শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের আইনজীবী আদালতে দাবি করেছেন, ২০২২ সালের পর থেকে সুব্রত বাইন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে ছিলেন। ছাত্র–জনতার গণ–অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাঁকে নারায়ণগঞ্জের ভূলতায় ফেলে চলে যান।

ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আজ বুধবার বিকেলে সুব্রত বাইনের রিমান্ড শুনানিতে এসব কথা বলেন তাঁর আইনজীবী মোহাম্মদ বাদল মিয়া।

আইনজীবী বাদল মিয়া আরও বলেন, সুব্রত বাইনকে গত বছরের ৫ আগস্ট ভূলতায় ফেলে যাওয়ার পর তাঁর মক্কেল ভয় পেয়ে যান। তিন বছর ধরে আয়নাঘরে নির্যাতিত হওয়ার তথ্য জানাতে সংবাদ সম্মেলন করার কথাও ভেবেছিলেন; কিন্তু জীবন বাঁচাতে শেষ পর্যন্ত সুব্রত বাইন ওই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

সুব্রত বাইনকে ২০২২ সালে ভারত সরকার বাংলাদেশে পাঠিয়েছিল বলে আদালতে দাবি করেন তাঁর এই আইনজীবী।

২০০১ সালে তৎকালীন সরকার ২৩ জনকে শীর্ষ সন্ত্রাসী উল্লেখ করে একটি তালিকা প্রকাশ করে ছিল। সেই তালিকায় সুব্রত বাইনের নাম ছিল।

সুব্রত বাইনে ‘মিডিয়ার সৃষ্টি’ দাবি করে আদালতে আইনজীবী মোহাম্মদ বাদল মিয়া বলেন, তাঁর মক্কেল নিরপরাধ। তিনি অসুস্থ।

রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী আদালতকে বলেন, সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদ তালিকাভূক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী। তাঁদের বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজিসহ গুরুতর ফৌজদারি অপরাধে জড়িত থাকার প্রমাণ রয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে ৫টি বিদেশি পিস্তল, ১০টি ম্যাগাজিন, ৫৩টি গুলি এবং ১টি স্যাটেলাইট ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। মামলার ঘটনার রহস্য উদঘাটনের জন্য তাঁদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।

উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত সুব্রত বাইনকে আট দিন এবং আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী মোল্লা মাসুদসহ তিনজনকে ছয় দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন। রিমান্ডপ্রাপ্ত অপর দুই আসামি হলেন মোল্লা মাসুদের সহযোগী শুটার আরাফাত ও শরীফ।

এর আগে সুব্রত বাইনসহ চারজনকে কড়া পুলিশ পাহারায় বিকেল সাড়ে তিনটার পর হাজতখানা থেকে আদালত কক্ষে তোলা হয়। কাঠগড়ায় তোলার পর সুব্রত বাইনসহ অন্যদের পরানো হেলমেট খুলে দেওয়া হয়। সাংবাদিকদের দেখার পর সুব্রত বাইন বলতে থাকেন, সংবাদকর্মীরা তাঁর বিরুদ্ধে মনগড়া কাহিনি লিখে যাচ্ছেন বহু বছর ধরে। তিনি এর কোনো প্রতিবাদ করেননি। বাস্তব কাহিনি সাংবাদিকেরা জানেন না বলেও দাবি করেন সুব্রত বাইন।

মোল্লা মাসুদেরও তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ বুধবার বিকেলে ঢাকার সিএমএম আদালত প্রাঙ্গণে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আইনজ ব

এছাড়াও পড়ুন:

গণভোট নিয়ে উত্তাপ নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে না: প্রেস সচিব

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ‘গণভোট নিয়ে উত্তাপ জাতীয় নির্বাচনে কোনো প্রভাব ফেলবে না। রাজনৈতিক দল থাকলে মতবিরোধ থাকবে, আমি এক কথা বলব, আরেকজন আরেক কথা বলবে—এটাই নিয়ম। এ বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদ এবং প্রধান উপদেষ্টা সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে সিদ্ধান্ত যে রকমই হোক না কেন, জাতীয় নির্বাচন আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি আগে অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে, সে বিষয়ে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’

প্রেস সচিব আজ শুক্রবার দুপুরে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই কন্যা ফাউন্ডেশন আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। শফিকুল আলম বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো তাদের মতামত দিচ্ছে। জাতির জন্য যেটা সবচেয়ে মঙ্গলজনক, সে কাজটাই প্রধান উপদেষ্টা করবেন। এখানে অস্থির হওয়ার কিছু নেই। অনেক বড় বড় কাজ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার করে এসেছে। জুলাই ঘোষণা দিয়েছে, জুলাই ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর হয়েছে। নির্বাচনের কাজ পুরো গতিতে চলছে।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সাধারণ মানুষের উদ্বেগের বিষয়ে জানতে চাইলে শফিকুল আলম বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় এখন ভালো। আপনারা একটি-দুটি মৃত্যু হলে, চাঞ্চল্যকর হত্যার ঘটনা ঘটলেই বলতে থাকেন দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ। আপনারা একটু ভালোভাবে দেখেন পরিস্থিতি কেমন। আপনারা নিজেরা বিচার করে একটা সিদ্ধান্ত নিন। বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই ভালো। পুলিশ খুব ভালোভাবে কাজ করছে। অন্যান্য বাহিনীও ভালো কাজ করছে। রাজনৈতিক সংঘাতও গত মাসে কম হয়েছে। নির্বাচনের আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, আওয়ামী লীগ তো অনেক টাকা বাংলাদেশ থেকে চুরি করে নিয়ে গেছে। মিলিয়ন বিলিয়ন ডলার তারা নিয়ে গেছে। ওই ডলার তারা খরচ করছে। এখন যে কেউ একটা ঝটিকা মিছিল করলেন, হয়তোবা তাঁর অ্যাকাউন্টে ডলার জমা পড়ছে। আওয়ামী লীগ এ রকম ঝটিকা মিছিল করে আগামী ৫০ বছরেও কিছু করতে পারবে না।

এর আগে জুলাই কন্যা ফাউন্ডেশনের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে শফিকুল আলম বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি অংশগ্রহণ ছিল মেয়েদের। আমাদের নারীরা, মেয়েরা তাঁদের ভাইদের বুলেট নিজেরা বুক পেতে নিয়েছেন। জুলাই কন্যারা যে বাংলাদেশ বানাতে চেয়েছেন, সেই বাংলাদেশ আমরা বানাতে পারছি কি না, সেটা অবশ্য অনেকেই জিজ্ঞেস করছেন। আমি বলব, আমাদের চেষ্টা আছে, আমরা চাচ্ছি বাংলাদেশ এমন একটা দেশ হোক, যেখানে কোনো ধরনের বৈষম্য থাকবে না।’

জুলাই কন্যা ফাউন্ডেশনের সভাপতি জান্নাতুল নাঈম প্রমির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ‍মুহাম্মদ ইসমাইল, সহ–উপাচার্য রেজাওয়ানুল হক ও নোয়াখালী জেলা অতিরিক্ত প্রশাসক মুহাম্মদ ইসমাঈল, প্রক্টর এ এফ এম আরিফুর রহমান, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নূর উদ্দিন জাহাঙ্গীর, জুলাই শহীদ নাছিমার বোন কোহিনুর আক্তার প্রমুখ।

বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বার্ষিক প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন ও আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন। এর আগে তিনি সাংবাদিক সমিতির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রায় অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অপরাধ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমার বিধান প্রশ্নে রুল
  • আপিল বিভাগের বিচারকাজ পর্যবেক্ষণ করলেন নেপালের প্রধান বিচারপতি
  • তত্ত্বাবধায়ক সরকারযুক্ত সংবিধানই জনগণ চায়
  • খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন স্থগিত
  • যশোরের এমএম কলেজের ক্লাবগুলো যেভাবে শিক্ষার্থীদের তৈরি করছে
  • প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ
  • প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ, নির্বাচন প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা
  • এখন দেখছি নতুন প্রতারকের জন্ম হয়েছে: কায়সার কামাল
  • ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিকের বিরুদ্ধে ৫০ কোটি ডলার ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ
  • গণভোট নিয়ে উত্তাপ নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে না: প্রেস সচিব