জ্যৈষ্ঠের পাহাড়ি ঢলে ভেঙে গেল ধোপাছড়ি খালের ওপর নির্মিত কাঠের সেতুটি। ফলে চন্দনাইশের দুর্গম পাহাড়ি জনপদ ধোপাছড়ি ইউনিয়নের দুই পারের মানুষ ব্যাপক দুর্ভোগে পড়েছেন। আবারও নৌকায় করে মানুষকে পারাপার করতে হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে পাহাড়ি অঞ্চলটিতে অঝোরধারায় বৃষ্টি নামে; যা বিরামহীন চলে বিকেল পর্যন্ত। প্রবল বর্ষণের ফলে পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢল ধোপাছড়ি খাল হয়ে পড়ে শঙ্খনদীতে। ঢলের তীব্রতায় বেলা ৩টার দিকে সেতুটি মাঝখান বরাবর ভেঙে যায়। এ সময় সেতুর ওপর কেউ না থাকায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
স্থানীয়ভাবে জানা যায়, ধোপাছড়ি ইউনিয়নে রয়েছে নদী, পাহাড় ও সমতলের সৌন্দর্য। এটি এখন পর্যটন এলাকা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। ইউনিয়নে যুগ যুগ ধরে একসঙ্গে বাস করে আসছেন বাঙালি, মারমা, ত্রিপুরাসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজন। সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে ইউনিয়নটি অনেক পিছিয়ে রয়েছে।
ধোপাছড়ি ইউনিয়নের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত ধোপাছড়ি খাল এই ইউনিয়নের মানুষকে দু’ভাগে বিভক্ত করেছে। পাহাড় থেকে সৃষ্টি হয়ে খালটি মিশেছে শঙ্খ নদীর সঙ্গে। খালটি দিয়ে প্রতি বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলের পানি তীব্র গতিতে প্রবেশ করে শঙ্খ নদীতে। বাঁশের সাঁকোতে ঝুঁকি নিয়ে খাল পারাপার হতেন ইউনিয়নের ১ নম্বর ও ২ নম্বর ওয়ার্ড শঙ্খকুল, চেমিরমুখ এলাকার সহস্রাধিক মানুষ। অনেক আবেদনে নিবেদনের
পরও খালে হয়নি পাকা সেতু।
সর্বশেষ ২০২৩ সালের অক্টোবরে চন্দনাইশ উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০০ মিটার দীর্ঘ ও ৭ ফুট প্রস্থের একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়। তখন থেকেই সেতুটি দিয়ে মানুষ পায়ে হেঁটে পারাপার করতেন। পাশাপাশি মোটর সাইকেল, সিএনজি চালিত অটোরিকশা, ব্যাটারি রিকশা, টমটমসহ ছোট ছোট যানবাহনও চলাচল করত। কিন্তু ধোপাছড়িবাসীর দুঃখ যেন শেষ হবার নয়। গত বৃহস্পতিবার অবিরাম বর্ষণে পাহাড়ি ঢলে সেতুটি ভেঙ্গে যায়। এতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছের শঙ্খকুল ও চেমিরমুখ এলাকার বাসিন্দারা। বিশেষ করে স্কুল, কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থীরা বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
লাকসামে অস্ত্রের মুখে এতিমখানার ৫ গরু লুট, আহত ৮
কুমিল্লার লাকসামে একটি এতিমখানার খামার থেকে গত শুক্রবার পাঁচটি গরু লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাত দল। এ সময় তাদের হামলায় মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ আটজন আহত হন। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ থানায় মামলা করেছে।
গত শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) ভোরে উপজেলার আজগরা ইউনিয়নের বড়বাম আল-জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদরাসা ও এর সংলগ্ন এতিমখানার খামারে ঘটনাটি ঘটে। তিন মাস আগেও এই খামারের সাতটি গরু লুট করেছিল ডাকাতরা।
আরো পড়ুন:
খুলনায় বিএনপি নেতার অফিসে বোমা-গুলি, শিক্ষক নিহত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিপক্ষের হামলা: গুলিবিদ্ধ যুবকের মৃত্যু
সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে ঘটনাটি জানাজানি হয়।
এলাকাবাসী জানান, মাদরাসার আয় এই খামারের মাধ্যমে হয়। তিন মাসের ব্যবধানে দুই দফা ডাকাতি হওয়ায় শিক্ষক ও ছাত্রদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। খামারের বড় গরুগুলো লুট হয়ে যাওয়ায় এক পাশ ফাঁকা পড়ে আছে। বর্তমানে খামারে ১১টি গরু অবশিষ্ট রয়েছে।
খামারের সামনে পড়ে আছে ডাকাত দলের ব্যবহৃত তুষের বস্তা, যা দিয়ে গরুগুলো পিকআপ ভ্যানে তোলে তারা। গরু উদ্ধার এবং ডাকাত দলের সদস্যদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
মামলার বাদী এবং মাদরাসার শিক্ষক ইমরান হোসাইন জানান, গত শুক্রবার ভোরে একদল ডাকাত দুটি পিকআপ ভ্যান নিয়ে এসে অস্ত্রের মুখে মাদরাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে। শিক্ষকদের মারধর করে তাদের মোবাইল ফোন নিয়ে যায় ডাকাতরা। তারা খামারে ঢুকে কেয়ারটেকার উৎসব হোসেনকে বেঁধে একে একে পাঁচটি গরু পিকআপ ভ্যানে তুলে নেয়। শিক্ষক ও ছাত্রদের চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে আসলে ডাকাতরা পালিয়ে যায়।
মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা শরীফুল আলম খন্দকার জানান, খামারের আয়ের ওপর ভিত্তি করে মাদরাসার কার্যক্রম চলে। তিন মাস আগেও এই খামারের সাতটি গরু নিয়ে যায় ডাকাতরা।
লাকসাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজনীন সুলতানা বলেন, “লুট হওয়া গরু উদ্ধার এবং ডাকাতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। মাদরাসার শিক্ষক ইমরান হোসাইন বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন।”
ঢাকা/রুবেল/মাসুদ