পবিত্র কোরবানির ঈদ সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গরু প্রস্তুতের প্রতিযোগিতা চলছে। এরই মধ্যে নজর কেড়েছে শরীয়তপুরের এক খামারে লালন-পালন করা এক বিশালদেহী গরু। মালিক ভালোবেসে যার নাম রেখেছেন ‘শাহজাদা’। তিন বছর বয়সী গরুটির ওজন এক হাজার কেজি। এর দাম হাঁকা হয়েছে ১০ লাখ টাকা। এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ দাম উঠেছে ৭ লাখ টাকা। তবে তাতে বিক্রি করতে রাজি নন খামারের মালিক।

শরীয়তপুর পৌরসভার ধানুকা এলাকার খামারের মালিক মাহমুদুল হাসান। ২০১৯ সালে পড়ালেখা শেষে তিনি গবাদিপশুর খামার শুরু করেন। গত বছর গোপালগঞ্জের একটি হাট থেকে তিনি সাড়ে তিন লাখ টাকায় একটি গরু কেনেন। পাকিস্তানি শাহিওয়াল জাতের গরুটির গঠন লম্বা ও আকর্ষণীয় হওয়ায় তিনি নাম দেন ‘শাহজাদা’। এক বছরে গরুটির ওজন এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার কেজিতে। লালন–পালনে তার খরচ হয়েছে প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার টাকা।

মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘গরুটি বিক্রির জন্য বিভিন্ন হাটে সোর্স লাগিয়েছি, অনলাইনেও তথ্য দিয়েছি। অনেকে এসে দেখে যাচ্ছেন, দাম বলছেন। তবে কাঙ্ক্ষিত দাম কেউ বলছেন না। তাই অপেক্ষায় আছি। বাজারে এ বছর বড় গরুর চাহিদা কিছুটা কম। তবে সামনে চাহিদা বাড়তে পারে, সেটার ওপরই নির্ভর করছে দাম।’

আজ রোববার সকালে মাহমুদুলের খামারে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ১০টি গরু আছে। পাইকার ও ক্রেতারা গরু দেখতে আসছেন, কেউ কেউ দাম বলছেন। গরু ব্যবসায়ী সোহাগ হাওলাদার বলেন, ‘শরীয়তপুরে অনেক খামার ও হাটে ঘুরেছি। এমন বড় গরু এখনো চোখে পড়েনি। তবে এ বছর বড় গরুর চাহিদা তুলনামূলক কম। সামনে মাত্র পাঁচ দিন বাকি, এখনো হাটগুলোতে ক্রেতা তেমন দেখা যাচ্ছে না।’

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্র জানায়, শরীয়তপুর জেলায় ৮ হাজার ৯৪টি গবাদিপশুর খামার আছে। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে এসব খামারে ১ লাখ ২৪ হাজার গবাদিপশু প্রস্তুত করা হয়েছে, যা জেলার ২৮টি স্থায়ী ও ৩০টি অস্থায়ী হাটে বিক্রি করা হচ্ছে। এখানকার খামারিরা গরু নিয়ে যাচ্ছেন ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জের বিভিন্ন হাটে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক বলেন, জেলায় চাহিদার চেয়ে বেশি গবাদিপশু প্রস্তুত হয়েছে। অনেক খামারে বড় গরু আছে। পৌর শহরের একটি খামারে ১ হাজার কেজি ওজনের গরু রয়েছে, যার মালিক এখনো কাঙ্ক্ষিত দাম পাননি। খামারিরা জানিয়েছেন, অন্য বছরের তুলনায় এ বছর বড় গরুর চাহিদা কম।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

জামালপুর শহরে সামান্য বৃষ্টিতেই ঘরে ঢোকে পানি, দুই শতাধিক পরিবারের ভোগান্তি

জামালপুর শহরের হাটচন্দ্রার পলাশতলা এলাকায় দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা দ্রুত নিরসনের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। আজ বুধবারবেলা দুইটার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে এ কর্মসূচি পালন করেন ভুক্তভোগী বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, জলাবদ্ধতায় দুই শতাধিক পরিবার চরম দুর্ভোগে আছেন।

‘পলাশতলার সর্বস্তরের জনগণ’-এর ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেন। জামালপুর শহরের হাটচন্দ্রা রেলক্রসিংয়ের সামনে পলাশতলা এলাকাটির অবস্থান। জামালপুর-দেওয়ানগঞ্জ মহাসড়ক থেকে একটি সংযোগ সড়ক এলাকাটির দিকে ঢুকেছে। ভুক্তভোগী বাসিন্দাদের ভাষ্য, বর্ষা মৌসুমে তাঁদের বানভাসির মতো বসবাস করতে হয়। এলাকার সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনপ্রতিনিধি ও পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়েও কোনো লাভ হয়নি। এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চান তাঁরা।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, এলাকাটিতে সামান্য বৃষ্টি হলে আঙিনা উপচে কয়েকটি ঘরে পানি ঢোকে। পানি মাড়িয়ে যাবতীয় কাজ সারতে হয়। যেকোনো কাজে বাইরে গেলে নোংরা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি মাড়িয়ে আসা-যাওয়া করতে হয়। ফলে তাঁরা পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। প্রায় চার বছর ধরে এমন অসহনীয় জলাবদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে তাঁদের বসবাস করতে হচ্ছে।

শহিদুল্লাহ নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, গত চার বছর ধরে প্রায় দুই শতাধিক পরিবার বানভাসির মতো বসবাস করছেন। জলাবদ্ধতার সমস্যা নিয়ে বহুবার পৌরসভাসহ স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি। দীর্ঘ সময় ধরে পানি থাকায়, অনেকের হাত-পায়ে পানিবাহিত রোগ দেখা দিয়েছে।

দ্রুত সময়ের মধ্যে পলাশতলার জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন জামালপুর পৌরসভার প্রশাসক এ কে এম আবদুল্লাহ-বিন-রশিদ। তিনি বলেন, ‘ওই এলাকায় আমি নিজে গিয়ে দেখে আসছি। যেসব স্থানে পানি আটকে আছে, সেগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই এলাকার পানি সরাতে ইতিমধ্যে পৌরসভার অন্য কর্মকর্তারা কাজ করছেন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ