বলিউডের তিন খান—আমির, শাহরুখ ও সালমান তাঁদের অভিনয়জীবন শুরু করেছিলেন প্রায় একই সময়ে। সেই কারণে প্রায়ই তুলনা চলে এই তিনজনকে ঘিরে। তবে এই ত্রয়ীর মধ্যে সবচেয়ে অভিজ্ঞ আমির খান মনে করেন, এখন আর তাঁদের মধ্যে কোনো প্রতিযোগিতা নেই; বরং অতীতে যা ছিল, সেটাও ছিল একেবারেই স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা—অন্তত তাঁর দিক থেকে তো বটেই।

রাজ শামানির পডকাস্টে আমির বলেন, ‘একসময় প্রতিযোগিতা ছিল। নব্বইয়ের দশকে কে কতটা সফল, তা নিয়ে ভেতরে–ভেতরে একটা টানাপোড়েন ছিল। প্রত্যেক মানুষই চায়, সে-ই যেন সবচেয়ে সফল আর সবার কাছে প্রশংসিত হয়। এটা স্বাভাবিক। কিন্তু আমি কোনো দিন নেতিবাচকতায় জড়াইনি। আমি পারিই না। আমার দিক থেকে প্রতিযোগিতা সব সময়ই ইতিবাচক ছিল।’

আরও পড়ুনসাইফ, এই সিনেমা আপনি কেন করলেন৩০ মে ২০২৫

আমির আরও বলেন, ‘কারও কাজ ভালো লাগলে আমারও ইচ্ছা করে আমিও ভালো কিছু করি। অন্যের কাজ থেকে প্রেরণা পাই। কিন্তু কারও সাফল্য দেখে ঈর্ষা নয়; বরং আনন্দই পাই। আমরা তো ৩০-৩৫ বছর ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে আছি। শুধু আমি, শাহরুখ বা সালমান নই—এই সময়ের আরও অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রীই একই সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। আমাদের মধ্যে আন্তরিকতা, শ্রদ্ধাবোধ আছে। আমি আসলে কারও সঙ্গে প্রতিযোগিতা করিনি, নিজের সঙ্গেই করেছি।’

শাহরুখ অভিনীত আদিত্য চোপড়ার ১৯৯৫ সালের রোমান্টিক ব্লকবাস্টার ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’র উদাহরণ টেনে আমির বলেন, ‘আমি কখনো ভাবিনি, আমাকে এ রকম বড় রোমান্টিক ছবি করতে হবে। কারণ, আমি এই ছবি খুব উপভোগ করি। শাহরুখ এতে অসাধারণ কাজ করেছেন। তাই আমি ওর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করি না।’

আমির খান.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ