রাঙামাটির লংগদু-নানিয়ারচর সংযোগ সড়ক দ্রুত নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকালে লংগদু উপজেলা সদরে লংগদু উপজেলার সর্বস্তরের জনসাধারণের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে জনসাধারণের পাশাপাশি বিভিন্ন স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীরা উপস্থিতি ছিলেন।

লংগদু উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এ বি এস মামুনের সভাপতিত্বে ও নুরুল ইসলাম সেলিমের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন, জামায়াতের আমির মাওলানা নাছির উদ্দিন, মাইনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন কমল, এনসিপির সদস্য পলিন্স চাকমাসহ জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন নেতারা। 

এ সময় বক্তারা বলেন, একটি সড়কের জন্য লংগদু, বাঘাইছড়ির মতো গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা জেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। এ দুই উপজেলার মানুষকে নৌপথে রাঙামাটি যাতায়াত করতে হয়। হ্রদের পানি শুকিয়ে গেলে নৌপথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বছরের সাত থেকে আট মাস দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করতে হয়।

আরো পড়ুন:

নাটোরে দু’ ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ, আহত ৪

ঈদে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে ডাকাত আতঙ্ক

নানিয়ারচর থেকে লংগদু মাত্র ১৮ থেকে ২০ কিলোমিটার সড়ক হলে লংগদু ও বাঘাইড়ির মানুষের জেলা শহরের যোগাযোগ সহজ হতো। একইসঙ্গে কৃষি পণ্য, স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়ন ঘটত। সরকারের সদিচ্ছার অভাবে এতদিনেও গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি নির্মাণ হয়নি বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।

মানববন্ধনে অংশ নেয়া শুকতারা বেগম নামে এক নারী বলেন, ‘‘সড়কটির অভাবে আমরা চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। একজন গর্ভবর্তী নারীকে যখন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বলে দেয় এখানে কিছু করার নেই, দ্রুত জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান, অথচ পানিপথে দ্রুত আমরা রোগী নিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। এই সড়কটি হয়ে গেলে আমাদের সুবিধামত সময়ে রোগী নিয়ে জেলা হাসপাতাল কিংবা চট্টগ্রামেও দ্রুত নিয়ে যেতে পারব। এই একটি সড়কের অভাবে কত গর্ভবর্তী মায়ের মৃত্যু হয়েছে, সেটা একমাত্র উপজেলাবাসীই জানে।’’ 

মানববন্ধনে এনসিপির সদস্য পলিন্স চাকমা বলেন, ‘‘এই উপজেলার পাহাড়ি-বাঙালি সকল মানুষ এই সড়কের সুবিধা পাবে। সড়ক ব্যবস্থা না থাকায় শুধু জেলা শহরের সঙ্গে নয়, চট্টগ্রাম ও রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগও সহজ হচ্ছে না। সড়ক যোগাযোগ না থাকায় কোনো কর্মকর্তা লংগদু উপজেলায় আসতে চান না। ফলে নানা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এই অঞ্চলের মানুষ।’’ 

লংগদু উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘‘গত ২০ বছর ধরে জেলার বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার কাছে এই সড়ক নির্মাণের জন্য সকলে দাবি করে আসছে। আমাদের প্রাণের দাবি সড়ক পথে রাঙামাটি, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় যোগাযোগ করতে পারবো। একইসঙ্গে এই এলাকায় উৎপাদিত কৃষিপণ্য, উন্নত স্বাস্থ্য সেবার জন্য জেলা সড়ক পথের বিকল্প নেই। এই সড়ক পথ না থাকায় অনেক রোগী পথেই মারা গেছে।’’ 

তিনি আরো বলেন, ‘‘শুষ্ক মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদের পানি শুকিয়ে গেলে নৌপথে জেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এই সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, অতি দ্রুততম সময়ের মধ্যে সড়কটি নির্মাণে পদক্ষেপ নিন।’’

মানববন্ধনের আয়োজক লংগদু উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এবিএস মামুন বলেন, ‘‘আমরা আগে থেকে এই সড়কের দাবি জানিয়ে আসলেও জানতাম এটা করা কঠিন ছিল কিন্তু ২০২০ সালে শত কোটি টাকা ব্যয়ে নানিয়ারচরে সেতু হওয়ার পর আমাদের সড়কটি এখন সহজ হয়ে গেছে। মাত্র ২০-২২ কিলোমিটার সড়কটি নির্মাণ করা হলে আমরা সড়ক পথে সরাসরি জেলা সদরের সঙ্গে যুক্ত হতে পারব। নাগরিক অধিকার হিসেবে আমরা উপজেলাবাসী অবশ্যই এই সড়কের দাবিদার।’’ 

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘যদি শীঘ্রই সড়কটির কাজ শুরু না হয়, তবে আমরা উপজেলার মানুষ জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সামনে আমরণ অনশনে বসব।’’

ঢাকা/শংকর/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন সড়ক দ র ঘটন ন ন য় রচর উপজ ল র সড়ক পথ সড়ক র র সড়ক

এছাড়াও পড়ুন:

১ কোটি শিশু শিক্ষার্থীর অধিকার নিশ্চিতের দাবিতে  মানববন্ধন, স্মারকলিপি

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিন্ডারগার্টেনর এক কোটি শিশু শিক্ষার্থীর অধিকার নিশ্চিতের দাবিতে বন্দরে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের শিক্ষক-শিক্ষকারা।

সোমবার (২৮ জুলাই) সকাল ১১টায় বন্দর উপজেলা কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন শেষে বন্দর উপজেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবারে স্মারকলিপি দাখিল করা হয়। 

মানববন্ধরে বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ জেলা কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের প্রধান এ এইচ এম শামীম আহমেদ, মহাসচিব সিদ্দিকুর রহমান, সদস্য সচিব সাইফুল ইসলাম রুবেল, শিক্ষক হাসান কবির, আনোয়ার হোসেন, আরিফ হোসেন, মাহবুব আলম, শামীমা আক্তার বর্ণা, রোকসানা আক্তার প্রমুখ। 

বক্তরা বলেন, বাংলাদেশে ৬৫ হাজার ৭শ’ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে। যা দেশেরন ৫০ শতাংশ শিক্ষার চাহিদা পূরণ করে থাকে।  আর এ সকল স্কুলে প্রায় ১ কোটির অধিক শিশু শিক্ষার্থী লেখা পড়া করে। আর ৫ম শ্রেণীতে প্রায় ১০ লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে। যারা ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সরকারি বৃত্তিতে অংশ নিয়েছে। 

কিন্তু গত ১৭ জুলাই বর্তমান সরকার একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বেসরকারি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের বৃত্তিতে অংশ গ্রহণ বাতিল করে। যার কারণে ১ কোটি শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত অনিশ্চয়তার মুখে পতিত হয়েছে। 

বক্তরা আরো বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানে ১৭ অনুচ্ছেদে দেশের সকল শিশুদের সমান অধিকার দেয়া হয়েছে। বেসরকারি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিশুদের বুত্তিতে অংশগ্রহণ করতে না দেয় মানে সংবিধানের ও মানবাধিকার লঙ্ঘন। আমরা এ প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। যাতে শিশুরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মেঘনার জোয়ারে সেতুর সংযোগ সড়কে ধস, দুই উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
  • অবকাঠামো উন্নয়নের দাবিতে ববিতে মানববন্ধন
  • সিজু নিহতের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
  • মাদক ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুরে মিছিল-সমাবেশ
  • নেত্রকোনায় বাবরকে নিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর মন্তব্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন
  • মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে সরকারি মতিলাল ডিগ্রি কলেজে সম্মান কোর্স চালুর দাবিতে মানববন্ধন
  • লক্ষ্মীপুরে বৃষ্টি-জোয়ারে সড়ক বিচ্ছিন্ন, মানুষের দুর্ভোগ
  • ১ কোটি শিশু শিক্ষার্থীর অধিকার নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন, স্মারকলিপি
  • ১ কোটি শিশু শিক্ষার্থীর অধিকার নিশ্চিতের দাবিতে  মানববন্ধন, স্মারকলিপি
  • আশকোনার অলিগলিও বেহাল