ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার পাশাপাশি গাজার ফিলিস্তিনিদের দুর্দশার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে খাবারের অভাব। এর বড় ভুক্তোভোগী হচ্ছে শিশুরা। দিনের পর দিন অনাহারে–অর্ধাহারে থাকতে হচ্ছে তাদের। একটু খাবারের খোঁজে তারা রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে বলে জানিয়েছে শিশুদের নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন।

সংস্থাটির মানবিক পরিচালক র‌্যাচেল কামিংস বলেন, ‘প্রতিদিন আমি দেখি, খাবারের খোঁজে খালি পাত্র হাতে নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে শিশুরা। একটু পানির জন্য বোতল নিয়ে ছুটতে তারা। মায়েরা আমাদের বলেছেন, কীভাবে তাঁরা সন্তানদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য লড়ছেন; সন্তানেরা অসুস্থ হয়ে পড়বে জেনেও কীভাবে তাঁরা তাদের ক্ষুধা মেটাতে নোংরা পানির সঙ্গে ঘাসপাতা মিশিয়ে খাওয়াচ্ছেন।’

গত ২ মার্চ থেকে উপত্যকাটিতে খাবার-পানিসহ সব ধরনের জরুরি পণ্য প্রবেশ বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল। এ কারণে সেখানে খাবারের তীব্র সংকট দেখা দেয়। ১১ সপ্তাহ অবরোধের পর সম্প্রতি সীমিত আকারের খাবার প্রবেশ করতে দেওয়া হলেও, তা ঠিকমতো হাতে পাচ্ছেন না গাজাবাসী। খাবারের অভাবে উপত্যকাটির অনেক ত্রাণ সরবরাহকেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে।

গাজায় প্রতিদিন অন্তত ৫০০ ট্রাক করে ত্রাণ প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। তবে রোববার ইসরায়েলের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, সেদিন পর্যন্ত উপত্যকাটিতে ১০৭ ট্রাক ত্রাণ প্রবেশ করেছে। এসব ট্রাকের কয়েকটি লুট হয়েছে জানিয়ে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বলেছে, মানুষের ক্ষুধা নিরসনে ইসরায়েলকে আরও দ্রুত ও বেশি পরিমাণে ত্রাণ গাজায় প্রবেশের অনুমতি দিতে হবে।

ইসরায়েলের হামলা শুরুর আগে গাজা কেবল বাইরের ত্রাণের ওপর নির্ভরশীল ছিল না। সেখানকার বাসিন্দারা চাষাবাদও করতেন। জাতিসংঘের স্যাটেলাইট কেন্দ্র (ইউএনওএসএটি) ও খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) তথ্য অনুযায়ী, গত মাস পর্যন্ত গাজার ১৫ হাজার ৫৩ হেক্টর কৃষিজমির মধ্যে ১২ হাজার ৫৩৭ হেক্টরই ইসরায়েলের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটি মোট কৃষিজমির ৮০ শতাংশের বেশি।

এমন পরিস্থিতিতে সেভ দ্য চিলড্রেনের মানবিক পরিচালক র‌্যাচেল কামিংস আল-জাজিরাকে বলেন, ‘গাজায় একটি যুদ্ধবিরতির প্রয়োজন, যাতে আমরা সবচেয়ে বিপদে থাকা এই মানুষ ও শিশুদের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে পারি।’

আরও পড়ুনগাজায় ইসরায়েলি অবরোধে খাদ্যের অভাবে কঙ্কালসার শিশু সিওয়ার৯ ঘণ্টা আগে

এদিকে আজও গাজায় ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৫৫ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে গাজা নগরীর ফাহমি আল-জারজাউই স্কুলে হামলা হলে ৩৬ জন নিহত হন। তাঁদের মধ্যে ১৮ জনই শিশু। ওই স্কুলটিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন অসহায় ফিলিস্তিনিরা। এ নিয়ে উপত্যকাটিতে ৫৩ হাজার ৯৭৭ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

আরও পড়ুন১০ সন্তানকে বাড়িতে রেখে হাসপাতালে গিয়েছিলেন চিকিৎসক মা, সেখানেই এল ৭ জনের মরদেহ১৩ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র প রব শ

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনায় বিএনপি নেতার অফিসে বোমা-গুলি, শিক্ষক নিহত

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) আইটি গেট সংলগ্ন বিএনপি নেতার দলীয় কার্যালয়ে গুলি ও বোমা হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় ইমদাদুল নামে এক শিক্ষক নিহত হয়েছেন। যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউপি সদস্য মামুন শেখ (৪৫) ও মিজানুর রহমান নামে দুই ব্যক্তি আহত হয়েছেন।

রবিবার (২ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে ঘটনাটি ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করে আড়ংঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ খায়রুল বাশার।

আরো পড়ুন:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিপক্ষের হামলা: গুলিবিদ্ধ যুবকের মৃত্যু

নবীনগরে গুলিবিদ্ধ ৩

তিনি বলেন, ‍“ঘটনাস্থল থেকে একটি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। তার ভেতর ভুসি রাখা ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, এর ভেতরেই বোমা নিয়ে আসা হয়েছিল।” পেশাদার কিলারের সম্পৃক্তা থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন ওসি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ৯টার দিকে বিএনপি নেতা মামুন শেখ স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে অফিসে বসেছিলেন। এ সময় সন্ত্রাসীরা অফিস লক্ষ্য করে পরপর দুইটি বোমা ও চার রাউন্ড গুলি ছুড়ে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায়। পরে নেতাকর্মী ও স্বজনরা গুরুতর আহত মামুনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

খানজাহান আলী থানা বিএনপির সভাপতি কাজী মিজানুর রহমান বলেন, “যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন শেখকে সন্ত্রাসীরা গুলি করেছে। তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।”

যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মীর শওকত হোসেন হিট্টু বলেন, “ঘটনার সময় আমি ফুলবাড়িগেটে ছিলাম। শুনেছি, আমাদের সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনকে সন্ত্রাসীরা গুলি করেছে। তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।”

ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ