এবাদতকে হেনস্তা, দল থেকে বাদ দেওয়ার হুমকি গামিনির
Published: 26th, May 2025 GMT
বিসিবির লঙ্কান কিউরেটর গামিনি ডি সিলভার আচরণ সমস্যার কথা কর্মকর্তাদের ভালো করেই জানা। সহকর্মীদের সঙ্গে টুকটাক লেগেই থাকে তাঁর। অভিযোগ আছে নিউজিল্যান্ডের কিউরেটর অ্যান্ডি অ্যাটকিনসন বিসিবির চাকরি ছেড়ে গেছেন গামিনির কারণে। সব ছাপিয়ে কিউরেটর গামিনি নতুন করে আলোচনায় জাতীয় দলের পেসার এবাদত হোসেনকে হেনস্তা করে।
বিসিবি থেকে জানা গেছে, গত শুক্রবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে টাইগার পেসারকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন বোর্ডের এ কিউরেটর।
নিউজিল্যান্ড ‘এ’ দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের দ্বিতীয় চার দিনের ম্যাচ ছিল মিরপুরে। এ ম্যাচের একাদশে না থাকায় বিরতিতে সেন্টারের সাইড উইকেটে পেস বোলিং কোচ নাজমুল হোসেনকে নিয়ে স্পট বোলিং করেন এবাদত। উইকেট ভালো না হওয়ায় মন্তব্য করায় গামিনি ক্ষেপে বাজে মন্তব্য করেন। এরপর উভয়ে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান বলে জানান একজন প্রত্যক্ষদর্শী। একপর্যায়ে এবাদতকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন কিউরেটর।
ওই প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘গামিনি ঝগড়া করে থেমে গেলে সমস্যা ছিল না। গ্রান্ডস কমিটির চেয়ারম্যান মাহাবুবুল আনাম স্যারকে বলে জাতীয় দল থেকে এবাদতকে বাদ দেওয়ার হুমকি দেন তিনি। একজন কিউরেটর তো জাতীয় দলের ক্রিকেটারকে এভাবে হুমকি দিতে পারেন না।’
এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে গতকাল নাজমুল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ল্যান্ডিং জোনে পিচ ঠিক ছিল না। ল্যান্ড করার সঙ্গে সঙ্গে মাটি ভেঙে গর্ত হচ্ছিল। এবাদত মাত্র ইনজুরি থেকে ফিরেছে। সে উদ্বেগ থেকে বলেছে, কী উইকেট বানান, ভালো উইকেট বানাতে পারেন না। গামিনির উত্তর ছিল তোমার কাজ করো, আমার কাজ নিয়ে কথা বলতে হবে না। এরপর তো সে হুমকি দেয় মাহাবুব ভাইকে বলে জাতীয় দল থেকে বাদ দেওয়ার ব্যবস্থা করবে। আমি তাকে আমার মতো করে যা বলার বলেছি।’
এ নিয়ে এবাদতকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘জলে বাস করে কুমিরের সঙ্গে লড়াই করা যায় না। আমার সঙ্গে যা কিছু হয়েছে, নাজমুল ভাই দেখেছেন। আমি যেখানে জানানোর, সেখানে জানিয়েছি। বাকি সিদ্ধান্ত তাদের।’
তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গামিনির কাছে হেনস্তা হয়ে বোলিং না করে ড্রেসিংরুমে ফিরে এবাদত টিম ম্যানেজমেন্টকে বিষয়টি জানান। তৎক্ষণাৎ ম্যানেজার শরিফুল ইসলাম সেলিম গিয়ে গামিনির কাছে ঘটনা জানতে চাইলে নিজের ভুল স্বীকার করেন বলে সমকালকে নিশ্চিত করেন কোচ মিজানুর রহমান বাবুল।
ওই ঘটনার পর ক্রিকেটাররা ক্ষিপ্ত হয়ে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের কাছে যেতে চেয়েছিলেন। এর আগেই পরিস্থিত স্বাভাবিক করেন ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদীন ফাহিম। শনিবার ফাহিমের কাছে ঘটনা বিস্তারিত জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আমি নৈতিক জায়গা থেকে কিছু বলতে পারব না। আমার কাজ হলো সমস্যার সমাধান করা।’
গতকাল ফোনে ম্যানেজার সেলিমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। এবাদতকে হেনস্তা ও হুমকি দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে গামিনি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে কিছুই হয়নি। সে উইকেট চেয়েছে, দিয়েছি। বৃষ্টির কারণে উইকেট একটু খারাপ হতেই পারে। আমি ওর কথার কোনো উত্তর দিইনি। হুমকি দেওয়ার কথা ভিত্তিহীন।’
এবাদত ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগে অভিযোগ করেছেন বলা হলে গামিনির উত্তর ছিল, ‘আমাকে তো কেউ ডাকেনি।’ যদিও সমকালের সঙ্গে কথা বলার ৩ ঘণ্টা আগে গামিনিকে ডেকে সতর্ক করেছেন নাজমুল আবেদীন। এ প্রসঙ্গে গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান মাহাবুবুল আনামকে ফোন করা হলে কথা বলার সময় পাননি তিনি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে বাসদ কার্যালয়ে পুলিশের অভিযান, আটক ২২
ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকদের আন্দোলন কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সিলেট কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে ২২ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে নগরের আম্বরখানাস্থ বাসদ কার্যালয় থেকে তাদের আটক করে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
বাসদ নেতারা অভিযোগ করেছেন, সকালে নিয়মিত পাঠচক্র চলাকালে হঠাৎ পুলিশ কার্যালয় ঘেরাও করে নেতাকর্মীদের ধরে নিয়ে যায়।
আরো পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের অর্থ সহায়তা দিল শিবির
বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক মানে এগিয়ে নিতে সিকৃবি উপাচার্যের অঙ্গীকার
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘‘নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও আজ (শনিবার) ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকরা নগরে কর্মসূচি পালনের চেষ্টা করেছিল। এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে অভিযোগের সত্যতা মিললে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে। গ্রেপ্তারদের নাম পরবর্তীতে জানানো হবে।’’
বাসদের সিলেট জেলা সভাপতি আবু জাফর বলেন, ‘‘ব্যাটারিচালিত রিকশার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে আজ (শনিবার) চৌহাট্টা থেকে আমাদের পূর্বঘোষিত ‘ভুখা মিছিল’ কর্মসূচি ছিল। কিন্তু শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) রাতে পুলিশ নিষেধাজ্ঞা দেয়। এরপর আমরা কর্মসূচি স্থগিত করি। তবে সব শ্রমিককে তা জানানো সম্ভব হয়নি। সকালে শহীদ মিনার এলাকায় কয়েকজন শ্রমিক জড়ো হন। কিন্তু কার্যালয়ে শুধু পাঠচক্র চলছিল। সেখানে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ২২ নেতাকর্মীকে ধরে নিয়ে গেছে।’’
এর আগে একই ইস্যুতে শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) মধ্যরাতে নগরের আখালিয়া কালীবাড়ী এলাকার বাসা থেকে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সিলেটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন সুমনকেও আটক করে পুলিশ।
গত মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চৌহাট্টা-জিন্দাবাজার সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা শ্রমিকরা। ওই সময় আনোয়ার হোসেন সুমনসহ কয়েকজন বামঘরানার রাজনীতিকও আন্দোলনে অংশ নেন। আন্দোলনকারীরা ব্যাটারি রিকশা চলাচলের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ ১১ দফা দাবি তুলে ধরে তা মেনে নিতে রবিবার (২ নভেম্বর) পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন। সেই আলটিমেটাম শেষ হওয়ার একদিন আগে সিপিবির সুমন ও বাসদের ২২ নেতাকর্মীকে আটক করা হলো।
শনিবার (১ নভেম্বর) বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরী বলেন, ‘‘ব্যাটারি রিকশা শ্রমিকদের আন্দোলনে তৃতীয় পক্ষ ইন্ধন দিচ্ছে। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে সংঘাতের আশঙ্কায় রবিবারের কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।’’
গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে সিলেট মহানগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধে অভিযান শুরু করে পুলিশ। পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরীর উদ্যোগে পরিচালিত এই অভিযানে শতাধিক রিকশা জব্দ ও একাধিক চার্জিং পয়েন্টের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এরপর থেকে নগরে ব্যাটারি রিকশা চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ঢাকা/নুর/বকুল