বিশ্ব ইতিমধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) যুগে প্রবেশ করেছে। বিভিন্ন দেশ নাগরিকদের ক্ষমতায়নে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক প্রযুক্তি খাতে ভর্তুকি দিচ্ছে। এদিকে আমরা এখনো সাশ্রয়ী মূল্যে ইন্টারনেট পাওয়া নিশ্চিত করতে পারিনি। সমস্যাটি আমাদের ডিজিটাল অর্থনীতি ও স্টার্টআপ খাতের অগ্রগতির পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আমাদের দেশের প্রায় ৬৫ শতাংশ মানুষ শহরের বাইরে গ্রাম ও মফস্‌সল এলাকায় থাকে। এসব অঞ্চলে আধুনিক শিক্ষা ও প্রযুক্তিসেবা পৌঁছে দিতে হলে কম খরচে মানসম্মত ইন্টারনেট নিশ্চিত করা জরুরি। তবে বর্তমানে মোবাইল ইন্টারনেটের ওপর শুল্ক ১৫ শতাংশ ও সম্পূরক শুল্ক রয়েছে আরও ১৫ শতাংশ। এ ছাড়া ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটেও রয়েছে ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক। ফলে আমাদের দেশে ইন্টারনেটের দাম অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি। তাই এবারের বাজেটে শুল্ক কমানোর মাধ্যমে ইন্টারনেটের দাম কমানো প্রয়োজন।

যদি এই শুল্ক কোনো কারণে না কমানো যায়, তাহলে অন্তত শিক্ষার প্রয়োজনে ব্যবহৃত ইন্টারনেটে ভর্তুকি দেওয়া উচিত। এতে সাময়িকভাবে কর আদায় কিছুটা কমলেও শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠিত হয়ে কর দিয়ে সমাজে অবদান রাখবেন।

আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত স্টার্টআপ খাতে অনেক ভালো করছে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে তাদের ইন্টারনেটের প্রতুলতা ও কম দাম। আমি যদি একটি গাড়ি ২০০ কিলোমিটার বেগে চালাতে চাই, তাহলে সেই মানের রাস্তা প্রয়োজন। তেমনি স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলো সেই বেগে চালাতে হলে প্রয়োজন ইন্টারনেট। কারণ, আমাদের দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাওয়ার রাস্তা হচ্ছে ইন্টারনেট।

দেশে অর্ধেকের বেশি মানুষের বয়স ২৫ বছরের নিচে। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে ৪ কোটিই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সঙ্গে জড়িত। অথচ গত বছর জাতীয় বাজেটের মাত্র ১ দশমিক ৭ শতাংশ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল; যা জাতিসংঘের সুপারিশকৃত ৪ থেকে ৬ শতাংশের চেয়ে অনেক কম। তাই বাজেটে মানবসম্পদ উন্নয়নে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।

আমরা গত ছয় বছরে ১০০ কোটি টাকার বিদেশি বিনিয়োগে আধুনিক শিক্ষাপ্রযুক্তি তৈরি করেছি। ইন্টারনেট ও স্কুলগুলোতে প্রযুক্তি ব্যবহারের সঠিক মাধ্যম না থাকায় আমরা ওই প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার করতে পারছি না। তাই আমি মনে করি, স্টার্টআপ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ে আলাদাভাবে সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারত্বে কাজ করা উচিত।

এ ছাড়া বাজেটে যদি স্টার্টআপ খাতের জন্য বড় বিনিয়োগ নিশ্চিত করা যায়, তাহলে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোও এ দেশের স্টার্টআপগুলোয় বিনিয়োগে আগ্রহী হবে। এ ছাড়া শিক্ষা ও শিক্ষকদের মানোন্নয়ন ও বেতনকাঠামো আরও যুক্তিসংগত করা প্রয়োজন।

শাহীর চৌধুরী, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, শিখো

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ট র টআপ খ ত আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনায় বিএনপি নেতার অফিসে বোমা-গুলি, শিক্ষক নিহত

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) আইটি গেট সংলগ্ন বিএনপি নেতার দলীয় কার্যালয়ে গুলি ও বোমা হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় ইমদাদুল নামে এক শিক্ষক নিহত হয়েছেন। যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউপি সদস্য মামুন শেখ (৪৫) ও মিজানুর রহমান নামে দুই ব্যক্তি আহত হয়েছেন।

রবিবার (২ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে ঘটনাটি ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করে আড়ংঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ খায়রুল বাশার।

আরো পড়ুন:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিপক্ষের হামলা: গুলিবিদ্ধ যুবকের মৃত্যু

নবীনগরে গুলিবিদ্ধ ৩

তিনি বলেন, ‍“ঘটনাস্থল থেকে একটি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। তার ভেতর ভুসি রাখা ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, এর ভেতরেই বোমা নিয়ে আসা হয়েছিল।” পেশাদার কিলারের সম্পৃক্তা থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন ওসি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ৯টার দিকে বিএনপি নেতা মামুন শেখ স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে অফিসে বসেছিলেন। এ সময় সন্ত্রাসীরা অফিস লক্ষ্য করে পরপর দুইটি বোমা ও চার রাউন্ড গুলি ছুড়ে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায়। পরে নেতাকর্মী ও স্বজনরা গুরুতর আহত মামুনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

খানজাহান আলী থানা বিএনপির সভাপতি কাজী মিজানুর রহমান বলেন, “যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন শেখকে সন্ত্রাসীরা গুলি করেছে। তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।”

যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মীর শওকত হোসেন হিট্টু বলেন, “ঘটনার সময় আমি ফুলবাড়িগেটে ছিলাম। শুনেছি, আমাদের সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনকে সন্ত্রাসীরা গুলি করেছে। তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।”

ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ