কৃষকের ন্যায্য অধিকারের দাবিতে ইবি শিক্ষার্থীর অবস্থান কর্মসূচি
Published: 31st, May 2025 GMT
কৃষকের ন্যায্য অধিকার আদায়ের দাবিতে টানা সাতদিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী।
তিনি হলেন, আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০২৩-২৪ বর্ষের শিক্ষার্থী খোকন চন্দ্র বর্মন।
জানা যায়, খোকন বর্মন গত রবিবার (২৫ মে) থেকে শনিবার (৩১ মে) পর্যন্ত প্রথমে বিশ্ববদ্যালয়ের স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে এ কর্মসূচি শুরু করেন। পরে তা প্রধান ফটকে এক ঘণ্টা করে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। দাবি আদায় না হলে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর পুনরায় অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
আরো পড়ুন:
ড.
দক্ষতা উন্নয়নে ৬ হাজার এসএসসি পরীক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে
গোবিপ্রবির ৩ বিভাগে নেই স্নাতকোত্তর
তার এ দাবির সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এসএম সুইট, সহ-সমন্বয়ক গোলাম রব্বানীসহ বিভাগের সহপাঠী এবং সিনিয়ররা সংহতি জানিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
কর্মসূচিতে তারা ‘কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে’, ‘খাদ্য দেয় যে তারই মুখে খাবার নেই, এই অবিচার চলবে না’, ‘কৃষকের দাম দাও কৃষক বাঁচাও’, ‘কৃষি বাঁচাও কৃষক বাঁচাও ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত কর’, ‘মধ্যস্বত্বভোগী নয় দাম পাবে কৃষকই’, ‘ন্যায্য মূল্য চাই অন্যায়ের বিচার চাই’ ইত্যাদি প্লাকার্ড নিয়ে অবস্থান করেন।
কর্মসূচির বিষয়ে খোকন বর্মন বলেন, “আজ সাতদিন ধরে আমি যে দাবি নিয়ে এখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি, তার অন্যতম হলো- আমাদের উত্তরবঙ্গ যেখানে ৯০ ভাগ মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল, সেখানে কৃষকেরা তাদের পণ্যের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না। যেমন- বাজারে যে আলু আছে, তা সেখানে ৫-১০ টাকায় বিক্রি হয়। অথচ একই আলু অন্যান্য জায়গায় ২০-২৫ টাকা বিক্রি হয়। বিভিন্ন জেলায় একই পণ্য বিক্রি হয় ৩০-৪০ টাকা পর্যন্ত।”
তিনি বলেন, “কুমড়া যেখানে মণ ২০০-২৫০ টাকা। মধ্যস্বত্বরা তা বিভিন্ন জায়গায় কেজি প্রতি ৩০-৪০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছে। অর্থাৎ কৃষকরা মাঠ পর্যায়ে দাম পাচ্ছে ৫-৬ টাকা। এতে মূল দাম নিয়ে যাচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীরা। এই মধ্যস্বত্বভোগীরা শুধু কৃষকদের ক্ষতি করছে তাই নয় বরং ভোক্তাদেরও শোষণ করছে। তারা সিন্ডিকেট করে পুরো দেশের ক্ষতি করছে “
খোকনের দাবি, সরকার যেন মধ্যস্বত্বভোগীদের সিন্ডিকেট দ্রুত নিরসন করে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে হবে। কৃষকরা যেন তাদের পণ্যের ন্যায্য মূল্য পায় তার জন্য সরকার পণ্যের ন্যূনতম দাম নির্ধারণ করতে হবে। কৃষিপণ্য দেশের যেকোনো প্রান্তে পৌঁছাতে উন্নত যোগাযোগের ব্যবস্থা করতে হবে।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, “খোকন বর্মন কৃষকদের উপর শোষণ ও অন্যায় অবিচারের প্রতিবাদে ও তাদের ন্যায্য অধিকার নিয়ে সাতদিন ধরে যে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছে, তার প্রতি আমি পূর্ণ সংহতি জানাচ্ছি।”
তিনি বলেন, “উত্তরবঙ্গকে পুরো বাংলাদেশের শস্যভান্ডার বলা হয়। কিন্তু উত্তরবঙ্গের কৃষকরা সব সরকারের আমলেই বিভিন্নভাবে অবহেলার শিকার হয়েছে। তারা যেমন যোগাযোগের দিক দিয়ে অবহেলার শিকার হয়েছে, তেমনিভাবে ন্যায্য মূল্যও তারা পায়নি। এই জায়গা থেকে উত্তরবঙ্গের কৃষকরা যতদিন ন্যায্য অধিকার ফিরে না পাবে, ততদিন খোকন বর্মনের মতো আমরা লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে যাব।”
ঢাকা/তানিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
উত্তরাঞ্চলের জন্য কাঙ্খিত বাজেট চেয়ে সড়ক অবরোধ, আল্টিমেটাম
উত্তরবঙ্গের বাজেট বৈষম্য নিরসন ও সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে একটি স্বতন্ত্র আঞ্চলিক কমিশন গঠনসহ দুই দাবিতে রংপুরের মর্ডান মোড়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুর ১২টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত তারা এই কর্মসূচি পালন করেন। একই সঙ্গে তারা দাবি বাস্তবায়নে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন।
আজ দুপুরে ‘বেরোবি ও উত্তরাঞ্চলের ছাত্র জনতা’র ব্যানারে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রধান ফটক থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। তারা উত্তরাঞ্চলের প্রবেশদ্বার মর্ডান মোড়ে গিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। এসময় সড়কের দুই পাশে আটকা পড়ে অসংখ্য যানবাহন। ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী ও চালকরা।
আরো পড়ুন:
‘বাগছাসে জেন্টলম্যান পলিটিক্স নাই’ জানিয়ে ঢাবি নেতার পদত্যাগ
২৮ আসন ফাঁকা রেখেই কুবির ভর্তি সম্পন্ন
শিক্ষার্থীদের দুই দাবি হলো-
১. উত্তরবঙ্গের বাজেট বৈষম্য নিরসন ও সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে একটি স্বতন্ত্র আঞ্চলিক কমিশন গঠন।
২. বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বায়ত্তশাসিত একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, প্রতিবছর বাজেটে রংপুরসহ উত্তরাঞ্চল অবহেলিতই থেকে যাচ্ছে। সিটি করপোরেশন থেকে শুরু করে শহীদ আবু সাঈদের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সবখানেই বাজেট বৈষম্য প্রকট। এবারের বাজেটেও এই চিত্রের ব্যতিক্রম হয়নি।
এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া হিসেবে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দেন এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আন্দোলনের সমন্বয়কারী শিক্ষার্থী শাহরিয়ার সোহাগ বলেন, “আমরা ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিচ্ছি। এই সময়ের মধ্যে দাবির বাস্তবায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে আবু সাঈদের সহপাঠীরা আরো কঠোর কর্মসূচি যেমন, উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার মর্ডার্ন ব্লকেটসহ অসহযোগ আন্দোলন ঘোষণা করব।”
এসময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বেরোবির শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান আশিক, রহমত আলী, শামসুর রহমান সুমনসহ আরো অনেকে।
ঢাকা/আমিরুল/মাসুদ