধানের বক্তব্য, প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের আলোচনা, সরকারের ছয় উপদেষ্টার পদত্যাগের পাল্টপাল্টি দাবি এবং নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে কর্মসূচিতে পরিস্থিতি জটিল হয়েছে, অবিশ্বাস বেড়েছে।
বিএনপির অভিযোগ, প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ না পেয়ে গত বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে দলের অবস্থান তুলে ধরতে হয় তাদের। এতে বলা হয়, রোডম্যাপ ঘোষণা করা না হলে বিএনপির পক্ষে এই সরকারের প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত রাখা কঠিন হবে। এখন দলটি মনে করছে, যাই ঘটুক নির্বাচন হতেই হবে। নির্বাচনী রোডম্যাপ দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘোষণা করতে হবে।
জামায়াত এবং অন্যরা তৎপর
প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের আলোচনার পর জামায়াত সর্বদলীয় বৈঠকের আহ্বান জানায়।
জামায়াতের এক শীর্ষনেতা সমকালকে বলেন, সরকারের সঙ্গে সেনাবাহিনীর দূরত্ব অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। একটি বড় দল সেনাবাহিনীর বক্তব্যকে উৎসাহের সঙ্গে প্রচার করছে। অস্বাভাবিক কিছু ঘটলে, তাদেরই ক্ষতি হবে বেশি।
বৃহস্পতিবার রাতেই ইসলামী আন্দোলনের কার্যালয়ে গণঅধিকার পরিষদ, এবি পার্টি, এনসিপি এবং বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নেতারা বৈঠকে বসেন। তারা সরকারের প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানান। যদিও গতকাল গণঅধিকার পরিষদ তিন উপদেষ্টার পদত্যাগ এবং নির্বাচনের রোডম্যাপ চেয়েছে।
গতকাল এবি পার্টিসহ কয়েকটি দলের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু সমকালকে বলেছেন, সবাইকে সমঝোতার স্বার্থে নমনীয় হতে হবে। উত্তেজনা প্রশমনই এখন প্রধান কাজ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন উপদ ষ ট র পদত য গ উপদ ষ ট র পদত য গ র ব এনপ র স পর স থ ত দলগ ল র সরক র র এনস প গতক ল ইসল ম ইউন স
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশি শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতে পারবে হার্ভার্ডে: মার্কিন আদালত
যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতে পারবেন। সম্প্রতি বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি বন্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন আদালত। ফলে বিশ্বের প্রভাবশালী উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে ভর্তির ক্ষেত্রে নতুন করে সুসংবাদ পেলেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, হার্ভার্ড প্রশাসন ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে আদালতের দ্বারস্থ হন। এর পরপরই আদালত ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত সাময়িক স্থগিত করে দেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার এক মার্কিন আদালত ট্রাম্প প্রশাসনের একটি নীতি সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন। এই নীতি অনুযায়ী, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি করাতে পারত না। হার্ভার্ডের অভিযোগ, এই নীতি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৃহত্তর চক্রান্তের অংশ। কারণ, হার্ভার্ড তাদের ‘শিক্ষাগত স্বাধীনতা’ বিসর্জন দিতে রাজি হয়নি।
মার্কিন আদালতের এই আদেশের ফলে হাজার হাজার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী সাময়িক স্বস্তি পেয়েছেন। এই আদেশ বলবৎ থাকলে তাদের অন্য প্রতিষ্ঠানে চলে যেতে হতো। হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ ট্রাম্পের ওই নীতিকে মার্কিন সংবিধান ও অন্যান্য ফেডারেল আইনের ‘প্রকাশ্য লঙ্ঘন’ বলে অভিহিত করে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয় এবং ৭ হাজারের বেশি ভিসাধারীর ওপর ‘তাৎক্ষণিক ও ধ্বংসাত্মক প্রভাব’ পড়বে।
শুক্রবার বোস্টন ফেডারেল আদালতে দায়ের করা মামলায় ৩৯৮ বছরের পুরোনো হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় বলেছে, ‘আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ছাড়া হার্ভার্ড, হার্ভার্ড নয়। বর্তমান শিক্ষাবর্ষে হার্ভার্ডে প্রায় ৬ হাজার ৮০০ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী আছে, যা মোট শিক্ষার্থীর ২৭ শতাংশ।’
এই পদক্ষেপ হোয়াইট হাউস ও হার্ভার্ডের মধ্যে দীর্ঘদিনের চলমান বিতর্কের সর্বশেষ সংযোজন। ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়, আইন সংস্থা, সংবাদমাধ্যম, আদালত ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের রাজনৈতিক এজেন্ডার সঙ্গে মেলাতে চাইছে। রিপাবলিকানরা দীর্ঘদিন ধরেই অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে বামপন্থী পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করে আসছে।
এর আগে ট্রাম্প প্রশাসনের আদেশের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ। মামলার একদিন আগেই যুক্তরাষ্ট্রের ‘হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ’ (ডিএইচএস) জানায়, তারা হার্ভার্ডের শিক্ষার্থী ভিসা কর্মসূচির অ্যাকসেস বাতিল করছে। এই কর্মসূচির আওতায়ই বিদেশি শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করতে পারেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগ, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ইহুদিবিরোধিতার বিরুদ্ধে যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয়নি এবং নিয়োগ ও ভর্তি প্রক্রিয়ায় সংস্কার আনেনি। তবে এসব অভিযোগ জোরালোভাবে অস্বীকার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
হার্ভার্ড মামলায় বলেছে, ‘কলমের এক খোঁচায় সরকার আমাদের ছাত্রসংখ্যার এক-চতুর্থাংশকে মুছে ফেলতে চেয়েছে। অথচ এই শিক্ষার্থীরাই বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য ও কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।’
বিশ্ববিদ্যালয় আদালতের কাছে আবেদন করেছে, যাতে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের বৃহস্পতিবারের সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়। এই সিদ্ধান্তেই হার্ভার্ডের স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর প্রোগ্রাম সার্টিফিকেশন বাতিল করা হয়েছে।
হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গারবার এক চিঠিতে বলেছেন, ‘আমরা এই বেআইনি ও অযৌক্তিক পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানাই। সরকার একের পর এক পদক্ষেপ নিয়ে হার্ভার্ডকে শাস্তি দেওয়ার চেষ্টা করছে। কারণ, আমরা আমাদের একাডেমিক স্বাধীনতা বিসর্জন দিতে রাজি হইনি।’
ট্রাম্প প্রশাসন শুধু হার্ভার্ড নয়, অন্য শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেও নিশানায় রেখেছে। তারা দাবি করেছে, এসব প্রতিষ্ঠানকে ফিলিস্তিনপন্থী কর্মীদের দমন ও রক্ষণশীল মতামতের প্রতি বৈষম্য দূর করতে হবে। এ ছাড়া দেশজুড়ে ডজনখানেক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির মতো প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তারা কিছু ছাড়ও আদায় করে নিয়েছে।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে হোয়াইট হাউস হার্ভার্ডের জন্য বরাদ্দ ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের ফেডারেল অর্থায়ন স্থগিত করে এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিশ্ববিদ্যালয়টির করছাড় সুবিধা বাতিলেরও হুমকি দেন। এই অর্থায়ন স্থগিতের পরিপ্রেক্ষিতে হার্ভার্ড আগেও একটি মামলা করেছিল, যেখানে তারা ট্রাম্প প্রশাসনের ওই পদক্ষেপ বন্ধের দাবি জানায়।
উল্লেখ্য, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের কেমব্রিজে অবস্থিত এবং এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রাচীন ও খ্যাতনামা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে শীর্ষস্থানীয়।