গাজায় খাবারের খোঁজে ‘রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে’ ক্ষুধার্ত শিশুরা
Published: 26th, May 2025 GMT
ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার পাশাপাশি গাজার ফিলিস্তিনিদের দুর্দশার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে খাবারের অভাব। এর বড় ভুক্তোভোগী হচ্ছে শিশুরা। দিনের পর দিন অনাহারে–অর্ধাহারে থাকতে হচ্ছে তাদের। একটু খাবারের খোঁজে তারা রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে বলে জানিয়েছে শিশুদের নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন।
সংস্থাটির মানবিক পরিচালক র্যাচেল কামিংস বলেন, ‘প্রতিদিন আমি দেখি, খাবারের খোঁজে খালি পাত্র হাতে নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে শিশুরা। একটু পানির জন্য বোতল নিয়ে ছুটতে তারা। মায়েরা আমাদের বলেছেন, কীভাবে তাঁরা সন্তানদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য লড়ছেন; সন্তানেরা অসুস্থ হয়ে পড়বে জেনেও কীভাবে তাঁরা তাদের ক্ষুধা মেটাতে নোংরা পানির সঙ্গে ঘাসপাতা মিশিয়ে খাওয়াচ্ছেন।’
গত ২ মার্চ থেকে উপত্যকাটিতে খাবার-পানিসহ সব ধরনের জরুরি পণ্য প্রবেশ বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল। এ কারণে সেখানে খাবারের তীব্র সংকট দেখা দেয়। ১১ সপ্তাহ অবরোধের পর সম্প্রতি সীমিত আকারের খাবার প্রবেশ করতে দেওয়া হলেও, তা ঠিকমতো হাতে পাচ্ছেন না গাজাবাসী। খাবারের অভাবে উপত্যকাটির অনেক ত্রাণ সরবরাহকেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে।
গাজায় প্রতিদিন অন্তত ৫০০ ট্রাক করে ত্রাণ প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। তবে রোববার ইসরায়েলের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, সেদিন পর্যন্ত উপত্যকাটিতে ১০৭ ট্রাক ত্রাণ প্রবেশ করেছে। এসব ট্রাকের কয়েকটি লুট হয়েছে জানিয়ে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বলেছে, মানুষের ক্ষুধা নিরসনে ইসরায়েলকে আরও দ্রুত ও বেশি পরিমাণে ত্রাণ গাজায় প্রবেশের অনুমতি দিতে হবে।
ইসরায়েলের হামলা শুরুর আগে গাজা কেবল বাইরের ত্রাণের ওপর নির্ভরশীল ছিল না। সেখানকার বাসিন্দারা চাষাবাদও করতেন। জাতিসংঘের স্যাটেলাইট কেন্দ্র (ইউএনওএসএটি) ও খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) তথ্য অনুযায়ী, গত মাস পর্যন্ত গাজার ১৫ হাজার ৫৩ হেক্টর কৃষিজমির মধ্যে ১২ হাজার ৫৩৭ হেক্টরই ইসরায়েলের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটি মোট কৃষিজমির ৮০ শতাংশের বেশি।
এমন পরিস্থিতিতে সেভ দ্য চিলড্রেনের মানবিক পরিচালক র্যাচেল কামিংস আল-জাজিরাকে বলেন, ‘গাজায় একটি যুদ্ধবিরতির প্রয়োজন, যাতে আমরা সবচেয়ে বিপদে থাকা এই মানুষ ও শিশুদের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে পারি।’
আরও পড়ুনগাজায় ইসরায়েলি অবরোধে খাদ্যের অভাবে কঙ্কালসার শিশু সিওয়ার৯ ঘণ্টা আগেএদিকে আজও গাজায় ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৫৫ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে গাজা নগরীর ফাহমি আল-জারজাউই স্কুলে হামলা হলে ৩৬ জন নিহত হন। তাঁদের মধ্যে ১৮ জনই শিশু। ওই স্কুলটিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন অসহায় ফিলিস্তিনিরা। এ নিয়ে উপত্যকাটিতে ৫৩ হাজার ৯৭৭ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুন১০ সন্তানকে বাড়িতে রেখে হাসপাতালে গিয়েছিলেন চিকিৎসক মা, সেখানেই এল ৭ জনের মরদেহ১৩ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ৩ পুলিশ নিহত
যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে বন্দুক হামলায় তিন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরো দুই পুলিশ।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুর ২টার কিছু পর এক পারিবারিক বিরোধের তদন্তে গিয়ে হামলার মুখে পড়ে পুলিশ। খবর বিবিসির।
আরো পড়ুন:
শেরপুরে পুলিশের উপর হামলা: থানায় মামলা, গ্রেপ্তার ৪
ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ ও থানায় হামলা, ভাঙচুর-আগুন
পেনসিলভানিয়া স্টেট পুলিশের কমিশনার কর্নেল ক্রিস্টোফার প্যারিস জানান, অভিযুক্ত বন্দুকধারী পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে।
গুলির ঘটনার পর ইয়র্ক কাউন্টির নর্থ কোডোরাস টাউনশিপের স্প্রিং গ্রোভ এলাকার একটি স্কুল জেলা সাময়িকভাবে ‘শেল্টার ইন প্লেস’ ঘোষণা করে। তবে পরে জানানো হয়, স্কুল কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জনসাধারণের জন্য বর্তমানে কোনো সক্রিয় হুমকি নেই। এ ঘটনা ঘটে ফিলাডেলফিয়া থেকে প্রায় ১০০ মাইল (১৬০ কিমি) পূর্বে অবস্থিত ইয়র্ক কাউন্টির এক গ্রামীণ এলাকায়।
তারা বলছে, আগের দিন শুরু হওয়া একটি তদন্তের অংশ হিসেবে কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন। তবে তদন্ত চলমান থাকায় বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করা হয়নি।
পেনসিলভানিয়ার গভর্নর জোশ শাপিরো বিকেলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বলেন, “আমরা তিনজন মহামূল্যবান প্রাণ হারালাম, যারা এই দেশকে সেবা দিয়েছেন। এই ধরনের সহিংসতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সমাজ হিসেবে আমাদের আরো ভালো করতে হবে।”
নিহত তিন কর্মকর্তার সম্মানে গভর্নর শাপিরো রাজ্যের সব সরকারি ভবন ও স্থাপনায় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দেন।
ঢাকা/ইভা