Samakal:
2025-11-03@02:40:57 GMT

গরুপ্রতি লোকসান হবে ৬-৭ হাজার

Published: 30th, May 2025 GMT

গরুপ্রতি লোকসান হবে ৬-৭ হাজার

ঈদুল আজহার বাকি কয়েকদিন। এরই মধ্যে পশু সরবরাহ বাড়ছে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার আরিচা হাটে। বছরের অন্য সময় সপ্তাহে মঙ্গলবার ও শুক্রবার এখানে পশু বিক্রি হয়। ঈদ সামনে রেখে গতকাল শুক্রবার থেকে টানা হাট বসার কথা ছিল। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে শুক্রবার হাট বসানো যায়নি। তবে মঙ্গলবারের হাটে আসা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, ক্রেতারা যে দাম বলছেন, এতে গরুপ্রতি তাদের ৬-৭ হাজার টাকা লোকসান হবে।
সূত্র জানিয়েছে, আগামীকাল রোববার থেকে ঈদের আগ পর্যন্ত এখানে পশু বিক্রি চলবে। তবে মঙ্গলবারের হাটে ক্রেতার উপস্থিতি কম দেখে হতাশা প্রকাশ করেন আসা বিক্রেতারা। খামারিরা বলছেন, এবার গরু লালনপালনে খরচ বেশি হয়েছে। তাই একটু বেশি দামে গরু বিক্রি করতে হবে। কিন্তু ক্রেতারা সেই অনুযায়ী দাম বলছেন না। 
এ বিষয়ে কথা হয় শিবালয়ের উথলী ইউনিয়নের বাশাইল গ্রামের ঐশী ডেইরি ফার্মের মালিক আবুল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, মঙ্গলবার আরিচা হাটে ক্রেতার সংখ্যা ছিল খুবই কম। তাই গরু বিক্রি হয়েছে কম। এই খামারি আশা করছেন, ঈদের ২-৩ দিন আগে হাট জমে উঠবে। 
মঙ্গলবার এই হাটে ৩৫টি গরু নিয়ে আসেন পাবনার কাজীর হাট এলাকার বিল্লাল হোসেন। তিনি বলেন, এদিন ক্রেতা একেবারেই কম ছিল। যারা এসেছেন, দামদরে মিল না পড়ায় কোনো গরুই বিক্রি করতে পারেননি। 
হাটে দেশি গরুর পাশাপাশি শাহিওয়াল, ফ্রিজিয়ান ও শংকর জাতের গরু বেশি দেখা গেছে।  বেশির ভাগ গরু বিক্রি হচ্ছে ওজনের ওপর নির্ভর করে। এদিন ৭৫টি গরু নিয়ে আসা ওহাব হোসেন বলেন, মাত্র ১২টি গরু বিক্রি হয়েছে তাঁর। প্রতি মণ ২৬-২৭ হাজার টাকা হিসাব করে হলেও গরু বিক্রি করতেন। কিন্তু ক্রেতারা যে দাম বলছেন, এতে গরুপ্রতি তাঁর ৬-৭ হাজার টাকা লোকসান হবে। এ দামে তিনি বিক্রি করবেন না। ফিরিয়ে নেবেন গরু। 
এসব বিষয়ে কথা হয় উপজেলার বোয়ালী ডেইরি ফার্মের মালিক আতিয়ার রহমান, যমদুয়ারা জেপি ফার্মের মালিক আনোয়ার হোসেন, মেসার্স তুহিন এগ্রো ফার্মের খামারি জাহাঙ্গীর আলমসহ ২০-২৫ জন খামারমালিকের সঙ্গে। কোরবানি সামনে রেখে এদের কেউ কেউ খামারের জন্য ঋণ নিয়েছেন এনজিও থেকে, কেউ ব্যক্তিগতভাবে। তাদের সবার কথা, গত বছরের চেয়ে গোখাদ্যের দাম অনেক বেড়ে গেছে। যে কারণে প্রতিটি গরুর পেছনে খরচ বেশি হয়েছে ১২-১৩ হাজার টাকা বেশি। সেই অনুপাতে এবার কোরবানির পশু একটু বেশি দামে বিক্রি করতে হবে। না পারলে সবারই লোকসান হবে। কিন্তু হাটে যে দামে গরু বিক্রি হচ্ছে, এতে ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কিত তারা। 
আরিচা গরু হাটের ইজারাদারের ব্যবস্থাপক হিরু মিয়ার ভাষ্য, তারা শতকরা ৩ টাকা হারে খাজনা আদায় করছেন। মঙ্গলবারের হাটে আশানুরূপ বিক্রি হয়নি। তাই খাজনাও তেমন আদায় হয়নি। 
উপজেলা উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো.

মিজানুর রহমানের তথ্যমতে, শিবালয়ে এবার কোরবানির জন্য ৪ হাজার ৯৬১টি গরু ও ছয় শতাধিক ছাগল প্রস্তুত আছে। চাহিদা রয়েছে দেড় হাজার পশুর। উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে অর্ধেকের বেশি পশু বাইরে বিক্রি করতে পারবেন খামারিরা।
আরিচা হাটটি উপজেলার একমাত্র পশুহাট। ২০২৫ সালে এ হাট ৪ কোটি ৫ লাখ টাকায় ইজারা নিয়েছেন ফরিদপুরের ব্যবসায়ী মো. গোলাম কুদ্দুস মিয়া। আগের বছরের তুলনায় যা প্রায় দেড় কোটি টাকা কম। এ তথ্য জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামাল হোসেন বলেন, ২০২৪ সালে একই ব্যবসায়ী ৫ কোটি ৬৬ লাখ ৬৬ হাজার ৬৬৬  টাকায় ইজারা নিয়েছিলেন। ২০২৩ সালে ২ কোটি ৯৪ লাখ টাকায় এবং ২০২২ সালে ২ কোটি ৮২ লাখ টাকায় হাটটি ইজারা দেওয়া হয়। 
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গর উপজ ল র বলছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

লাকসামে অস্ত্রের মুখে এতিমখানার ৫ গরু লুট, আহত ৮

কুমিল্লার লাকসামে একটি এতিমখানার খামার থেকে গত শুক্রবার পাঁচটি গরু লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাত দল। এ সময় তাদের হামলায় মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ আটজন আহত হন। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ থানায় মামলা করেছে।

গত শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) ভোরে উপজেলার আজগরা ইউনিয়নের বড়বাম আল-জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদরাসা ও এর সংলগ্ন এতিমখানার খামারে ঘটনাটি ঘটে। তিন মাস আগেও এই খামারের সাতটি গরু লুট করেছিল ডাকাতরা।

আরো পড়ুন:

খুলনায় বিএনপি নেতার অফিসে বোমা-গুলি, শিক্ষক নিহত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিপক্ষের হামলা: গুলিবিদ্ধ যুবকের মৃত্যু

সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে ঘটনাটি জানাজানি হয়।

এলাকাবাসী জানান, মাদরাসার আয় এই খামারের মাধ্যমে হয়। তিন মাসের ব্যবধানে দুই দফা ডাকাতি হওয়ায় শিক্ষক ও ছাত্রদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। খামারের বড় গরুগুলো লুট হয়ে যাওয়ায় এক পাশ ফাঁকা পড়ে আছে। বর্তমানে খামারে ১১টি গরু অবশিষ্ট রয়েছে।

খামারের সামনে পড়ে আছে ডাকাত দলের ব্যবহৃত তুষের বস্তা, যা দিয়ে গরুগুলো পিকআপ ভ্যানে তোলে তারা। গরু উদ্ধার এবং ডাকাত দলের সদস্যদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

মামলার বাদী এবং মাদরাসার শিক্ষক ইমরান হোসাইন জানান, গত শুক্রবার ভোরে একদল ডাকাত দুটি পিকআপ ভ্যান নিয়ে এসে অস্ত্রের মুখে মাদরাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে। শিক্ষকদের মারধর করে তাদের মোবাইল ফোন নিয়ে যায় ডাকাতরা। তারা খামারে ঢুকে কেয়ারটেকার উৎসব হোসেনকে বেঁধে একে একে পাঁচটি গরু পিকআপ ভ্যানে তুলে নেয়। শিক্ষক ও ছাত্রদের চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে আসলে ডাকাতরা পালিয়ে যায়।

মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা শরীফুল আলম খন্দকার জানান, খামারের আয়ের ওপর ভিত্তি করে মাদরাসার কার্যক্রম চলে। তিন মাস আগেও এই খামারের সাতটি গরু নিয়ে যায় ডাকাতরা।

লাকসাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজনীন সুলতানা বলেন, “লুট হওয়া গরু উদ্ধার এবং ডাকাতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। মাদরাসার শিক্ষক ইমরান হোসাইন বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন।”

ঢাকা/রুবেল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ