রংপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বাসভবনে হামলার ঘটনা ও উদ্ভূত পরিস্থিতির যাতে আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে এবং শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য  সেনাবাহিনীর কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এনসিপি ও বিএনপি নেতারা। এ ছাড়া রংপুরে এমন কোন অপ্রীতিকর ও অনাকাঙ্খিত ঘটনা যাতে না ঘটে সেদিকে সতর্ক থাকার কথাও জানান তারা। 

রোববার রাত ১০টার দিকে রংপুর স্টেডিয়ামের অস্থায়ী সেনাক্যাম্পে এক আলোচনায় তারা এমন প্রতিশ্রুতি দেন। সেই আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনীর ৭২ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কাইয়ুমসহ গণমাধ্যমকর্মীরা।
 
আলোচনায় রংপুর মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতি বলেন, জাতীয় পার্টির সম্প্রতি কিছু অশালীন বক্তব্যের জেরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল হয়। সেই মিছিলে অনেকেই লাঠিসোটা হাতে নিয়েছিল। সেই প্রেক্ষিতে উত্তেজনা তৈরি হয়। আগামীতে যাতে এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে বিষয়ে আমরা সজাগ ও সতর্ক থাকবো। 

মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান সামু বলেন, রংপুরে সম্প্রতি একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনার সঙ্গে আমাদের বিএনপির দু’জন জড়িত ছিল। তারা এ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং আগামীতে এমন ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত না হওয়ার কথাও জানিয়েছেন। আমরা বিএনপির নেতারা সে বিষয়টা খেয়াল রাখবো।
 
সেনাবাহিনীর ৭২ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কাইয়ুম বলেন, সম্প্রতি রংপুরে একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে। স্থির চিত্র ও ভিডিতে যাদের দেখেছি তাদের শনাক্তের ব্যপারে সহযোগিতা চেয়েছিলাম। নেতৃবৃন্দ বিষয়টি পজেটিভলি নিয়েছেন। রংপুরের শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার ব্যাপারে তারা সচেতন থাকবেন বলে প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। আমরা সেটা বিশ্বাস করতে চাই। 

তিনি আরও বলেন, যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে কিংবা করতে চায়, আমরা তাদের জন্য অনেক কঠোর। এসময় রংপুরকে শান্তিপূর্ণ রাখতে সকলকে সবধরণের তথ্য দিয়ে সেনাবাহিনীকে সহযোগিতার আহ্বান জানান তিনি। 

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের রংপুরস্থ বাসভবনে হামলার ঘটনা ও উদ্ভূত পরিস্থিতি নিরসনকল্পে এই আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন রংপুর মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মাহফুজ উন নবী ডন, জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ইমরান আহমেদ ও সদস্য সচিব ডা.

আশফাক জামিল প্রমুখ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

বরিশালে জাপা কার্যালয় ভাঙচুর, আহত ১০

রংপুরে চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বাসভবনে হামলার প্রতিবাদে শনিবার নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাতীয় পার্টি। এ ছাড়া গতকাল বিকেলে বরিশালে জাপার প্রতিবাদ মিছিলে হামলা হয়েছে। এ সময় জাপার পাল্টা হামলায় গণঅধিকার পরিষদের জেলা এবং মহানগরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হন।

এদিকে হামলার প্রতিবাদে গণঅধিকার পরিষদ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শতাধিক নেতাকর্মী রাতে শহরে প্রতিবাদ মিছিল করে। মিছিলটি ফকিরবাড়ি সড়কে ঢুকে জাপা কার্যালয় ভাঙচুর করেছে।

আহত পাঁচজনকে বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলেন– জেলা সভাপতি শামীম রেজা, সাধারণ সম্পাদক এইচ এম হাসান, মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল ফরহাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সোহাগ ফরাজি ও কেন্দ্রীয় মানবধিকারবিষয়ক সম্পাদক মিরাজ হোসেন। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জাপার শতাধিক নেতাকর্মীর মিছিলটি ফকিরবাড়ি সড়কের দলীয় কার্যালয় থেকে বের হয়। কিছুদূর অগ্রসর হলে ফকিরবাড়ি ও সদর রোড সংযোগমুখে কয়েকজন লাঠিসোটা নিয়ে মিছিলের ওপর হামলা করে। জাপা কর্মীরা পাল্টা প্রতিরোধ গড়লে হামলাকারীরা দৌড়ে পালায়। কয়েকজন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ঢুকে পড়ে। জাপা কর্মীরা ওইসব দোকানে ঢুকে হামলাকারীদের বেদম পেটায়। পরে পুলিশ এসে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়।

মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়া জাপা চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও মহানগর আহ্বায়ক অধ্যক্ষ মহসিন উল ইসলাম হাবুল বলেন, হামলাকারীরা জাতীয় নাগরিক পার্টির লোকজন। তারা শান্তিপূর্ণ মিছিলে পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে। বরিশালে এনসিপিকে থাকতে দেওয়া হবে না।

তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্র অধিকার পরিষদের দপ্তর সম্পাদক তৌফিস আহমেদ সাব্বির বলেন, তারা সড়কের পাশে দাঁড়ানো ছিলেন। পাশ দিয়ে যাওয়া জাপার মিছিল থেকে তাদের ওপর হামলা হয়।

রংপুরে মামলা নেয়নি পুলিশ
শনিবার রংপুরে বিক্ষোভ মিছিলটি নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পায়রা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটির সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, ‘এখন মবের যুগ, মব ভায়োলেন্স চলছে। তবে জাতীয় পার্টি মবে দুর্বল নয়, যে কোনো মব ফেস করতে পারে। কেউ মব করলে আমরা চাই না মব ভায়োলেন্স করতে। তবে কেউ অ্যাকশন করলে আমরা রিঅ্যাকশন করতে প্রস্তুত।’

এ সময় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, মহানগর জাতীয় পার্টির সিনিয়র সহসভাপতি লোকমান হোসেন, সহসভাপতি জাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

গত বৃহস্পতিবার রাতে জি এম কাদেরের রংপুরের বাসভবনে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে কোতোয়ালি থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর মহানগর আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহাম্মেদ ইমতি, এনসিপি নেতা নাহিদ হাসান খন্দকারসহ ২২ জনের নাম উল্লেখ করে এজাহার দায়ের করা হয়েছে। তবে মামলাটি গ্রহণ করেনি পুলিশ। ওসি আতাউর রহমান বলেন, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আদেশে হামলা হয়েছে: সংবাদ সম্মেলনে ‘তথ্য আপা’
  • রংপুরে জাপা-এনসিপির পাল্টাপাল্টি মামলা নিল পুলিশ
  • প্রিজন ভ্যানে করে ‘তথ্য আপা’দের ‘সরিয়ে নিল’ পুলিশ
  • জি এম কাদেরের বাসভবনে হামলা: কোনো পক্ষেরই মামলা নেয়নি পুলিশ
  • মবের নামে নাশকতার সুযোগ নেই এখন, সারজিসকে সেনা কর্মকর্তা
  • দ্রুত অচলাবস্থার নিরসন হোক
  • বরিশালে জাপা কার্যালয় ভাঙচুর, আহত ১০
  • জি এম কাদেরের বাসায় হামলার প্রতিবাদে রংপুরে জাতীয় পার্টির বিক্ষোভ
  • ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামলা নেওয়ার দাবি জাতীয় পার্টির