ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরাতে আন্তর্জাতিক বিধি অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ আছে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী। তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক বিধি অনুযায়ী পদক্ষেপের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে।

ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব এ তথ্য জানান। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের আসন্ন জাপান সফর নিয়ে জানাতে আজ সোমবার ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনাকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন। এ নির্দেশ প্রতিপালনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপের বিষয়ে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত সচিব বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে ফেরাতে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করব। তবে আদালতের নির্দেশনা দেশের মধ্যেই কার্যকরী হয়। আমরা আদালতের সিদ্ধান্ত দেশে দ্রুত কার্যকর করতে পারলেও দেশের বাইরে সেটা কার্যকর হয় না।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সীমানার বাইরে বাংলাদেশের কোনো আইন আমরা আদালত যেভাবে চাইবেন, সেভাবে ব্যবহার করতে পারব না, যতক্ষণ না যার বিরুদ্ধে কিংবা যে সংগঠনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, সে বা সেই সংগঠন দেশের ভেতরে না থাকে। সে ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বিধি অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ আছে এবং আমরা সেভাবে কাজ করছি।’

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সন্তুষ্ট কি না জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘এখানে সন্তুষ্টির বিষয় নেই। আমরা ইস্যু নিয়ে কাজ করি এবং তা যদি সমাধান হয়, তাহলে আমাদের সন্তুষ্টি থাকে।’

আরও পড়ুন‘পুশ ইন’ ঠেকাতে ভারতকে বার্তা দেবে বাংলাদেশ০৯ মে ২০২৫

দুই দেশের মধ্যে বন্দিবিনিময় চুক্তি রয়েছে, সে চুক্তির আওতায় শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব কি না জানতে চাইলে রুহুল আলম সিদ্দিকী বলেন, সে ক্ষেত্রে উভয় দেশের সম্মতি থাকতে হবে। তাহলে সেটা সম্ভব হবে। দুই পক্ষ যতক্ষণ পর্যন্ত এ নিয়ে সম্মত না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত ফেরানো যাবে না। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি, যাতে এ বিষয়গুলো সমাধান হয়।’

ভারতে বসে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানো হচ্ছে—এ বিষয়ে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশ থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যারা প্রচারণা চালাচ্ছে, তা নিয়ে অবশ্যই আমরা ভারতের কাছে বলছি—তোমরা এটা প্রশ্রয় দিয়ো না। এটা সব সময় বলছি। তবে আমরা আলাদা করে তাদের ওইভাবে বলি না, সার্বিকভাবে বলি, যারা আমাদের সরকারবিরোধী, স্বার্থবিরোধী, তাদের তোমরা প্রশ্রয় দিয়ো না।’

আরও পড়ুন২ হাজার ৩৬৯ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাতে প্রস্তুত ভারত: জয়সোয়াল২২ মে ২০২৫

ভারতের করা তালিকা অনুযায়ী পুশ ইন (ঠেলে দেওয়া) করা হচ্ছে কি না জানতে চাইলে রুহুল আলম সিদ্দিকী বলেন, যাঁদের পুশ ইন করা হচ্ছে, তাঁরা ওই তালিকায় আছেন কি না, যাচাই-বাছাই করে দেখতে হবে। তার আগে এটা নিয়ে নির্দিষ্ট কোনো কিছু বলা যাবে না। এটা নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিজিবি সমন্বয় করে কাজ করছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পদক ষ প ক জ কর অন য য়

এছাড়াও পড়ুন:

রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই, প্রতিযোগিতামূলক অবস্থায় থাকব: বাণিজ্য উপদেষ্টা

১৫ শতাংশ কমিয়ে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।  ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় বাংলাদেশ প্রতিযোগিতামূলক অবস্থায় থাকবে বলে মনে করছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা।

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার গোলাম মোর্তোজা প্রথম আলোকে জানান, বাণিজ্য উপদেষ্টা তাঁর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘বাংলাদেশের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় আমরা প্রতিযোগিতামূলক অবস্থায় থাকব। যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে আমরা ২০ শতাংশের নিচে প্রত্যাশা করেছিলাম।’

স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক নির্বাহী আদেশে নতুন এই হার ঘোষণা করা হয়। সবশেষ বাংলাদেশকে চিঠি দিয়ে ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্কের কথা জানিয়েছিল মার্কিন প্রশাসন। সে হিসাবে শুল্ক ১৫ শতাংশ কমিয়ে নতুন হার ঘোষণায় করা হয়েছে।

ট্রাম্পের ওই নির্বাহী আদেশ হোয়াইট হাউসের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। আদেশে বাংলাদেশ ছাড়াও কয়েক ডজন দেশের ওপর মার্কিন শুল্কের হার তুলে ধরা হয়েছে। বাকি দেশগুলোর মধ্যে ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ,পাকিস্তানের ওপর ১৯ শতাংশ, আফগানিস্তানের ওপর ১৫ শতাংশ,  ব্রাজিলের ওপর ১০ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ার ওপর ১৯ শতাংশ, মালয়েশিয়ার ওপর ১৯ শতাংশ, মিয়ানমারের ওপর ৪০ শতাংশ, ফিলিপাইনের ওপর ১৯ শতাংশ, শ্রীলঙ্কার ওপর ২০ শতাংশ ও ভিয়েতনামের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ওয়াশিংটন।

আজ থেকে বাংলাদেশকে বর্তমানের গড় ১৫ শতাংশ ও নতুন পাল্টা শুল্ক ২০ শতাংশ, অর্থাৎ মোট ৩৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করতে হবে।

পাল্টা শুল্ক নিয়ে আলোচনা জন্য বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র সফরে রয়েছে। শুল্ক কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) সঙ্গে টানা তিন দিন আলোচনা করেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। মঙ্গল ও বুধবারের পর গতকাল বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনের মতো আলোচনা হয়।

বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। এ ছাড়াও দলে ছিলেন—জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাজনীন কাউসার চৌধুরী।

আরও পড়ুন১৫ শতাংশ কমিয়ে বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ২০ শতাংশ ১ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ