বাইরের শক্তিকে দোষারোপ করে লাভ নেই, ঢাকাকে দিল্লির পরামর্শ
Published: 29th, May 2025 GMT
বাংলাদেশের প্রশাসনিক ইস্যুগুলো সামলানোর দায়িত্ব তাদেরই, বাইরের শক্তিকে দোষারোপ করে লাভ নেই বলে মন্তব্য করেছে ভারত।
বৃহস্পতিবার দিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এ মন্তব্য করেন।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এক বৈঠকে দেশের সংকটের জন্য ভারতীয় আধিপত্যবাদকে দায়ী করেন। এ বিষয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়া জানতে জয়সওয়ালকে প্রশ্ন করেছিলেন এক সাংবাদিক।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশ সরকারকে আমি বলব তাদের দেশের গভর্ন্যান্স বা প্রশাসনিক ইস্যুগুলো সামলানোর দায়িত্ব কিন্তু তাদেরই। এ ব্যাপারে আমরা যে ধরনের বক্তব্য দেখতে পাচ্ছি বা যে সব মন্তব্য আসছে, তা থেকে মনে হচ্ছে দায়টা যেন তারা অন্য কোনো দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
বাংলাদেশ সরকারকে উদ্দেশ্যে করে জয়সওয়াল বলেন, আপনাদের মনে করিয়ে দেব আপনাদের সামনে যে সব নিজস্ব চ্যালেঞ্জ আছে সেগুলো আপনাদেরই দেখতে হবে। তার বদলে যদি বলেন বাইরের অমুক কারণে এই সংকট তৈরি হয়েছে, তাতে কিন্তু কোনো লাভ নেই। এতে সমস্যার কোনো সমাধান হবে না।
গত রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড.
ভারত বাংলাদেশে দ্রুত একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন দেখতে চায় বলেও এদিন আবারও মন্তব্য করেন জয়সওয়াল।
নির্বাচন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে নির্বাচন আয়োজন নিয়ে বারবার একটা কথাই বলে আসছি। বাংলাদেশকে তাদের দেশের মানুষের রায় ও ম্যান্ডেট কী, সেটা যাচাই করতে হবে। আর সেটা করতে হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক, সুষ্ঠু ও অবাধ একটা নির্বাচনের মাধ্যমে, খুব তাড়াতাড়ি।’
সাংবাদিকের অপর এক প্রশ্নের জবাবে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘আমরা দুই দেশের সম্পর্কটা যেভাবে দেখি সেটা আমি আগেও অনেকবার বলেছি। আমরা একটা গঠনমূলক ও ইতিবাচক সম্পর্ক চাই। কিন্তু সেই সম্পর্কটার ভিত্তি হতে হবে এমন, যাতে দুই দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও স্বার্থ সেখানে মিলিত হয়।’
তবে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ভারত কী ভাবছে, সে ব্যাপারে তিনি সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি।
রাখাইনে মানবিক করিডর ইস্যু
বাংলাদেশ তাদের ভূখণ্ডের ভেতর দিয়ে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের জন্য যে মানবিক করিডর দেওয়ার কথা বিবেচনা করছে, সে ব্যাপারে ভারতের অবস্থান কী সেটাও জানতে চাওয়া হয়েছিল মুখপাত্রের কাছে। জবাবে জয়সওয়াল বলেন, ‘আমি আগেও অনেকবার বলেছি, এই ধরনের ডেভেলপমেন্টগুলো (যেটাতে নিরাপত্তাগত প্রশ্ন জড়িত থাকে) সেগুলোর দিকে সব সময়ই আমাদের সতর্ক নজর থাকে।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জয়সওয় ল
এছাড়াও পড়ুন:
চাঁদপুরে জীবন্ত নবজাতক দাফনের চেষ্টা, হাসপাতাল বন্ধ
চাঁদপুর পৌর কবরস্থানে নবজাতক দাফনের সময় নড়ে ওঠা এবং পরবর্তীতে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার হয় শহরের তালতলা দি ইউনাইটেড হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় ফারুক হোসেন গাজী (৪৫)। এই ঘটনায় আগামী দুই দিনের মধ্যে রোগীদের অন্যত্র স্থানান্তর করে হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় দি ইউনাইটেড হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পি দত্ত রনি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন হাসপাতালটিতে নানা অবৈধ কার্যক্রম চলে আসছে। ওই নবজাতকের জন্মও হয় এই হাসপতালে। জীবন্ত নবজাতক দাফনের চেষ্টা করার ভিডিও ভাইরাল হলে বিষয়টি নজরে আসে প্রশাসনের এবং পুলিশ সুপারের নির্দেশে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) নবজাতককে কবরস্থানে নিয়ে আসা ওয়ার্ড বয় ফারুক গাজীকে গ্রেপ্তার করে।
এই ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা করেন পৌর কবর স্থানের কেয়ারটেকার মো. শাহজাহান মিয়াজী।
এদিকে দি ইউনাইটেড হাসপাতালে এ ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পি দত্ত রনি বলেন, “হাসপাতালে এসে ব্যবস্থাপনায় জড়িত কাউকে পাওয়া যায়নি। তাদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করেও কোন সাড়া মিলেনি। চিকিৎসক নেই, হাসপাতালের প্যাথলজি ও ওটির সঠিক পরিবেশ নেই। একই সাথে পোস্ট অপারেটিভ রোগীর জন্য কোন সুব্যবস্থা নেই এবং হাসপাতালের কাগজপত্রও নবায়ন নেই।”
তিনি আরো বলেন, “প্রাথমিকভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা এবং ওটি, প্যাথলজি ও সংশ্লিষ্ট কক্ষ সীলগালা করা হয়েছে। একই সাথে রোগীদেরকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্য স্থানে সেবার ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমাদের অভিযানে পরিচালিত কার্যক্রম সিভিল সার্জন বরাবর প্রদান করা হবে। সিভিল সার্জন হাসপাতালের নিবন্ধন বাতিলসহ পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে পারবেন।”
এ ভ্রাম্যমাণ আদালতে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রফিকুল হাসান ফয়সাল, জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মু. মিজানুর রহমান। অভিযানে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ সহযোগিতা করেন।
অপরদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত শেষে হাসপাতালের ড্রাগ সনদসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরীক্ষা করে দেখেন জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মু. মিজানুর রহমান।
ঢাকা/অমরেশ/এস